Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রামে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক নদী ভাঙন

চট্টগ্রামে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক নদী ভাঙন

20799469_2012038009025769_4224914643236352238_n

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রামে অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছেন। সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলে কয়েকশ বসতভিটা ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। বৃষ্টি দেখলেই ভাঙন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চট্টগ্রাম জেলায় প্রায় ৩০ কিলোমিটার নদী ভাঙন এলাকা রয়েছে। এসব ভাঙন এলাকা নিয়ে একাধিক প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। অবশ্য বর্তমানে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া, লোহাগাড়া,   চন্দনাইশ, বাঁশখালী, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও বোয়ালখালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সাঙ্গু, কর্ণফুলী ও হালদা নদী সংলগ্ন ভাঙন এলাকা রয়েছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকায় অনেক বসতি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এতে গৃহহারা হয় শতশত পরিবার। তারা বসতভিটা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। নদী ভাঙনে বসতবাড়ি ছাড়াও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা ও বাজার বিলীন হয়ে গেছে।

সম্প্রতি পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির সে াতে সাঙ্গু নদ ও ডলু খালের উভয় পাশে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। বর্ষা মৌসুমে প্রতি বছর এ ধরনের অবস্থা বিরাজ করে। জানা যায়, সাতকানিয়া উপজেলার মধ্যে চরতী ইউনিয়নের তুলাতলী, উত্তর ব্রাহ্মণডেঙ্গা, দ্বীপ চরতী, দক্ষিণ চরতী, আমিলাইশ, নলুয়া, পশ্চিম ঢেমশা, সোনাকানিয়া এলাকা ভাঙনের কবলে রয়েছে। সাঙ্গু ও ডলুর তীরবর্তী প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা ভাঙন কবলিত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বছরের পর বছর এসব স্থানে ভাঙনের কবলে পড়ে শতশত পরিবার গৃহহারা হয়েছে। এখনো হাজারো বসতি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সাঙ্গুর উত্তর পাশে চন্দনাইশ অংশের চর বরমা, চাগাচর, বাজালিয়া, ধর্মপুরসহ কয়েকটি এবং লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি, লোহাগাড়া, আধুনগর, আমিরাবাদ ও পদুয়া এলাকা ব্যাপক ভাঙনপ্রবণ বলে জানা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড আরো জানায়, সাতকানিয়া, লোহাগাড়ায় সাঙ্গু ও ডলুর ভাঙন কবলিত এলাকার তীর সংরক্ষণে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ৩৪৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ প্রকল্পটি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটি আগে আরো একবার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। পরে নতুন করে আরো এলাকা সংযোজন করে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। প্রকল্পটি বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে নদী ভাঙনের কবল থেকে কয়েক হাজার মানুষের কৃষিজমি ও বসতভিটা রক্ষা পাবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এছাড়া চন্দনাইশ অংশে চলমান প্রকল্পে ১৩টি স্পটে ভাঙন রয়েছে। ইতিমধ্যে ২টি স্পটে তীর সংরক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে প্রকল্পের সাঙ্গুর তীর সংরক্ষণ কাজে ধীরগতির অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

এদিকে রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, বোয়ালখালী ও ফটিকছড়ি এলাকায় কর্ণফুলী ও হালদা নদীর ভাঙনে বহু পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তপন বড়ুয়া ইত্তেফাককে বলেন, রাঙ্গুনিয়া ও হাটহাজারী এলাকার ভাঙন নিয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এছাড়া ফটিকছড়ি এলাকায় হালদা নদীর ভাঙন প্রতিরোধ ও সেচ প্রকল্প নিয়ে ২৭০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি এখন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে রয়েছে।

অন্যদিকে বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া, জুঁইদণ্ডী এলাকার সাঙ্গু নদ সংলগ্ন কয়েক কিলোমিটার এলাকা ভাঙনপ্রবণ। গত কয়েক বছর ধরে অব্যাহত ভাঙনে পুকুরিয়া গ্রামের বিপুল পরিমাণ এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী-২ একেএম জুলফিকার তারেক ইত্তেফাককে বলেন, ‘পুকুরিয়ায় ভাঙন প্রতিরোধ ও খাগড়াছড়ি শহর রক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।’

-ইত্তেফাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!