ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | এক্সপ্রেসওয়ের ভুল নকশায় গচ্ছা ১৩শ কোটি টাকা

এক্সপ্রেসওয়ের ভুল নকশায় গচ্ছা ১৩শ কোটি টাকা

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ্ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত নির্মীয়মাণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ১৬ কিলোমিটার। কাজের মেয়াদ ধরা হয় তিন বছর। এরই মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ৬০ শতাংশ। অথচ ঠিক নেই স্প্যানের দৈর্ঘ্যের নকশা। ফাউন্ডেশন নকশায় ত্রুটি। পিসি গার্ডার অপসারণসহ বেশকিছু অংশের কাজও অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

ভুলে ভরা এসব নকশা ঠিক করতে প্রকল্পের ব্যয় এক হাজার ২৯৯ কোটি ৭০ লাখ ১৬ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এখন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে চার হাজার ৪৫০ কোটি ৫৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে ভুল নকশার কারণে প্রকল্পের সময়ও বেড়েছে একাধিকবার। প্রথমে জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ মেয়াদে  প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এরপর জুন ২০২১ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। পরে আবারও জুন ২০২২ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ে। নতুন করে আবার ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ছে।

মেগা প্রকল্পটি নিয়ে বেশ সংকটে পড়েছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকাটি বঙ্গবন্ধু টানেল, আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, এয়ারপোর্ট রোডসহ একাধিক মেগা প্রকল্পের সংযোগস্থল। এমনকি সেখানে নেই কোনো ইউ-লুপ, ইউ-টার্ন বা সার্ভিস রোড। ফলে সুষ্ঠু যানবাহন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম ট্রাফিক বিভাগ। এজন্য প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় নতুনভাবে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করেছে সিডিএ। প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার জন্য কার্যপত্র তৈরি করেছে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। কার্যপত্রে ভুলে ভরা নকশার চিত্র উঠে এসেছে। তবে নানা খাতে ব্যয় কমানোর পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।

পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. মামুন-আল-রশীদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নকশার পরিবর্তন হয়। নকশা যেহেতু পরিবর্তন হচ্ছে ব্যয়ও বাড়বে। তবে নানা খাতে ব্যয় কমাতে বলা হয়েছে। যেমন এলইডি লাইটে ব্যয় কমাতে বলেছি। অন্যান্য খাতেও ব্যয় কমাতে হবে। এ বিষয়ে সিডিএকে বলা হয়েছে। নগরবাসীর চাহিদার জন্যই নকশা পরিবর্তন করতে হচ্ছে।

অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন: প্রকল্পের সল্টগোলা থেকে বারেক বিল্ডিং পর্যন্ত অ্যালাইনমেন্টে ভুল ধরা পড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখা ও বন্দরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অ্যালাইনমেন্ট অনুযায়ী নকশা পরিবর্তন করা হবে। এতে ফাউন্ডেশন, সাব স্ট্রাকচার, সুপার স্ট্রাকচারের নকশার পরিবর্তন হয়েছে।

স্প্যানের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি: প্রকল্পের অ্যালাইনমেন্টের মধ্যে কেইপিজেড, সিমেন্টক্রসিং, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এলাকা, সিইপিজেড, বন্দর এলাকা, কাস্টমস সার্কেল ও আগ্রাবাদ এলাকায় ২০টি গুরুত্বপূর্ণ জংশন রয়েছে। এসব জংশনে নির্বিঘ্নে যান চলাচলের সুবিধার্থে এবং বিভিন্ন সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্প্যানের দৈর্ঘ্য আগের নকশায় উল্লেখিত ৩০-৩৫ মিটার থেকে বাড়িয়ে ৪৫-৫০ মিটার করা হয়েছে। এতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ও ভেটিং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নকশা পরিবর্তন করায় প্রকল্পের ফাউন্ডেশন, সাব-স্ট্রাকচার, সুপার স্ট্রাকচারের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন আইটেমের পরিমাণ বেড়েছে। ফলে এসব ভুল কাজ সংশোধনে ব্যয় বাড়ছে।

