Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ১০ হাজার হেক্টর নতুন কৃষি জমি পাচ্ছে দেশ

১০ হাজার হেক্টর নতুন কৃষি জমি পাচ্ছে দেশ

নিউজ ডেক্স : সমুদ্র থেকে নতুন প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি পুনরুদ্ধার করে নানা ধরনের শস্য ফলাবে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে ৬৩৬ কোটি ১৭ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। উড়ির চর-নোয়াখালী ক্রস ড্যাম নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।

বঙ্গোপসাগরের বুক থেকে ১০ হাজার হেক্টর জমি পুনরুদ্ধারের এ উদ্যোগ নিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। চলতি সময় থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্লু -ইকোনোমি বা সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি দেশ। দেশের রয়েছে বিশাল সমুদ্রসীমা। বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর। এখনও আমাদের জাতীয় আয়ের এক বিশাল অংশ এবং প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির এক উল্লেখযোগ্য খাত কৃষি। বাংলাদেশের মোট জমির পরিমান ৩ কোটি ৩৪ লাখ একর মতান্তরে ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৬৩ হাজার একর। বাংলাদেশে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমান ২ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার একর। বাংলাদেশে প্রতি কৃষকের আবাদি জমির পরিমান মাত্র ১.৫০  একরের মতো। পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, প্রতি বছর দেশের কৃষি জমির পরিমান কমছে ৬৮ হাজার ৭০০ হেক্টর, অর্থাৎ প্রতি বছর শতকরা এক ভাগ হিসাবে আবাদযোগ্য জমির পরিমান কমে যাছে। এসব বিষয় বিবেচনায় এনে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে।  

প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো- সমুদ্র থেকে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর ভূমি পুনরুদ্ধার করা, উড়ির চরের সঙ্গে নোয়াখালীর মূল ভূখণ্ডের স্থায়ী যোগাযোগ স্থাপন, স্থানীয় জনসাধারণের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন। এছাড়া কৃষি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সর্বোপরি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সমুদ্রে যে সম্পদ রয়েছে তা টেকসই উন্নয়নের জন্য সঠিকভাবে ব্যবহার তথা বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাসসহ অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ উত্তোলন, মৎস্য সম্পদ আহরণ, বন্দরের সুবিধা সম্প্রসারণ ও পর্যটনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা-মাফিক কার্যক্রম পরিচালনা করা গেলে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতি বছর আড়াই লাখ কোটি ডলার আয় করা সম্ভব। প্রাথমিকভাবে ব্লু-ইকোনোমি থেকে ১০ হাজার হেক্টর নতুন জমি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।  

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) এস. এম. রেজাউল মোস্তফা কামাল বলেন, ব্লু -ইকোনোমি বা সুনীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি দেশ। তার প্রথম অর্জন সমুদ্রের গভীর থেকে ১০ হাজার হেক্টর জমি উদ্ধার করা। বলা চলে বাংলাদেশের স্থলভাগে এটা অন্তর্ভূক্ত হবে। স্থায়ীভাবে সবকিছু করা যাবে এই নতুন ভূমিতে। দীর্ঘদিন স্টাডি করেই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশে কৃষি জমি বাড়বে। বাংলানিউজ  

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মেঘনা নদীর মোহনায় নদী ভাঙন ও ভূমি পুনরুদ্ধার ক্রমান্বয়ে চলমান একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। মেঘনা নদীর মোহনায় বর্তমানে প্রতি বছর প্রাকৃতিকভাবে প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটার চর জেগে উঠছে। ১৯৫৬-৫৭ ও ১৯৬৪ সালে মেঘনার মোহনায় ক্রস ড্যাম-১ ও ক্রস ড্যাম-২ নামে দু’টি সফল ক্রস ড্যাম নির্মাণ করা হয়। ২০০৯-১০ সালে চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রকল্পের আওতায় ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিংয়ের মাধ্যমে একটি সমীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।

সমীক্ষায় ৪টি ক্রস ড্যামের স্থান নির্ধারণ করা হয়। স্থানগুলো হলো- সন্দ্বীপ-উড়িরচর, উড়িরচর-নোয়াখালী,  নোয়াখালী জাহাজ্যার চর ও জাহাজ্যার চর-সন্দ্বীপ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য নেদারল্যান্ডসভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রয়েল হ্যাস্কনিন ডিএইচভি, বাংলাদেশের ডিইভিকন লিমিটেড এবং ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার  মডেলিং প্রতিষ্ঠান ফিজিবিলিটি স্টাডি করে। প্রকল্পের আওতায় ২ কিলোমিটার ক্রসড্যাম, ৬ কিলোমিটার টাই বাঁধ এবং ৩০ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!