ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সালিশ করতে গিয়ে বিয়ে করে বসলেন ইউপি চেয়ারম্যান, পরদিনই তালাক

সালিশ করতে গিয়ে বিয়ে করে বসলেন ইউপি চেয়ারম্যান, পরদিনই তালাক

নিউজ ডেক্স : পটুয়াখালীতে সালিশ করাতে গিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন স্থানীয় এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে বিয়ের পরদিনই হয়ে গেছে তালাকও।

সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা নিয়ে স্থানীয় একাধিক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে উল্লেখ করা হয়, ওই মেয়েটির বিয়ের বয়স হয়নি, এটি বাল্য বিয়ে ছিল।

স্থানীয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত রয়েছেন তারা। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের জেরে তারা জানতে পেরেছেন যে, একটি বাল্যবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ওই মেয়েটির জন্মসনদ, স্কুলে ভর্তি হওয়ার নথি আর প্রাথমিকের সার্টিফিকেট দেখে তদন্ত করবেন তারা।

সোমবার নাগাদ এ তদন্ত শেষ হওয়ার পর তারা এর প্রতিবেদন জমা দেবেন। প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানান মি. হোসেন।

এদিকে, এ ঘটনার শিকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মেয়েটি জানান, তিনি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অস্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। তবে স্কুলে পড়ার আগে মাদ্রাসায় পড়ার কারণে তিনি কিছুটা পিছিয়ে রয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন তার বয়স ১৮ বছর।

ওই মেয়েটি জানান, নিজের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে বাড়ি থেকে প্রেমিকের সাথে পালান তিনি। আশ্রয় নেন তার প্রেমিকের এক আত্মীয়ের বাড়িতে।

সেখানে তাদের বিয়ের বিষয়ে আলাপ হওয়ার পর ওই মেয়েটির পরিবারকে জানানো হয়। মেয়েটির পরিবার বিষয়টি মীমাংসা করতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়।

ওই মেয়েটির দাবি, তাকে বলা হয়েছিল যে, তার প্রেমিকের সাথে বিয়ে দেয়ার জন্যই তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। “আমাকে বলে যে, এই বিয়েতে কি আপনার মত আছে? আমি বললাম আছে। আমিতো জানতাম আমার প্রেমিকের সাথেই আমার বিয়ে হচ্ছে,” বলেন ওই মেয়েটি।

তিনি অভিযোগ করেছেন যে, কন্যাদানের সময় তিনি জানতে পারেন যে, বিয়ে আসলে তার প্রেমিকের সাথে নয় বরং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে হয়েছে।

পরে তিনি চেয়ারম্যানের সাথে ঘর না করার সিদ্ধান্ত নেন। ওই মেয়েটি দাবি করেন, সালিশে গিয়ে স্থানীয় ওই চেয়ারম্যান তার পরিবারের কাছে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে পরে জানতে পেরেছেন তিনি।

এদিকে ওই চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেছেন যে, ওই মেয়েটির মতের বিপক্ষে নয়, বরং তার মতামত নিয়েই বিয়ে হয়েছে। এছাড়া বিয়ের আগেই ওই মেয়েটি জানতেন যে, তার সাথেই বিয়ে হয়েছে। বাল্যবিয়ের বিষয়ে চেয়ারম্যান দাবি করেন, ওই মেয়েটি প্রাপ্ত বয়স্ক এবং ২০০৩ সালে তার জন্ম হয়েছে।

তিনি জানান, গত শুক্রবার জুম্মার পর ওই মেয়েটির সাথে তার বিয়ে হয়। পরে রাতের বেলা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানও হয়। তবে পরে ওই মেয়েটি তার সাথে থাকতে অসম্মতি জানায়।

পরে শনিবার বিকেলে চেয়ারম্যানকে তালাক দেয় ওই মেয়েটি। তবে, সালিশে গিয়ে কেন তিনি ওই মেয়েটিকে বিয়ে করতে চেয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই চেয়ারম্যান বলেন, “আমি বিয়ে করলে আপনার সমস্যা কী?”

এদিকে, নিজের প্রেমিকার অন্য কারো সাথে বিয়ে হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ওই তরুণ আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ তথ্য জানিয়েছে ওই তরুণের এক আত্মীয়। তিনি বলেন, ওই তরুণ অসুস্থ্ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অন্যদিকে চেয়ারম্যানকে তালাক দেয়ার পর আবারো প্রেমিকের বাড়িতে ফিরে যান ওই মেয়েটি। সেখানে রবিবার সকালে তাদের বিয়ে হয়। – বিবিসি বাংলা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!