Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সাতকানিয়ায় এক পশলা বৃষ্টিতেই বিপদজনক মহাসড়ক

সাতকানিয়ায় এক পশলা বৃষ্টিতেই বিপদজনক মহাসড়ক

নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়ায় এক পশলা বৃষ্টিতেই বিপদজনক হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। সড়কে জমে থেকে কাদা মাটির প্রলেপের উপর বৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে অন্তত ১০টি গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে আজ শনিবার (১৭ এপ্রিল)।

পিচ্ছিল সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে কিছু গাড়ি সড়কের উপর ঘুরে গেছে। আবার কয়েকটি গাড়ি সড়ক থেকে ছিটকে গিয়ে খাদে পড়েছে। তবে দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া এসব গাড়িতে তেমন কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আজ শনিবার সকালে বৃষ্টি হওয়ার পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়া এলাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এলাকাবাসী ও পরিবহন শ্রমিকরা জানান, আমন ধান কাটার পর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দুই পাশে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলোতে আবাদি জমির মাটি কেটে ট্রাকযোগে আনা হয়। সড়কের মৌলভীর দোকান থেকে কেরানীহাট পর্যন্ত এলাকায় দুই পাশের ইটভাটাগুলোতে প্রতিদিন কয়েকশ’ ট্রাক মাটি বহনের কাজে ব্যবহার হয়।

মৌলভীর দোকান থেকে আঁধার মা’র দরগাহ পর্যন্ত এলাকায় সড়কের পশ্চিম পাশের বিলগুলো থেকে কিছু কিছু মাটি ব্যবসায়ী স্কেভেটরের সাহায্যে ৩০-৩৫ ফুট গভীর করে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে। বিল থেকে ট্রাকযোগে এসব মাটি ইটভাটায় নেয়ার সময় কিছু কিছু কাদা মাটি সড়কের উপর পড়ে।

এছাড়া নির্মাণাধীন রেল লাইন ভরাটের মাটিও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে বহন করা হচ্ছে। রেল লাইন ভরাটের কাজে ব্যবহৃত তমা গ্রুপের মাটির ট্রাক থেকেও সড়কের উপর কাদা মাটি পড়ে।

এভাবে পড়তে পড়তে কাদা মাটির দ্বারা সড়কের বিটুমিনের উপর মাটির প্রলেপ তৈরি হয়েছে। সড়কে তৈরি হওয়া কাদা মাটির প্রলেপের উপর বৃষ্টি পড়ার সাথে সাথে পুরো সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়। আর হঠাৎ পিচ্ছিল হয়ে পড়া এ সড়ক দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়।

কেঁওচিয়ার বাসিন্দা ট্রাকচালক জামাল উদ্দিন জানান, আজ সকালে বৃষ্টির পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার আঁধার মা’র দরগাহ থেকে মৌলভীর দোকান পর্যন্ত এলাকায় ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইভেটকার সহ ১০টির বেশি গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। কয়েকটি গাড়ি সড়কের উপর ঘুরে গেছে। আবার কোনো কোনো গাড়ি সড়ক থেকে ছিটকে গিয়ে উল্টে খাদে পড়েছে।

বৃষ্টির পর পুরো সড়ক পিচ্ছিল হয়ে গেছে। সড়কের বিটুমিনের উপর থাকা কাদা মাটির প্রলেপ তুলে না নিলে আগামীতে বৃষ্টি হওয়ার পর সড়ক পিচ্ছিল হয়ে আরো বেশি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ফলে দ্রুত এসব মাটির প্রলেপ তুলে নেয়া দরকার।

সাতকানিয়া ইটভাটা মালিক সমিতির সেক্রেটারি মো. ফরিদুল আলম বলেন, “সড়কের আঁধার মা’র দরগাহ এলাকায় অতীতেও সড়ক পিচ্ছিল হয়ে বেশ কয়েকটি গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিল। এজন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের আঁধার মা’র দরগাহর পশ্চিম পাশে থাকা বিল থেকে মাটি না কাটার জন্য মাটি ব্যবসায়ীদেরকে বলা হয়েছিল। সেই বিল থেকে কেউ মাটি কাটলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য থানা ও উপজেলা প্রশাসনকে ইটভাটা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মৌখিক এবং লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। মানুষের ক্ষতি করে আমাদের ব্যবসার দরকার নাই। এছাড়া তমা গ্রুপের মাটির ট্রাকগুলো মহাসড়কের উপর দিয়ে চলাচল করে। তাদের গাড়ি থেকেও সড়কের উপর কাদা মাটি ঝরে পড়ে। এ বিষয়ে তাদেরও সতর্ক হওয়া দরকার। আমি আবারো সবাইকে অনুরোধ করব এই বিল থেকে মাটি না কাটার জন্য এবং মহাসড়ক দিয়ে মাটির গাড়ি না চালানোর জন্য।”

দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি আবদুর রব বলেন, “বৃষ্টিতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে দুর্ঘটনা হওয়ার বিষয়টি আমার জানা নাই।” আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!