নিউজ ডেক্স : বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজারে বেড়াতে এসে অতিরিক্ত মদপানে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন রাফসান ইরফান নামে চট্টগ্রামের এক ছাত্রলীগ নেতা। শুক্রবার সকালে কলাতলী বীচ পয়েন্টের বে ওয়ান্ডার হোটেল থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান বলে ধারণা করছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ।
রাফসান ইরফান (২৭) চট্টগ্রামের মিছিল-মিটিংয়ে সামনের সারিতেই থাকতেন। তরুণদের সংগঠিত করার দারুণ দক্ষতাও ছিল তার। মেধাবী সেই তরুণের মদের জোয়ারে হারিয়ে যাওয়া কেউ মেনে নিতে পারছেন না। অনেকে সন্দেহ করছেন, এটি স্বাভাবিক মদপানে মৃত্যু নয়। হয়তো কম সময়েই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে বেশি পরিচিতি পাওয়াটা তার জন্য কাল হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন হোটেল বে ওয়ান্ডার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বলেন, রাফসান ইরফান তার আরেক বন্ধুকে নিয়ে কক্সবাজারের বে ওয়ান্ডারে উঠেন ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে। ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার পর তাদের অতিরিক্ত বুকের ব্যথা ও বমি হয়। ওই সময় লেবুর রস ও তেঁতুল খেলে কিছুটা স্বস্তি অনুভব করেন তারা। এরপর ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু শুক্রবার ভোরে আবারো বুকে ব্যথা বেশি অনুভব করলে তাদের দুইজনকে কক্সবাজারের বেসরকারি একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় সেখান থেকে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মৃত্যু হয় রাফসান ইরফানের।
কক্সবাজারের হোটেল বে ওয়ান্ডারের ম্যানেজার মুহাম্মদ মান্নান বলেন, ১৫ সেপ্টেম্বর হোটেলে উঠেন রাফসান ইরফান। বুকিংয়ে তার নাম থাকলেও হোটেল রেজিস্টারে দেখা যায়, যে রুমে তারা ছিলেন এর মধ্যে রাফসানের নাম নেই। এখানে যারা ছিলেন তাদের নাম লেখা হয়- এমডি পিয়াম ও রায়হান। তাদের বয়সও ২৫-এর উপরে।
সূত্র জানায়, রাফসান ইরফানের সঙ্গে বে ওয়ান্ডার হোটেলের চিফ অ্যাকাউন্টেন্ট কায়সার আহমেদের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। মূলত কায়সারের রেফারেন্সেই ১৫ সেপ্টেম্বর ওই হোটেলে ওঠেন রাফসান। ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টায় হঠাৎ বন্ধুসহ রাফসান অসুস্থ হয়ে পড়লে দেখভাল করেন কায়সার। অন্য হোটেলে তার রাজনৈতিক কিছু জুনিয়র ছেলে ছিল বলে রাফসানের বন্ধুরা জানান।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি অতিরিক্ত পরিমাণে মদপানে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন রাফসান। এরপরও ময়নাতদন্তের পর বাকিটা জানা যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, রাফসান ইরফান দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার বাড়ি চটগ্রামের কোতোয়ালি থানার এনায়েত বাজার বাটালি রোডে। তিনি কোতোয়ালি থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন। শুরুতেই তিনি ছাত্রলীগের রিমন গ্রুপের রাজনীতি করতেন। পরে তিনি রাজীব দত্ত রিংকু গ্রুপের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। কোনো পদ-পদবি না থাকলেও তাকে সবাই ছাত্রলীগ নেতা হিসেবেই চিনতেন। -যুগান্তর