Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সরকারি চাকরিতে কোটা থাকছে না

সরকারি চাকরিতে কোটা থাকছে না

image-76783-1523429631

নিউজ ডেক্স : সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকছে না বলে ছাত্রলীগ নেতাদেরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন। ছাত্র সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানিয়েছেন।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে রাখার মধ্যে বুধবার সকালে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।

আর সেখান থেকে ফিরে জাকির তার ফেসবুক পেজে কোটা না থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানান।

জাকির লেখেন, ‘বিগত দিনে কোটা পদ্ধতি সংস্কার নিয়ে চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে আজ সকালে আমরা (সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করি। তিনি বলেন সরকারি চাকরিতে কোন কোটা পদ্ধতি থাকবে না।’

জানতে চাইলে জাকির ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি ও সংগঠনের সভাপতি (সাইফুর রহমান সোহাগ) আজ (বুধবার) সকাল নয়টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে ছিলাম সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে জানিয়েছেন সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না।’

প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে ছাত্রলীগের সমর্থন আছে বলেও জানান জাকির। তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে ছাত্রসমাজ সাধুবাদ জানায়। অশেষ কৃতজ্ঞতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে জাকির লেখেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যা বলেন তা করেন।’

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা আছে। এদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ও জেলা কোটা হিসেবে ১০ শতাংশ করে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য পাঁচ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্যে এক শতাংশ কোটা আছে।

বিভিন্ন সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। শুরুর দিকে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের অনুসারীরাই এই আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। তবে এবার কোনো বিশেষ কোটা বাতিলের দাবি না তুলে কোটা সংস্কার করে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার আন্দোলনকারী সংগঠন ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ এর ২০ নেতার সঙ্গে আলোচনায় বসেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ওই বৈঠকে এক মাসের মধ্যে কোটার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার আশ্বাসে আন্দোলন ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করার ঘোষণা দেয় বিক্ষোভকারীরা।

কিন্তু পরদিন সমঝোতা ভেঙে আন্দোলনে ফেরে শিক্ষার্থীরা। আর বুধবার সকালে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে অনাগ্রহী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় নেমে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

আন্দোলনকারী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোটা সংস্কারের বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দাবি করা হয়। ততদিন কর্মসূচি চলবে বলে জানানো হয়।

আন্দোলনকারীদের দাবি, কোটা পদ্ধতির কারণে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। যদিও কোটাকে পজেটিভ ডিসক্রিমিনেশন বা ইতিবাচক বৈষম্য বলা হয়। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে রাষ্ট্র এই ব্যবস্থা করে থাকে। প্রায় সব দেশে, এমনকি উন্নত বিশ্বেরও সরকারি চাকরির পাশাপাশি কোথাও কোথাও বেসরকারি চাকরিতেও কোটা থাকে।

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের এই ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক হাসান আল মামুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ওরা তো ঘোষণা দেয়ার কেউ না। আমাদের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যতক্ষণ কিছু না বলবেন, ততক্ষণ আমরা মাঠ ছাড়ব না।’

অনুন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশও বিশ্বে নানা ধরনের কোটার সুবিধা পেয়ে থাকে। পোশাক রপ্তানি থেকে শুরু করে নানা ধরনের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই সুবিধা রয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্রিকেট দলে স্থান পাওয়ার ক্ষেত্রেও কোটা রয়েছে কালোদের জন্য। -ঢাকাটাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!