পাইল ক্যাপের সাইজ, পিয়ারের সাইজ এবং কংক্রিট গ্রেডের পরিবর্তন: পাইল ক্যাপের সাইজ ১৪ মিটার বাই ৮ দশমিক ৫ মিটার এবং পিয়ারের সাইজ ৩ দশমিক ৬০ মিটার বাই ২ দশমিক ৫ মিটার ধরে প্রকল্পের দরপত্র করা হয়েছিল। কিন্তু ভুল নকশার কারণে এগুলো আবারও পরিবর্তন করতে হবে। নুতন করে পাইল ক্যাপের সাইজ কমিয়ে ১০ দশমিক ৪০ মিটার বাই ৪ দশমিক ৮০ মিটার ও ৮ দশমিক ৪০ মিটার বাই ৮ দশমিক ৪০ মিটার করা হচ্ছে। এছাড়া পিয়ারের সাইজ কমিয়ে ২ দশমিক ৫ মিটার বাই ২ দশমিক ৫ মিটার করে নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। প্রকল্পের চৌমুহনী থেকে বারেক বিল্ডিং পর্যন্ত রাস্তার ডিভাইডারের পাশে ভূ-গর্ভস্থ আরসিসি বক্স ড্রেনের আকার পরিবর্তন করা হয়েছে। পাইল ক্যাপের সাইজ ও পিয়ারের সাইজ ছোট হওয়ায় কংক্রিট গ্রেড বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এতে পাইল ক্যাপ, পিয়ার ও পিয়ার ক্যাপের কংক্রিট গ্রেড টেন্ডার ডিজাইনে উল্লেখিত সি-৩০ থেকে বাড়িয়ে সি-৪০ এ উন্নীত করা হয়েছে।

রেললাইনের ওপর পোর্টাল ফ্রেমের মাধ্যমে পিয়ার নির্মাণ: প্রকল্পের সল্টগোলা থেকে পিসিআর গেট পর্যন্ত অংশে বিদ্যমান রেললাইনের ওপর বাংলাদেশ রেলওয়ের বিধান অনুযায়ী ৯ মিটার উচ্চতায় অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। তবে উচ্চতা কম থাকায় নতুনভাবে ড্রয়িং ও ডিজাইন প্রস্তুত করার ফলে ফাউন্ডেশনসহ অন্যান্য আইটেমের পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়াও নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বেড়েছে কাজের ব্যয়।

ফাউন্ডেশন নকশা পরিবর্তন: প্রকল্পের অ্যালাইনমেন্টের পরিবর্তন , বিভিন্ন স্থানে স্প্যানের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি, পাইল ক্যাপের সাইজ কমানোসহ বক্স ড্রেনের নকশায় ভুল ধরা পড়ে। ওয়াসার বিভিন্ন ব্যাসের পাইপ অবস্থানের কারণে পাইল ক্যাপের সাইজের পরিবর্তন, রেললাইনের ওপর পোর্টাল ফ্রেমের মাধ্যমে পিয়ার নির্মাণের জন্য ডিটেইল ডিজাইন করা হয়েছে। প্রতিটি পিয়ার পয়েন্টের সয়েল টেস্ট রিপোর্ট অনুযায়ী ডিজাইন টিম এবং ভেটিং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পাইলের দৈর্ঘ্য করেছিল ৩০ থেকে ৪০ মিটার। এখন এটা বাড়িয়ে ৬৫ থেকে ৭৫ মিটার করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রকল্প গ্রহণের সময় চুয়েট যে সমীক্ষা করেছিল তা শুধু এক্সপ্রেসওয়ের গতিপথ ও ট্রাফিক স্ট্যাডি সংক্রান্ত। সাব-স্ট্রাকচারাল নকশা সংক্রান্ত সমীক্ষা তখন পর্যন্ত না থাকায় পাইলের পরিমাণ অপর্যাপ্ত ধরা হয়েছিল। এতে ১২০০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইলের পরিমাণ ও দৈর্ঘ্য বেড়েছে।

