এম. সাইফুল্লাহ চৌধুরী : লোহাগাড়ার স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ পদুয়া এ.সি.এম উচ্চ বিদ্যালয়ের (১৯৮৫-১৯৯০) ছাত্র ছিলাম। ছাত্র জীবন হলো শৈশবের মধুময় স্মৃতির আঁধার ও নির্মল আনন্দের। অফুরান সুখের। তাই ছাত্র জীবনের কথা মনে হলেই আমরা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। দীর্ঘশ্বাস ফেলি, সুন্দর মধুময় সেই দিনগুলি আর কোন দিন ফিরে আসবে না। আমরাও শত চেষ্টা করলেও ফেলে আসা দিনগুলোতে ফিরে যেতে পারব না। তখনকার দিনে বিনোদনের তেমন কোন ব্যবস্থা না থাকায় আমরা একে অন্যের খুবই ঘনিষ্ট ছিলাম। আজ এই বয়সে এসে লক্ষ্য করছি এক সময়ের অনেক সহপাঠীই জীবনের তাগিদে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কারো সাথে কালে ভদ্রে হঠাৎ দেখা হয়ে যায়। অনেকের সাথে হয়ত কোন যোগাযোগও নেই। অনেকে আবার জীবনের মায়া কাটিয়ে পরপারে চলে গেছে। অবসর মুহুর্তে অনেক সহপাঠীর কথা মনে পড়ে, তখন ফিরে যায় সেই আনন্দঘন দিনগুলোতে। ভাবি সেইসব দিনগুলি কতই না মধুর ছিল। হঠাৎ করে গত আগষ্ট ২০১৭ ইং মাস থেকে আমার মনে পদুয়া এ.সি.এম উচ্চ বিদ্যালয়ের ’৯০ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আনন্দ ভ্রমণ ও পুনর্মিলনী করার এক উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। তখন আমার সহপাঠী যাদের মোবাইল নাম্বার ছিল তাদের সাথে যোগাযোগ শুরু করি। যাদের সাথেই যোগাযোগ করি সবাই এক বাক্যে সমর্থন দেন। এই আয়োজনের দায়িত্বভার আমার নিজের উপর বর্তায়। আমি এ লক্ষ্যে আন্তরিকতার সাথে কাজ শুরু করি। ইতিমধ্যে তারিখ ও স্থান ঠিক করি মুঠোফোনের মাধ্যমে। তারিখ ঠিক হল ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ইং আর স্থান হলো দরিয়া নগর কক্সবাজার ও ইনানী। আর এই কাজে আমাকে যারা অনুপ্রেরণা দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হলো নাছের সিকদার, আবু হেনা চৌধুরী (পারভেজ), জহির উদ্দিন, নিন্টু কুমার দাশ, মোর্শেদ আলী, মোর্শেদ আলম চৌধুরী, হারুন অর রশিদ, ইউনুচ সিকদার, নজরুল ইসলাম ও বান্ধবী জেছমিন সোলতানা চৌধুরী (জেলী), কহিনুর আক্তার এবং সুলতানা আরজু (রুনু)’র কাছ থেকে আমি অভাবনীয় পরামর্শ, সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা পাই। যার ফলে আমি আত্মতৃপ্তি অনুভব করি। সে জন্য প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাই সব বন্ধুদের যারা এই মহা মিলনে অংশগ্রহণ করেছে এবং যারা বিভিন্নভাবে অনেক সময় ও শ্রম দিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে। বিশেষ করে ঢাকা থেকে অসুস্থ পরিবার নিয়ে নাছের সিকদার, সিলেট থেকে পরিবার বর্গ নিয়ে আবু হেনা চৌধুরী (পারভেজ), চট্টগ্রাম শহর থেকে স্বপরিবারে হারুন অর রশিদ, নিন্টু কুমার দাশ, কক্সবাজারে চন্দন কান্তি দাশ, জিল্লুর রহমান ও জিয়াবুল হক (বাবুল) অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। যারা আসতে পারেনি তারা মোবাইলের মাধ্যমে নিজেদের মতামত দিয়েছেন, দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আমি সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি আরো কৃতজ্ঞতা জানাই বন্ধু চেয়ারম্যান জহির উদ্দিনসহ যারা তহবিল গঠনে সহায়তা করে আমাদের মহামিলনের এই অনুষ্ঠানকে সফল করেছেন। প্রথমে আমি উৎকন্ঠিত হয়েছিলাম এই ভেবে সুন্দর ও সার্থকভাবে আমাদের এই আনন্দ ভ্রমন ও পুনমিলনী অনুষ্ঠান সফল করতে পারব কিনা। ঘনিষ্ট বন্ধু, বান্ধবী ও আমার সুখ-দুঃখের সাথী প্রিয় সহধর্মীনি ফরিদা ইয়াছমিনও অনুপ্রেরণা যোগাল। প্রিয় সহপাঠী ভাই ও বোনেরা আমার স্বপ্ন ও আকাঙ্খা আকাশসম। তা বাস্তবতায় পরিণত করায় প্রয়োজন মহান রাব্বুল আলামিনের সাহায্য এবং আমাদের সকলের আন্তরিক সহযোগিতা। ত্যাগী মনোভাব ও ক্ষমা সুন্দর আচরণ। আমি আশা করি আমরা যেন প্রতি বছর এই মহামিলনের প্রচেষ্টায় সর্বদা সচেষ্ট থাকি। এই আনন্দ ভ্রমণ ও পুনমিলনী করতে গিয়ে তোমরা আমার অনেক অজ্ঞানতা ও অদক্ষতা দেখতে পেয়েছ। ভুল ত্র“টির তো কোন সীমা পরিসীমা নেই। তাই প্রথমেই সবিনয় আত্মসমর্পণ করলাম। আমার নিশ্চিত আশা তোমরা নিজগুণে এতসব অযোগ্যতাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে। যদি এর মধ্যে ভালো কিছু আবিস্কার করে থেকো, তা তোমাদেরই কৃতিত্ব। আজকের এই দিনে আমাদের যে সকল শ্রদ্ধেয় শিক্ষক পরপারে চলে গেছেন এবং যে সকল সহপাঠী বিশেষ করে মোঃ ফেরদৌস আলম ও মোঃ কবির চৌধুরীসহ নাম না জানা যারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। যারা আজও আমাদের সাথে দেশে-বিদেশে সম্মানের সাথে বেঁচে আছো তাদের সকলের এবং তাদের পরিবারবর্গের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
লেখক : দৈনিক কর্ণফুলী, লোহাগাড়া প্রতিনিধি।