Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ভেজাল খাদ্যে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

ভেজাল খাদ্যে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

নিউজ ডেক্স : দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে সরকারকে। টেক্সটাইলের কাপড়ের রং ও ফ্লেভার মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুস, আইসক্রিম, মিষ্টি, পাউরুটি, বিস্কুট, দই, ললিপপ, চকোলেট এবং কেক। এমনকি শিশু খাদ্য গুঁড়ো দুধেও পাওয়া যাচ্ছে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান। এসব খাবার খেয়ে কিডনি বিকল, হার্ট অ্যাটাক, ক্যান্সারসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।

অভিযোগ রয়েছে, দেশে খাদ্যে ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার কোনো নজির নাই। ফলে তারা শুধু জরিমানার অঙ্ক গুণেই ফের একই কাজ করতে থাকে। এছাড়া খাদ্যে ভেজাল বন্ধে প্রশাসন মাঝে মধ্যে ঝটিকা অভিযান চালায়। নিয়মিত অভিযান না চালানোর কারণে খাদ্যে ভেজাল দেয়ার সাথে জড়িত চক্রটি আবারও মাথাচড়া দিয়ে ওঠে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত ভেজাল পণ্যের ছড়াছড়ি। মূলত এসব পণ্যের সহজলভ্যতা ও প্রশাসনের সঠিক নজরদারির অভাব এর জন্য দায়ী। বিষাক্ত ও রং মিশ্রিত খাবার ডায়াবেটিস ছাড়াও কিডনি, লিভারসহ অন্যান্য অঙ্গে ক্যান্সারের কারণ। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ খাদ্যে বিষক্রিয়ায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। লিভার ও কিডনি বিকলের পাশাপাশি হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পেছনের ক্ষতিকারক রাসায়নিকযুক্ত খাবারই দায়ী।

জানা গেছে, বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ-১৯৫৯ (সংশোধিত ২০০৫) এ খাদ্য ভেজাল পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ ১ বছর সশ্রম কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। অপরদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এ সর্বোচ্চ ৩ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। নতুন প্রণীত নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ তে জরিমানা ও শাস্তির পরিমাণ বাড়িয়ে ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এসবের খুব একটা প্রয়োগ হয় না বললেই চলে।

জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আনিছুর রহমান বলেন, ভেজাল খাদ্যপণ্যে তৈরিতে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। এছাড়া সরকারের অন্যান্য সংস্থাও অভিযান পরিচালনা করে আসছে। অভিযানে অনিয়ম দেখলে আমরা জরিমানা করছি। একই সাথে দ্বিতীয়বার যাতে এই ধরণের অনিয়ম না করে সেজন্য সতর্কও করছি। তবে এক্ষেত্রে ভোক্তাদেরও সচেতন হওয়া দরকার।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ভেজাল খাদ্যপণ্য তৈরি কারখানাতে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে জরিমানা করে দায় সারে। এক্ষেত্রে যদি জরিমানার পরিবর্তে যদি অপরাধীদের জেল দেয়া যায়, তাহলে অপরাধের প্রবণতা কমতো। আবার দেখা যায়, প্রশাসন জরিমানা দেয়ার পরে তিন মাস আর ওই প্রতিষ্ঠানের আশপাশেও যায় না। ফলে ওই অপরাধী একই ধরণের কাজ করতে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। তাই যাদেরকে একবারকে জরিমানা করা হচ্ছে তাদের কড়া নজরদারিতে রাখা দরকার। -দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!