Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | লোহাগাড়ার এক গৃহবধুকে কক্সবাজারে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা

লোহাগাড়ার এক গৃহবধুকে কক্সবাজারে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা

41846268_2198340833777452_2038491637318942720_n (1)

নিউজ ডেক্স : লোহাগাড়ার গৃহবধু ও কক্সবাজার শহরের শান্তিমেচের মালিকের পুত্রবধূ ঋতুপর্ণা চৌধুরীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মৃত্যুর ১৮ দিন পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে গৃহবধূ ঋতুপর্ণার মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দাবি করে। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই শুভ বাদী হয়ে গত ৩ অক্টোবর নিহতের শ্বশুর-শাশুড়ি, স্বামী, দেবরসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা করে। এর আগে ২ অক্টোবর রাতে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের (লালদীঘির পশ্চিম পাড়) শান্তিমেচের মালিক নেপাল চৌধুরী ও তার ছেলে রানা চৌধুরী টুটন (ঋতুপর্ণার স্বামী)’কে শান্তিমেচ থেকে আটক করে। গত বুধবার আদালতের মাধ্যমে শ্বশুর ও স্বামীকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকীরা বর্তমানে পলাতক রয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, ঋতুপর্ণা হত্যা মামলায় মোট ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন ঋতুপর্ণার স্বামী রানা চৌধুরী টুটন (৩২), শ্বশুর নেপাল চৌধুরী (৫৫), শাশুড়ি আভা চৌধুরী (৪৮), দেবর ডা. রিপন চৌধুরী (৩০) এবং নিকটআত্মীয় চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার সুখছড়ি গ্রামের সাজু দাশ (৩০) ও নন্টু বিকাশ দাশকে। এবিষয়ে মামলার বাদী ও নিহতের ভাই শুভ চৌধুরী বলেন, আমার বোনের মৃত্যুর সময় থেকে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ ছিল। তবুও আমি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় ছিলাম। প্রতিবেদন হাতে পেয়েই হত্যা মামলাটি দায়ের করেছি।

তিনি আরো বলেন, ২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঋতুপর্ণার সাথে ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে বিয়ে হয় রানা চৌধুরীর। বর্তমানে ঋতুপর্ণা ও রানা চৌধুরীর সংসারে তুর্ন নামে ২ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী রানাসহ তার পরিবারের সদস্যরা ঋতুপর্ণাকে যৌতুকের জন্য শারিরীকভাবে নির্যাতন চালাতো। এরই জের ধরে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় আসামিরা যৌতুকের দাবিতে মারধর করে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। পরে তারা হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালায়।

কঙবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, গৃহবধূ ঋতুপর্ণা’র অপমৃত্যুর ঘটনায় ১৫ সেপ্টেম্বর কঙবাজার থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা রেকর্ড করা হয়। পরে কঙবাজার সদর হাসপাতালের ময়না তদন্তকারী কর্মকর্তা ডা. আবুল খায়ের আজাদ তার প্রতিবেদনে ঋতুপর্ণাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে প্রতিবেদন দিলে হত্যা মামলা রুজু করা হয়।

তিনি আরো বলেন, ঋতুপর্ণার মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন অদ্ভুত আচরণ শুরু করে। তারা নিহত গৃহবধূকে ‘মানসিক রোগী’ হিসেবে দাবি করে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালায়। কিন্তু আমাদের কাছে কয়েকটি বিষয় খটকা লাগলে ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিই। সেসময় প্রভাব বিস্তার করে ময়নাতদন্ত না করার জন্য চাপ তৈরির চেষ্টা করে অভিযুক্ত পক্ষ। কিন্তু আমরা তারপরও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন করি। ওসি আরো বলেন, পলাতক অন্য ৪ আসামিকে আটকের চেষ্টা চলছে।

এদিকে নিহতের দেবর ও মামলার অভিযুক্ত ডা. রিপন চৌধুরী বলেন, আমার বৌদি মানসিক রোগী ছিলেন। তিনি একজন মনোরোগ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আর ঘটনার দিন আমি ঢাকার পপুলার হাসপাতালে কর্মরত ছিলাম।

লোহাগাড়ার এক গৃহবধুর মৃত্যু কক্সবাজারে : হত্যা নাকি আত্মহত্যা ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!