ব্রেকিং নিউজ
Home | ব্রেকিং নিউজ | অতীতের সকল বিভেদ ভুলে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার

অতীতের সকল বিভেদ ভুলে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, ত্রাণ বিতরণ ও মেজবান অনুষ্ঠানে অতীতের সকল বিভেদ ভুলে একসাথে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন বক্তারা। সোমবার (৩০ আগস্ট) সকাল ১১টায় আলহাজ্ব মোস্তফিজুর রহমান কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত শোক সভায় তারা এমন মন্তব্য করেন।

লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী সভাপতিত্ব এবং চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম- ৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম- ১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

শোক সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাতকানিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এ. মোতালেব সিআইপি, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট একেএম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার আকতার আহমদ সিকদার, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য আনোয়ার কামাল, দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা হারুন লুবনা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর হায়দার চৌধুরী রুটন ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বিজয় কুমার বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহ উদ্দিন হিরু। এছাড়া শোক সভায় জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে পনের আগস্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করতে সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আজ থেকে লোহাগাড়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দলীয় কোন কোন্দল নেই। আমরা সকলে এখন ঐক্যবদ্ধ। যারা দলের ভেতর কোন্দল সৃষ্টি করবে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। তারা দলের শত্রু।

বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, পনের আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তাঁকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। সেদিন নেপথ্যের নায়ক জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার না করে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেছিলেন। তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে অনেক তথ্য আমাদের সামনে চলে আসে। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎকার করে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা কথা জানিয়েছিলেন ষড়যন্ত্রকারী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের রেল লাইন প্রকল্পের কাজ চলছে। ঢাকায় মেট্রোরেল চলতে দেখা গেছে। যা অতীতে মানুষ কল্পনাও করেননি। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল লাইন হবে।

আমিনুল ইসলাম বলেন, ১৯৭২- ৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ রাস্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল। তখনও সারা দেশে আওয়াম লীগ আওয়ামী লীগে ভরপুর ছিল। কিন্তু পনের আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে একটি গুলিও ফোটেনি। এমনকি একটি মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে মুজিব হত্যার প্রতিবাদ করেনি এটাই ইতিহাসের নির্মম সত্য। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বলেছিলেন দল ক্ষমতায় থাকলে কিছুলোক সুবিধা নেয়ার জন্য দলে আসবে। তাদেরকে চিহ্নিত করে দল থেকে বের করতে দিতে বলেছিলেন। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন আমার দলে অন্য কোন দলের নেতাকর্মীর দরকার নেই। কিন্তু কিছু লোক নিজের গ্রুপ ভারী করার জন্য এসব করেন। আমরা যদি শেখ হাসিনার কর্মী হই তাহলে এসব কথা আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, অতীতের সকল বিভেদ ভুলে আমরা আজ থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করবো। আমরা একযোগে কাজ করে চট্টগ্রাম- ১৫ আসন পুণরায় প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেব। এ আসনে প্রধানমন্ত্রী যাকে মনোনয়ন দিবেন সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের বিজয়ের জন্য কাজ করার ঘোষণা দেন। আগামীতে আমরা ব্যক্তি না দলের স্বার্থে একযোগে কাজ করবো। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে লোহাগাড়া-সাতকানিয়ায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। যা অতীতে হয়নি। এমন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই যেখানে সরকারি ভবন পাননি। পনের আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সকল খুনিদের বিচারের আওতায় আনার দাবী জানান।

জানা যায়, মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপির নেতৃত্বে লোহাগাড়া-সাতকানিয়ায় আওয়ামী লীগে দীর্ঘদিনের দলীয় কোন্দল নিরসন করেন। আগামীতে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আমিনুল ইসলাম ও প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এমপি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার ঘোষণা দেন। তাদের ঐক্যে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। তিন নেতাকে একসাথে একই মঞ্চে প্রথম দেখেছেন বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!