ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চাঞ্চল্যকর সিনহা হত্যার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

চাঞ্চল্যকর সিনহা হত্যার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

নিউজ ডেক্স : আলোচিত মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা মামলার বিচার কাজ বিলম্বিত এবং ক্ষেত্র বিশেষে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ করেন রাষ্ট্র ও বাদীপক্ষের এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

আজ সোমবার (২৩ আগস্ট) বিকালে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিনের আদালতের কার্যক্রম শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই অভিযোগ করেন। আজাদী অনলাইন

এ সময় তিনি বলেন, “মামলার শুরু থেকেই আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে দরখাস্ত দিয়ে মামলার কার্যক্রম বিলম্বিত করার চেষ্টা করে আসছে। আজ সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন আসামিপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত ১১টি দরখাস্ত দিয়ে মামলা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন। আদালত এসব দরখাস্ত গ্রহণ করেনি।

একই অভিযোগ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, “আজ সোমবার (২৩ আগস্ট) ছিল আলোচিত সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম দিন। প্রথম দিনে মামলার বাদী মেজর (অব.) সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ১৫ আসামীর মধ্যে ১৩ জন আসামীর পক্ষে স্বাক্ষী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসকে জেরা করা হয়। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর পক্ষে কাল মঙ্গলবার জেরা করা হবে। সেই পর্যন্ত আদালত মূলতবি ঘোষণা করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আগামীকাল মঙ্গলবার জেরা শেষে অন্যান্য স্বাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।”

মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছি। আসামীপক্ষের আইনজীবীরা আমাকে জেরা করেছেন। আমাদের একটাই দাবি, এ মামলায় যারা আসামী তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হয়।

সাক্ষ্যগ্রহণের নির্ধারিত তিন দিনের প্রথম দিনে আজ সোমবার সকাল দশটায় নিহত মেজর (অব.) সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার-এর সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে সিনহা হত্যা মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বাদী আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড এবং ১৩ আসামির পক্ষে আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। এ সময় আদালতে ভাইয়ের কথা স্মরণ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন শারমিন শাহরিয়া।

মামলায় মোট ৮৩ জন স্বাক্ষীর মধ্যে বাদী সহ ১ থেকে ১৫ নম্বর স্বাক্ষী এই তিন দিনে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা রয়েছে। এ মামলায় অভিযুক্ত ১৫ জন আসামির সকলেই কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।

এর আগে গত জুলাই মাসের ২৬, ২৭ ও ২৮ তারিখ এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হলেও করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকারঘোষিত লকডাউনের কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে সারাদেশের মতো কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ঐ তারিখে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিনের মাথায় ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব-১৫। হত্যাকাণ্ডের পর চার মাসের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে এবং ৮৩ জনকে স্বাক্ষী করে আলোচিত মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রূল ইসলাম। চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন আসামী কারাগারে রয়েছে। তাদের মধ্যে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কনস্টেবল সাগর দেব ও রুবেল শর্মা ছাড়া ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্ত ও কারাগারে আটক থাকা ১৫ আসামি হলো বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, কন্সটেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এএসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কন্সটেবল সাগর দেব, এপিবিএন-এর এসআই মো. শাহজাহান, কন্সটেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার স্বাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!