ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | উখিয়ার বাজারে ভেজাল পণ্যের সয়লাব

উখিয়ার বাজারে ভেজাল পণ্যের সয়লাব

K H Manik Ukhiya Pic 15-02-2018 (2)

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া : বাংলাদেশের উখিয়া-টেকনাফের অস্থায়ী শিবিরে আশ্রিত, মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মাঝে বিতরণ করা ত্রাণ -সামগ্রী খোলাবাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে হরদম। আর তাদের কাছ থেকে সংগ্রহীত পণ্য সামগ্রী গুলো ঘিরে চলছে অধিকাংশ ভেজাল ও মেয়াদউত্তীর্ন পন্যের রমরমা বানিজ্য। রোহিঙ্গা পণ্যের বাজারকে ঘিরে গড়ে উঠা একটি সিন্ডিকেট উখিয়া ও তার পার্শবর্তী উপজেলা- সদর কক্সবাজার থেকে ভেজাল ও মেয়াদউত্তীর্ন নানান ধরণের পণ্য সংগ্রহ করে তা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে উখিয়ার প্রত্যন্তঞ্চলে গড়ে উঠা ত্রাণ বাজারে। সরেজমিনে দেখা যায়, উখিয়া সদর ষ্টেশন, কোটবাজার, মরিচ্যা বাজার,সোনারপাড়া,থাইংখালী,পালংখালী ও কুতুপালং বাজার সহ বিভিন্ন জায়গায় ও স্থান সমুহে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাত গভীর পর্যন্ত বসে জমজমাট এ ত্রাণের বাজার।মানুষের বিশ্বাস, সরকার বা বিভিন্ন এনজিও সংস্হা কতৃক রোহিঙ্গাদের মাঝে যে সব ত্রাণ বিতরণ করা হয় তা খুবই উন্নতমানের এবং ভেজালহীন। যার কারণে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা হতে এ অঞ্চলে চাকরী বা ব্যাবসা করতে আসা অনেক চাকুরী জীবি শখ করে হলেএ কিছুনা কিছু ক্রয় করতে ছুটে যাচ্ছে ত্রাণ বাজারে। কারণ স্বাভাবিক বাজারের চেয়ে রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে সংগ্রীহিত পণ্য সুমহের দাম অনেকটা কম হওয়াতে ক্রেতাদেরও তা ক্রয়ের আগ্রহ একটু বেশী। ক্রেতাদের সেই আগ্রহকে পুঁজি  করে এক শ্রেনীর প্রতারক চক্র গড়ে তুলেছে ভেজাল ও মেয়াদউত্তীর্ন পণ্যের রমরমা ব্যবসা। যার ফলে সস্তায় ত্রাণের মাল কিনতে এসে চরম প্রতারণার শিকার হচ্ছে তারা। বলতে গেলে এ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের অযতেœ অবহেলায় পড়ে থাকা ভেজাল ও মেয়াদউত্তীর্ণ তেল, ডাল, লোশন, দুধ, সেন্ট, কাপড় কাচার পাউডার, শ্যাম্পু, চাপাতা সহ নানান ধরণের নকল প্রসাধনী সামগ্রী বিদেশী এনজিও কতৃক দেয়া রোহিঙ্গা পণ্য বলে নির্বিঘ্নে বিক্রি করে রাতারতি আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিনত হচ্ছে প্রতারক চক্র। এছাড়াও গামছা তোয়েলা, কম্বল, শাড়ি, লুঙ্গী, চাদর, পুরাতন কাপড়ের বাজার হতে সংগ্রহীত নানান ডিজাইনের কাপড় রোহিঙ্গা পণ্য হিসেবে বিক্রি করছে দেদারছে।রোহিঙ্গা বাজার থেকে পণ্য ক্রয় করতে আসা চাঁদপুরের এক চাকুরীজীবি কামরুল ইসলাম  বলেন, ভাই লোক মূখে শুনেছি বাজারে রোহিঙ্গাদের দেয়া বিভিন্ন পণ্য দামে সস্তায়, মানও ভালো পাওয়া যায়। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম সব তুঘলকিকান্ড, যেসব মালামাল বিদেশীদের প্রদত্ত রোহিঙ্গা পণ্য নাম দিয়ে বিক্রি করছে তা এ দেশেরেই তৈরী বিভিন্ন ভুঁয়া কোম্পানীর নিম্ন মানের পণ্য মনে হয়।যা দেশের সব মেয়াদহীন ও ভেজাল মালামালের অঘোষিত বাজার, এক কথায় উখিয়া ত্রানের বাজার গুলোতে চলছে ভেজালের সমাহার।অন্যদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ(ডিএমপি)তে কর্মরত খোরশেদ আলম জানান, উখিয়া মধ্যম ষ্টেশনের রাস্তার উপরে অবাধে অবৈধ ,মেয়াদহীন রোহিঙ্গাদের দেয়া বিবিধপণ্য বিক্রি করছে। বিভিন্ন দোকানের মেয়াদবিহীন ও ভেজাল পণ্য সামগ্রী কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চোর , মাদকগ্রস্থ ও  সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে রমরমা ব্যবসা করে নিরীহ সহজ সরল জনসাধারণ ঠকাচ্ছে।এর ফলে চরম আর্থিক ক্ষতি করে আসছে। জনজীবনের জন্য হুমকী হয়ে দাড়িয়েছে এসব ভেজালের বাজার।মৌসুমী এসব বাজার উখিয়া ষ্টেশনে বসার কারণে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। উখিয়ার প্রধান সড়কের উপর বাজার বসাতেই যানজটের প্রধান কারণ বলে অনেকেই দাবী করেছেন এই রোহিঙ্গা পণ্যের বাজারকেই ।এই কার্যক্রম অনতিবিলম্বে বন্ধকরণে  উখিয়া উপজেলা প্রসাশন , থানা প্রশাসন ,স্থানীয় জনপ্রশাসন ,সাংবাদিক সমাজের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।খোরশেদ আলম জানান,অসুস্থ্যতার কারণে তিনি গত ১মাস যাবৎ উখিয়ায় নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন । গত মংগলবার রাত ৮ টা,৩০ মিনিটে উখিয়া ষ্টেশনের কৃষি ব্যংকের সামনে অবৈধভাবে গড়ে উঠা রোহিঙ্গা পণ্যের বাজারের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় কিছু কসমেটিক পণ্য সামগ্রী দেখতে গিয়ে দেখি পণ্য সামগ্রীর মেয়াদ ২০১৫ সাল পর্যন্ত।তখন তিনি দোকানীকে মেয়াদবিহীন ভেজাম মালামাল বিক্রি না করার জন্য বারণ করত: সাথে সাথে ঐ পণ্য সামগ্রীর বিক্রেতা দুইজন। ১জন বহু মামলার পলাতক আসামী ও সন্ত্রাসী,অন্যজন ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ী।তাদের সিন্ডিকেট ও গডফাদার খোরশেদকে প্রানে মারার চেষ্টা করে। পরে সাধারণ জনতা তাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উখিয়া থানায় দেখিয়ে পরে উখিয়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে খোরশেদ আলম।খোরশেদ আলমের মত বহু নিরীহ সাধারণ জনতা উখিয়ার ভেজাল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে শারিরীক ও মানসিক-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।এসব অবৈধ রোহিঙ্গাবাজার ও সন্ত্রাসীদের কবল থেকে উখিয়া ষ্টেশনকে মুক্ত করার জন্য খোরশেদ আলম সহ সচেতন মহল প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!