Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | শাহ আমানত বিমানবন্দরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতি

শাহ আমানত বিমানবন্দরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতি

নিউজ ডেক্স : করোনা মহামারি প্রভাব ফেললেও প্রায় ৬শ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পুনরায় গতি পেয়েছে। যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধিসহ সক্ষমতা বাড়াতে বিমানবন্দর উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিমানবন্দরটির সক্ষমতা তৈরি এবং নতুন নতুন ফ্লাইট অপারেটরদের আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে গৃহীত এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, ইউরোপ-আমেরিকা কিংবা চীন-জাপানসহ পূর্ব ও পশ্চিমমুখী যোগাযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে নতুন ফ্লাইট অপারেটর আকৃষ্টের কোনো বিকল্প নেই। চল্লিশের দশকের শুরুতে এয়ারফিল্ড হিসেবে যাত্রা শুরু করা দেশের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে বর্তমানে ২০ লাখেরও বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হিসেবে এটির ব্যবহার শুরু হয়। বাংলাদেশ বিমান ও ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্স এখানে ফ্লাইট অপারেট করত। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ বিমান দুবাই ও সৌদি আরবে যাত্রী পরিবহন শুরু করলে বিমানবন্দরটি ১৯৯০ সালে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ নেয়। তবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বীকৃতি লাভ করে প্রায় ২৩ বছর পর ২০১৩ সালে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নীত করা হলেও সক্ষমতার অভাবে বহু ফ্লাইট অপারেটরই এখানে এসে পরবর্তীতে ব্যবসা গুটিয়ে চলে গেছে। বিশেষ করে থাই এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সিল্ক এয়ার, ফুকেট এয়ার চট্টগ্রাম থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে যায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি ভারতের স্পাইসজেট ও মধ্যপ্রাচ্যের দুটি ফ্লাইট অপারেটর এই বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট অপারেট করছে। আন্তর্জাতিক রুটে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও ভারত ছাড়া অন্য কোনো গন্তব্যের সাথে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সরাসরি ফ্লাইট নেই। থাই এয়ার কিংবা এমিরেটসের মতো অভিজাত ফ্লাইট অপারেটর চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ব্যবহার করলে এখানকার কানেক্টিভিটি অনেক বেড়ে যেত। কিন্তু নানা সংকটে থাই এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স কিংবা এমিরেটসের মতো অপারেটর চট্টগ্রামে আসছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, বিদ্যমান সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়নের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে ‘রানওয়ে ও টেঙিওয়ে উন্নয়ন প্রকল্প’ এবং ‘বোর্ডিং ব্রিজ ও কানেক্টিং করিডোর নির্মাণ প্রকল্প’ বিমানবন্দরের সক্ষমতা অনেক বাড়াবে। ৫৪০ কোটি ৫২ লাখ ১ হাজার টাকা ব্যয়ে রানওয়ে ও টেঙিওয়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। করোনাকালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সীমাবদ্ধতা তৈরি হলেও বর্তমানে তা কাটিয়ে প্রকল্পটি গতি পেয়েছে। চলতি বছরে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় রানওয়ে উঁচু করা হবে। উন্নয়ন ঘটানো হবে লাইটিং সিস্টেমের। ফলে কুয়াশাসহ রাতের বেলায় ফ্লাইট অবতরণে বিদ্যমান কিছু সীমাবদ্ধতার অবসান ঘটবে।

অপরদিকে বিমানবন্দরে বর্তমানে দুটি বোর্ডিং ব্রিজ রয়েছে। এই বিমানবন্দরে আরো একটি বোর্ডিং ব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। শাহ আমানত বিমানবন্দরের স্বয়ংক্রিয় জ্বালানি তেল নেওয়ার সুবিধাসহ ভৌগোলিক বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। সক্ষমতা কিছুটা বাড়ানো গেলে এই বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

সিভিল এভিয়েশনের পদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে সরকার আন্তরিক। তিনি বলেন, পূর্ব ও পশ্চিমমুখী যোগাযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই সক্ষমতা অনেক বেশি কাজ করবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যমান সক্ষমতা ও সুযোগ সুবিধা দিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে আরো বহু ফ্লাইট চালু করার সুযোগ রয়েছে। শুধু সক্ষমতা এক্ষেত্রে বড় বিষয় নয়। যাত্রীদের চাহিদার ওপরই ফ্লাইট চলাচল নির্ভর করে। বহু ফ্লাইট অপারেটর যাত্রী স্বল্পতার কারণে এখান থেকে ব্যবসা গুটিয়ে চলে গেছে। -আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!