পিসি গার্ডার থাকছে না: প্রথমে পিসি গার্ডারের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এখন এটার পরিবর্তে ব্যালান্সড কান্টিলিভার প্রোগ্রেসিভ বক্স গার্ডার দেওয়া হবে। দেওয়ানহাটে অবস্থিত ঢাকা-চট্টগ্রাম ছয় লেন বিশিষ্ট রেল ট্র্যাকে ৬০ মিটার স্প্যানের চাহিদা রয়েছে। ফলে বক্স গার্ডার নির্মাণের পরামর্শ দেওয়া হয়, যা মূল ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনায়) ছিল না। এতে নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় কাজের ব্যয় বেড়েছে।

টোল প্লাজায় ব্যয় বাড়ছে ২৫ কোটি: প্রকল্পের সরকারি জারিপত্রে প্রিপেইড টোল প্লাজা স্থাপনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। টোলপ্লাজা স্থাপনের জন্য ২৫ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্লাম্বিং সিস্টেমে (ফ্লাইওভার ও র‌্যাম্পসহ) বাড়ছে ব্যয়: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর জমা বৃষ্টির পানি নিচে নামার জন্য প্লাম্বিং সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এ কারণে সংশোধিত ডিপিপিতে এ খাতে সাড়ে ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

jagonews24

রাস্তার উভয় পাশে ড্রেন নির্মাণ: বিভিন্ন স্থানে ফেনসিংয়ের উভয় পাশে রাস্তা প্রশস্ত করার কারণে নতুন ড্রেন নির্মাণ করতে হবে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় দুই পাশে ড্রেন না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। এসব সমস্যা বিবেচনায় রেখে ও চট্টগ্রাম বন্দর এবং কর্ণফুলী টানেলের সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্দর এলাকায় দেড় কিলোমিটার ব্রিক ড্রেন, কর্ণফুলী টানেল এলাকায় ৫০০ মিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা হবে। এসব কাজসহ লালখান বাজারে ম্যাজিস্ট্রেট কলোনি সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিদ্যমান ড্রেনটি ভেঙে নতুন করে প্রতিস্থাপন করতে হবে। বিধায় নতুন আইটেম হিসেবে সংশোধিত ডিপিপিতে রাস্তার উভয় পাশে আরসিসি ড্রেন নির্মাণের জন্য ছয় কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং ব্রিক ড্রেন নির্মাণের জন্য সাত কোটি ৯০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়।

ফ্লাইওভারের সৌন্দর্যবর্ধন (ল্যান্ডস্কেপিং): এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে ডিভাইডারের মধ্যে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের মতো সৌন্দর্যবর্ধন কাজটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ফোয়ারাটি আরও নান্দনিকভাবে পুনঃনির্মাণসহ ফ্লাইওভারের সৌন্দর্যবর্ধন (ল্যান্ডস্কেপিং) খাতে ২০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে।

মধ্যবর্তী প্রতিবন্ধক নির্মাণ: বন্দর এলাকায় চলাচলরত ভারী যানবাহনের সংঘর্ষ রোধে ব্রিক ওয়ালের পরিবর্তে আরসিসি মিডিয়ান সংশোধিত ডিপিপিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ খাতে ২৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে মনিটরিং ভবন ও কন্ট্রোল রুম নির্মাণ: টোল প্লাজা অপারেশন, সিসিটিভি ক্যামেরা মনিটরিং ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১০ হাজার বর্গফুটের এবং সেমি-বেজমেন্টসহ ছয়তলা ভবন প্রস্তাব করা হয়। তবে এক্ষেত্রে কমিটি কাজের পরিধি ও ভবিষ্যৎ কার্যক্রম বিবেচনা করে বেজমেন্ট বাদ দিয়ে আপাতত ছয়তলা ফাউন্ডেশনসহ তিনতলা ভবন নির্মাণ করার সুপারিশ করেছে। তাছাড়া বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রসেওয়ের বিভিন্ন স্থানে ৫০০ বর্গফুট করে মোট ১৩টি ইলেকট্রিক্যাল কন্ট্রোলরুম নির্মাণের বিষয়ে সংশোধিত ডিপিপিতে প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব খাতে ১৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ছে।

