নিউজ ডেক্স : দেশের যে কোনো স্থানে নির্মিত ও নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মাধীন কমপ্লেক্সের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এ আদেশ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। ৭ মার্চ ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণার মামলায় রিটকারী আইনজীবী বশির আহমেদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন।
বশির আহমেদ আদালতে বলেন, আদালতের নির্দেশে যে ম্যুরাল স্থাপন করা হয়েছে, এ ম্যুরালের নিরাপত্তার জন্য যাতে প্রত্যেক জেলা প্রশাসক এসপিদের একটা নির্দেশ দেওয়া হয় ২৪ ঘণ্টার ভেতর এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। কুষ্টিয়ায় একটি জঘন্যতম ঘটনা ঘটে গেছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। তিনি আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সোহরওয়ার্দী উদ্যানে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত প্রকল্পে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ম্যুরাল তৈরির কার্যক্রম চলছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ৩৮০ উপজেলায় এবং ৬৩ জেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স স্থাপনপূর্বক কমপ্লেক্সেরর সম্মুখভাগে জাতির পিতার ম্যুরাল স্থাপন করেছে।
আদালত বলেন, ইতোমধ্যে ৭ মার্চকে ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। গেজেট হয়ে গেছে। জেলা উপজেলায় ম্যুরাল নির্মাণ করার কথা ছিল সরকারের। কিন্তু প্রতিবেদন যেটা দিছেন এটা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় তাদের সংসদ কার্যালয়ের সামনে করছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় করেছে। এটা ভালো কথা। আমরা এপ্রিসিয়েট করি। কিন্তু আমাদের ডাইরেকশন হলো জেলা উপজেলার হেড কোয়ার্টার্সে করা।
আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, দেশের সব জেলা-উপজেলায় হেড কোয়ার্টার্সে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের প্রকল্প রয়েছে। যদিও করোনার কারণে বিভিন্ন প্রকল্পের কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে, কিন্তু সেগুলো চলছে।
এরপর আদালত আদেশ দেন এবং এক মাসের মধ্যে অগ্রগতির প্রতিবেদন দিতে বলেন।এর মধ্যে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন করায় মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করেন আদালত।
২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক বশির আহমেদ এ রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ৭ মার্চকে কেন ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
এছাড়াও একাত্তরের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্থানে যে মঞ্চে ভাষণ দিয়েছিলেন, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল যে স্থানে, সে স্থানে মঞ্চ পুননির্মাণ কেন করা হবে না।
৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের সময় বঙ্গবন্ধুর ‘স্পিচ মোডের’ (তর্জনী উঁচিয়ে ভাষণের সময়কার ভঙ্গি) ভাস্কর্য নির্মাণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে।
সে রুলের শুনানিতে রিট আবেদনকারীর সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ ফেব্রুয়ারি মুজিববর্ষের মধ্যেই দেশের সব জেলা-উপজেলায় হেড কোয়ার্টার্সে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের নির্দেশসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেন। এর মধ্যে ৭ মার্চকে ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার বিষয়টি গেজেটে প্রকাশ করা হয়। বাংলানিউজ