Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | নুসরাত হত্যায় এসপি-ওসির বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ

নুসরাত হত্যায় এসপি-ওসির বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ

nusrat-20190501100334

নিউজ ডেক্স : মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ফেনীর এসপিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তার অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এছাড়াও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়ী করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় গঠিত পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, যাদের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে তারা হলেন- ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সোনাগাজী থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইকবাল ও এসআই মো. ইউসুফ।

এছাড়াও মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ আসার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় মাদরাসার গভর্নিং বডির প্রধান ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (একই ব্যক্তি) বিরুদ্ধেও অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে কমিটি।

এর আগে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও পুলিশের দায়িত্বহীনতার বিষয়ে জানতে ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, সোনাগাজী থানা থেকে প্রত্যাহার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ৪০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নুসরাত হত্যার তদন্তে গঠিত পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের উচ্চপর্যায়ের কমিটি।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে। ওই ঘটনায় রাফির মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।

গত ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকালে রাফি আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান। সে সময় মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ দিলে রাফি ওই বিল্ডিংয়ের চার তলায় যান।

সেখানে মুখোশ পরা চার-পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। রাফি অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

তার মৃত্যুর পর সোনাগাজী থানায় অভিযোগ নিয়ে যাওয়া নুসরাতের সঙ্গে ওসি মোয়াজ্জেমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। নুসরাতের মৃত্যুর পরদিন নুসরাতের পরিবারকে অসহযোগিতার অভিযোগে প্রত্যাহার করা হয় ওসিকে।

আলোচিত এ মামলায় এজাহারভুক্ত আট আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও প্রধান তদন্ত সংস্থা পিবিআই। তাদের মধ্যে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী পাঁচজন শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, উম্মে সুলতানা পপি ও কামরুন নাহার মনিসহ আটজন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

এছাড়া গ্রেফতার হয়েছেন হুকুমদাতা মাদরাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলা, আশ্রয়দাতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, অর্থ জোগানদাতা পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম এবং মাদরাসার শিক্ষক আবছার উদ্দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!