ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বৈদ্যুতিক ফাঁদ আর গুলিতে মারা যাচ্ছে বন্যহাতি

বৈদ্যুতিক ফাঁদ আর গুলিতে মারা যাচ্ছে বন্যহাতি

নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া হযরত আজগর আলী শাহ মাজারের পশ্চিম পাশে মইত্তাতলী এলাকায় বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে হাতি মারার ঘটনায় জড়িত কৃষক মো. আমান। আমান একা নয়, তার মতো সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার অনেক কৃষক ধানক্ষেত রক্ষা করতে পাহাড়ের পাশে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে প্রতিবছর হাতি হত্যা করছে। এমনও কৃষক আছে যারা ফসল রক্ষার জন্য বিলের মাঝে জেনারেটর বসিয়ে ফাঁদ পেতেছে।

এভাবে প্রতিবছর হাতি হত্যা করলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে অতীতে তেমন কোন আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। মামলা করলেও গ্রেপ্তার হয়না কোন আসামি। বন বিভাগের কর্মকর্তা- কর্মচারীদেরও নেই কোন নজরদারি। গত শুক্রবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত চার দিনের ব্যবধানে সাতকানিয়া ও কক্সবাজারের চকরিয়ায় বৈদ্যুতিক ফাঁদে জড়িয়ে ও শিকারির গুলিতে দুই বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে।

বন বিভাগের দেয়া তথ্য মতে, চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন এলাকায় গত ১০ বছরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, দুর্বৃত্তের গুলিতে, পাহাড় থেকে পড়ে গিয়ে ও অসুস্থ হয়ে ১৮টি বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার বিভিন্ন এলাকায় গত ১০ বছরে বন্যহাতির আক্রমণে মারা গেছে ১৩ জন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, আগে হাতির আক্রমণে কেউ মারা গেলে সরকারের পক্ষ থেকে তার স্বজনদেরকে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হতো। এখন তা বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। আগে কেউ আহত হলে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হতো। এখন তা বাড়িয়ে ১ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। একইভাবে বসতঘর ও ফসলাদির জন্য ক্ষতিপূরণ বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও লোকজন অজ্ঞতার কারণে অন্যায়ভাবে বৈদ্যুতিক ফাঁদ দিয়ে এবং গুলি করে প্রাণীগুলোকে হত্যা করছে। আমরা সভা-সমাবেশ করে লোকজনের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করছি। হাতি এবং মানুষের মধ্যে চলমান লড়াই স্থায়ীভাবে নিরসনের জন্য কার্যকর উপায় বের করার জন্য গবেষণা চলছে।

লোকলয়ে আসা হাতি তাড়ানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী আছমত জানান, লোকালয়ে আসা হাতির মল সংগ্রহ করে শুকনো মরিচের গুঁড়োর সাথে ভালো ভাবে মিশিয়ে শুকানোর পর সংরক্ষণ করতে হবে। পরে হাতি এলাকায় আসলে দুরে থাকা অবস্থায় মরিচের গুঁড়ো মেশানো শুকনো হাতির মলে আগুন দিলে যে গন্ধ বের হবে সেটা পাওয়ার পর হাতি আর সামনের দিকে আসবেনা। পেছনের দিকে চলে যাবে। আফ্রিকাতে এ পদ্ধতিতে হাতি তাড়ানো হয়। এ পদ্ধতি অবলম্বন করতে চাইলে হাতি একবার এলাকায় আসলে যেখানে মল ত্যাগ করবে সেখান থেকে তা সংগ্রহ করে মরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!