ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | রেলের হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি অবৈধ দখলে

রেলের হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি অবৈধ দখলে

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

নিউজ ডেক্স : নানা কৌশলে রেলওয়ে চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি অবৈধ দখলে থাকলেও বাজেটের অভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না। চট্টগ্রামে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে রেলের কোন বাজেট নেই। বাজেট অনুমোদনের পর উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে বলে রেলের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অপরদিকে রেলের বেহাত হয়ে যাওয়া সম্পত্তি উদ্ধারে জবরদখলকারীকে পাঁচ বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে নতুন আইন করা হচ্ছে। রেলের পদস্থ কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশের মোট ব্যবহারযোগ্য ভূমির ১৫ শতাংশের মালিক রেলওয়ে। চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, কুমিল্লা এবং ব্রাহ্ম্মণবাড়িয়ার গঙ্গাসাগর পর্যন্ত এলাকা নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগ। চট্টগ্রাম বিভাগে বর্তমানে রেলওয়ের মোট ভূ-সম্পত্তির পরিমাণ ৭২৭১.৭৩ একর। এরমধ্যে রেলওয়ে স্টেশন, রেল লাইনসহ অপারেশনাল কাজে ব্যবহৃত হয় ৪৩৯৬ একর। অবশিষ্ট ২৮৭৫.৭৩ একর ভূমি রেলওয়ের কোন কাজে ব্যবহৃত হয় না। এর মধ্যে ১৫৭৮.২৬ একর ভূমি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ৪৫৪.৬২ একর। কৃষি কাজের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ৯০৮.৪৭ একর। মৎস্য খাতে দীঘি ও পুকুর হিসেবে ইজারা দেয়া হয়েছে ১৭০.৩৩ একর। নার্সারীর জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে ১.৬১ একর। সিএনজি স্টেশনকে ইজারা দেয়া হয়েছে ৫.৫৯ একর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়া হয়েছে ৩৭.৬৪ একর। এর বাইরে চট্টগ্রামে হাজার কোটি টাকা দামের ১৬৯.৮২ একর ভূমি রয়েছে অবৈধ দখলে। এর মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দখলে রয়েছে ১৫০ একর এবং বিভিন্ন ব্যক্তির অবৈধ দখলে রয়েছে ১৯.৮২ একর ভূমি। অপরদিকে রেলওয়ের দখলে রয়েছে এমন ভূমিও সুকৌশলে অবৈধ দখলদাররা ভোগ করছে। একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নামে থাকা বাসা ভাড়া নিয়ে পাঁচ ছয়জন বসবাস করছে। রেলের জায়গা কর্মকর্তা কর্মচারীরা ভাড়া দিয়ে রেখেছে বছরের পর বছর।

এবিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ ফারুক আহমেদ বলেন, আমরা বাজেট চেয়েছি। বাজেট অনুমোদন হলেই উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবো।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দখলে রেলের বহু সম্পত্তি রয়েছে। বাসা বাড়িগুলোর নিয়ন্ত্রণেও রয়েছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাকর্মী। এরা ঠিক হলে অবৈধ দখলের অবসান হবে। উচ্ছেদ অভিযানের জন্য নতুন বাজেটের প্রয়োজন পড়বে না। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ঠিক না হলে বাজেট করেও রেলের সম্পত্তি অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করা যাবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রামের মতো সারাদেশে রেলের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি অবৈধ দখলে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে রেলওয়ে সমীক্ষা চালিয়ে নিশ্চিত হয়েছে যে- অন্তত সাড়ে চার হাজার একর সম্পত্তি বেদখল রয়েছে। তিনি বলেন, সম্পত্তি উদ্ধারের নয়া আইনটি ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে স্থাবর সম্পত্তি (অবৈধ দখল উদ্ধার) আইন ২০১৮’ নামে অভিহিত হবে। এআইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের জন্য বিনা পরোয়ানায় যে কাউকে গ্রেপ্তার করারও বিধান রাখা হচ্ছে। আইনে রেলওয়ের সম্পত্তি দখল করে অথবা শ্রেণী পরিবর্তন করা হলে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ৩ লাখ টাকা অর্থ দণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। কেউ রেলওয়ের স্থাবর সম্পত্তি দখলের প্ররোচনা দিলে অথবা সহায়তা করলে তাকেও ৩ বছরের কারাদণ্ড, ৩ লাখ টাকার অর্থ দণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দন্ডিত করা হবে। নতুন আইনটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের তফসিলভুক্ত হবে এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধভাবে দখলে রাখা রেলওয়ের স্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার করা হবে।

সূত্র : দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!