ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ডিসেম্বরের আগে শেষ হচ্ছে না বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ

ডিসেম্বরের আগে শেষ হচ্ছে না বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ

নিউজ ডেক্স : নির্দিষ্ট সময়ের আগে (আগামী ডিসেম্বর) শেষ হচ্ছে না বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণ কাজ। প্রকল্পটির সময়সীমা চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার টানেলের ৮০ শতাংশ ভৌত অবকাঠামোর কাজ সম্পন্ন হলেও এখনো দুইপাশের অ্যাপ্রোচ সড়কসহ টানেলের ২০ শতাংশ মূল কাজ বাকি বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

এই অঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশার পাশাপাশি প্রকল্প সংশ্লিষ্টরাও জানিয়েছিলেন, প্রকল্পের মেয়াদের আগেই টানেলের কাজ শেষ হবে এবং সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে। গত শুক্রবার টানেলের আনোয়ারা অংশে গিয়ে দেখা যায়, দিনরাত সমান তালে চলছে উভয়পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কসহ টানেলের অবশিষ্ট কাজ। তবে এখানো বেশ কিছু কাজ বাকি। সব দেখে ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগে শেষ হচ্ছে না টানেলের কাজ। এমনকি ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। গত ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে আগামী অক্টোবরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল ব্যবহারের আশার সঞ্চার হয়।

এই ব্যাপারে টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে যথাসময়ে টানেলের কাজ শেষ করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কাজ শেষ হবে এই কথা বলছি না। তবে কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন পর্যন্ত টানেলের মোট ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন টানেলের ভেতরে গাড়ি চলাচলের জন্য পিচ ঢালা সড়ক নির্মাণ এবং ইউটিলিটি লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। সবমিলিয়ে অ্যাপ্রোচ সড়কসহ এখনো মূল কাজের ২০ শতাংশ বাকি রয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেয়াদের মধ্যেই যেন কাজ শেষ করা যায় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

প্রকল্প কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, টানেল নির্মাণের সবচেয়ে কঠিন অংশটি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এখন ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক ও টানেলের ভেতরে রাস্তা তৈরি করছে এবং ইউটিলিটি লাইন স্থাপন করছে। এগুলো সম্পন্ন হলেই যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার আশা করছে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। অনুমোদনের দুই বছর পরে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তখন ব্যয় এক দফা বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ধরা হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার। চীনের কমিউনিকেশন এবং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টানেল নির্মাণের কাজটি বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পটির মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেলের প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট দুই টিউবে নির্মিত হচ্ছে ৪ লেনের সড়ক। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকছে। আরও রয়েছে টানেলের আনোয়ারা অংশে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারব্রিজ। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কাজের গতি কিছুটা শ্লথ থাকলেও বর্তমানে বাড়তি জনবল নিয়োগের পাশাপাশি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মেশিনারিজ সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে কাজের গতি বেড়েছে বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, একটি টিউবের সড়ক দিয়ে আনোয়ারা থেকে পতেঙ্গা অভিমুখী এবং অন্য টিউব দিয়ে পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা অভিমুখী যানবাহন চলাচল করবে। কাজের ব্যাপারে জানতে চাইলে সওজ দোহাজারী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে সংযোগে শিকলবাহা-আনোয়ারা সড়ক প্রকল্পটি চার লেনে উন্নীতকরণের কাজটি দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। মাটি ভরাটের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। সড়কের কোনো কোনো অংশে চলছে কার্পেটিংয়ের কাজ। -দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!