Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দেখা দিয়েছে দোদুল্যমান

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দেখা দিয়েছে দোদুল্যমান

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দোদুল্যমান দেখা দিয়েছে। আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যথায় আইনী জটিলতা সৃষ্টি হবে বলে জানান নির্বাচন কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ এর ৩৮(১) এর ‘ক’ ধারায় আছে, করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। আইনের ৬নং ধারায় রয়েছে, প্রথম সভা থেকে ৫ বছর হবে। সেই হিসাবে আগামী ৮ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৫ বছর পূর্ণ হবে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘আগস্টের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে নতুন করে তফসিল ঘোষণার প্রশ্ন চলে আসবে।’ ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি করেপারেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ৮ আগস্ট। সেই হিসাবে আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ৫ বছর পূর্ণ হবে। আগস্ট মাসেই বর্তমান সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইনী বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সেই হিসাবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। ২৯ মার্চ ভোটগ্রহণের দিনক্ষণ নির্ধারণ করে এ তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল।
ঘোষিত তফসিল মতে, ২৭ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ছিল ১ মার্চ। ৮ মার্চ ছিল প্রার্থিতা প্রহ্যাহারের শেষদিন। ৯ মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটের মাঠে ছিলেন প্রার্থীরা।

মেয়র নির্বাচনে ভোটের মাঠে রয়েছে মেয়র পদে ৭ জন। কাউন্সিলর পদে ১৬৩ জন এবং মহিলা কাউন্সিলর পদে ৫৬ জন। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা দলবল নিয়ে প্রচার-প্রচারণা প্রচুর লোকের সমাগম হয়ে আসছিল। করোনাভাইরাসে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। পরবর্তীতে চট্টগ্রামসহ দেশ লকডাউনে (অবরুদ্ধ) চলে যায়। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ছাড়া নির্বাচন স্থগিত করার জন্য কমিশনে আবেদন করেন ৬ মেয়র প্রার্থী। গত ২১ মার্চ নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আইন অনুযায়ী আগামী আগস্টের মধ্যে ভোটগ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

একাধিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ এখন মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। বাড়ছে মৃত ও রোগীর সংখ্যা। এ অবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা অনেকটা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। আগস্ট মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন আইনের ‘খ’ ধারায় আছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। ‘গ’ ধরায় বলা হয়েছে, কোনো সিটি করপোরেশনের মেয়াদোত্তীর্ণের ক্ষেত্রে ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হলে বর্তমান মেয়র ও কাউন্সিলরদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সংস্থানীয় সরকার আইনে।

সিটি কর্পোরেশন আইন-২০০৯ এর ২৫(১)-এ উল্লেখ রয়েছে ‘নতুন সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করা হইলে অথবা কোনো সিটি কর্পোরেশন বিভক্ত করা হইলে অথবা কোন সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদোত্তীর্ণ হইলে, সরকার সিটি কর্পোরেশন গঠিত না হওয়া পর্যপ্ত উহার কার্যাবলী সম্পাদনের উদ্দেশ্যে একজন উপযুক্ত ব্যক্তি বা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করিতে পারিবে।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বলেন, ‘১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাকতা রয়েছে। তবে দেশের দুর্যোগময় মুহূর্ত বা মহামারীতে নির্বাচন পেছানোর সুযোগ রয়েছে আইনে।’ তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন চাইলে নতুন তফসিল ঘোষণা ছাড়াও পূর্বের তফসিল অনুযায়ী ভোটগ্রহণের সুযোগ রয়েছে। এখানে আবার আইনের বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য হবে না।’ পূর্বকোণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!