ফুটওভার ব্রিজ: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের চাহিদা অনুযায়ী পথচারীদের নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্য নগরীর গুরুত্বপূর্ণ আটটি পয়েন্টে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত ডিপিপিতে বিষয়টি সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রকল্পের ব্যয় ১২ কোটি টাকা বাড়বে।

শব্দ প্রতিবন্ধক নির্মাণ: প্রকল্প এলাকার চাহিদার ভিত্তিতে বারেক বিল্ডিং থেকে সিমেন্টক্রসিং এলাকায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ফাইবার গ্লাসের শব্দ প্রতিবন্ধক নির্মাণকাজ সংশোধিত ডিপিপিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ খাতে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ২০ কোটি টাকা।

ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার ক্ষতিপূরণ: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার সংখ্যাও বেড়েছে। ক্ষতিপূরণ বাবদ ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। যা অনুমোদিত ডিপিপিতে ৭ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। ফলে এ খাতে ব্যয় বাড়ছে ৩০ কোটি টাকারও বেশি। এছাড়া পরামর্শক খাতে সাড়ে চার কোটি ও ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ব্যয় বাড়ছে ১২১ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

রোড মার্কিং: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন হওয়ায় এর দুই পাশের রাস্তা পুনঃনির্মাণ করা হয়। ফলে দৈর্ঘ্য বাড়ায় রোড মার্কিং খাতে পাঁচ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মূল ডিপিপিতে ধরা হয়েছিল এক কোটি ২৯ লাখ টাকা। ফলে এ খাতে ব্যয় বেড়েছে চার কোটি টাকা।

সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ: প্রকল্পের বিভিন্ন অংশে রাস্তার দুই পাশে পর্যাপ্ত ড্রেন না থাকায় প্রতি বছর বর্ষায় বৃষ্টির পানি ও জোয়ারের পানি জমে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। ফলে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করতে হয়। এ খাতে ১৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব হয়েছে, যা অনুমোদিত ডিপিপিতে ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। ফলে ৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় বেড়েছে।

বৈদ্যুতিক লাইনসহ পোল স্থানান্তর: শুধু বৈদ্যুতিক পোল ও লাইন স্থানান্তরের জন্য ১৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। কিন্তু এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনের ফলে রাস্তার পাশে বিদ্যমান বৈদ্যুতিক লাইনসহ বৈদ্যুতিক পোলসমূহ স্থানান্তর করা হবে। ওভারপাস-রোড ক্রসিং লাইনসমূহ আন্ডারগ্রাউন্ড পদ্ধতিতে প্রতিস্থাপনসহ আনুষঙ্গিক কাজের জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ২২০ কোটি টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করে। নতুন করে এ খাতে ১৮২ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

এলইডি লাইট স্থাপন (পোল ও ক্যাবলসহ): ফ্লাইওভারের ওপর ও নিচে এলইডি স্ট্রিট লাইট, এক্সেসরিজ, ক্যাবল, ফাউন্ডেশনসহ আনুষঙ্গিক কাজ বেড়েছে। এ খাতে ৭৯ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা মূল প্রকল্পে ছিল ৫৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা। ফলে নতুন করে এ খাতে ২০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ছে।

প্রকল্পের পরিচালক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন হয়েছে। অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তন হয়েছে। বেড়েছে ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণও। এসব কারণেই মূলত প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়ছে।

২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ্ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। -জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!