ব্রেকিং নিউজ
Home | ব্রেকিং নিউজ | বৃহত্তর চট্টগ্রামে ১৫৮০ স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক

বৃহত্তর চট্টগ্রামে ১৫৮০ স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ২৬৯টি। এর মধ্যে নিয়মিত প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে ৮৫০টি স্কুল। অর্থাৎ ৮৫০টি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। একইভাবে রাঙামাটি জেলায় ৬৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৩৩টিতেই প্রধান শিক্ষক নেই।

যদিও নিয়মিত প্রধান শিক্ষক না থাকা বেশ কিছু স্কুলে জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা চলতি দায়িত্বে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এভাবেই চলছে অধিকাংশ স্কুল। বৃহত্তর চট্টগ্রামের ৫ জেলায় দেড় হাজারেরও বেশি (১ হাজার ৫৮০টি) স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।

জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান)। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, এই ৫ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৩৩টি। এর মধ্যে বর্তমানে ৩ হাজার ৫৩টি স্কুলে প্রধান শিক্ষক কর্মরত আছেন। বাকি ১ হাজার ৫৮০টি স্কুলে পদটি শূন্য। অর্থাৎ দেড় হাজারেরও বেশি স্কুলে বর্তমানে নিয়মিত প্রধান শিক্ষক নেই। অবশ্য, প্রাপ্ত তথ্যটি কয়েক মাস আগের হওয়ায় বর্তমানে শূন্য পদের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা অফিসার হৃষীকেশ শীল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকের পদকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীতকরণের ঘোষণা দেন। একই দিন এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রধান শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় নতুন করে নিয়োগ-পদোন্নতিতে জটিলতা দেখা দেয়। যার কারণে গত ৮ বছর ধরে এ পদে (প্রধান শিক্ষক) নতুন নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। এই সময়ে অবসরজনিতসহ বিভিন্ন কারণে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য হয়েছে। কিন্তু নতুন নিয়োগ-পদোন্নতি না হওয়ায় ওই শূন্য পদ পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরঞ্চ দিন দিন শূন্য পদের এ সংখ্যা বাড়ছেই।

নতুন নিয়োগ-পদোন্নতি বন্ধ থাকায় এ পদে জটিলতা দেখা দিয়েছে স্বীকার করে চট্টগ্রামের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আগে জেলা-উপজেলার সংশ্লিষ্ট কমিটির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে নতুন নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার পর এসব কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ-পদোন্নতিতে জটিলতা দেখা দেয়। মোটকথা, দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ায় পদটিতে মাঠ পর্যায়ের কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বা পদোন্নতির সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি এরপর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের হাতে ন্যস্ত। অর্থাৎ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত। এ বিষয়ে অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের তথ্য মতে, কঙবাজার জেলায় মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫৮টি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক আছেন ৫৬২টি স্কুলে। বাকি ৯৬টিতে নিয়মিত প্রধান শিক্ষক নেই। খাগড়াছড়ি জেলায় সরকারি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে ৫৯৩টি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক আছেন ৪৬১টি স্কুলে। বাকি ১৩২টি স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। বান্দরবান জেলায় মোট ৪৩৫টি স্কুলের মধ্যে প্রধান শিক্ষক আছেন ২৬৬টিতে। বাকি ১৬৯টি স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য।

এক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, আগে উপজেলায় চার সদস্যের পদোন্নতি কমিটির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক হতে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেয়া হতো। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কমিটির সভাপতি আর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। আর উপজেলার দুটি স্কুলের দুজন প্রধান শিক্ষক এ কমিটির সদস্য। এই চার সদস্যের কমিটি জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির সুপারিশ করতেন। যা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অনুমোদন হতো। আর জেলা কমিটির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষকের নিয়োগের আদলে আগে প্রধান শিক্ষক পদেও নতুন নিয়োগ দেয়া হতো।

কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হওয়ার পর মাঠ পর্যায়ের এসব কমিটির মাধ্যমে পদটিতে নতুন করে নিয়োগ ও পদোন্নতির সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এত করে পদটিতে দীর্ঘ সময় ধরে নতুন নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। যার ফলে স্কুলগুলো নিয়মিত প্রধান শিক্ষক শূন্য হয়ে পড়ছে। প্রাথমিকের এ পদে (প্রধান শিক্ষক) ৬৫ শতাংশ সহকারী শিক্ষক হতে পদোন্নতির মাধ্যমে এবং বাকি ৩৫ শতাংশ শূন্য পদ নতুন নিয়োগের মাধ্যমে পূরণের নিয়ম রয়েছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। -আজাদী প্রতিবেদন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!