নিউজ ডেক্স : টেকনাফে পাহাড় ধস ও পানির ঢলে তিন ’শিশু মারা গেছে। নিহতরা হচ্ছে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের পশ্চিমে পুরাতন পল্লান পাড়ার রবিউল আলমেরে ছেলে মেহেদী হাসান (১০), মো. আলমের মেয়ে আলিফা (৫) ও নতুন পল্লান পাড়ার আব্দুল গফুরের ছেলে আবু হারেস (১০)। এ সময় কয়েকটি পরিবারের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
কয়েকদিন ধরে ধারাবাহিক অতিবৃষ্টির কারণে আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোরে পৃথক পাহাড় ধসে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার খবর পেয়ে মর্বপ্রথম ধূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) সদস্যরা ঘটনাস্থল হতে নিহতদের উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা মাটি চাপা পড়ে আহত অন্যন্যদের উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।
এ ছাড়া মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে পিতার সামনেই পানির স্রোতে হারিয়ে যায় ১০ বছরের শিশু আবু হারেস। পিতা আব্দুল গফুরের হাত ধরে রাস্তায় বের হয় আবু হারেস। সেই সময় পানির স্রোতে রাস্তার পাশে পড়ে পানির তোড়ে ভেসে যায় শিশুটি। পরে তাকে উদ্ধার করা হলেও সে আর জীবিত ছিল না।
পাহাড় ধসে এ পর্যন্ত আহত ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ রেড ক্রিসেন্ট অফিসের কর্মকর্তা আব্দুল মতিন। তিনি জানান, সকালে পাহাড় ধসের খবর পেয়ে সিপিসি সদস্যরা ঘটনাস্থলে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়ারা হচ্ছেন পুরাতন পল্লান পাড়ার আব্দুস সালামের স্ত্রী হালিমা (৪০), মেয়ে ইসমত আরা (১৮) কলিমা (১৭), আবু শামার ছেলে ফজলু (২৯), জাফর আলমের স্ত্রী রহিমা খাতুন (২৫), মেয়ে শারমিন (৭), নাছিমা আকতার, নিহত মেহেদী হাসানের মা এলেম বাহার (২৩), ভাই সাইফুল (৬), মোহাম্মুদ হাসান। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত বেশ কয়েকজনকে কক্সবাজার জেলা সদরে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান বলেন, উপজেলা পরিষদের পেছনের পাহাড় ধসে নিহত ২ শিশু এবং পানির ঢলে অপর ১ শিশু নিহত হয়েছে।
পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরতদের ইতিমধ্যে মাইকিং করে সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতের পরিবার বাংলাদেশী বলেও জানান তিনি।
এদিকে টেকনাফের নয়াপাড়া শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ৩টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
কয়েকদিন ধরে টেকনাফে ধারাবাহিকভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত চলছে। এর জের ধরে টেকনাফের উঁচু জায়গা ছাড়া সর্বত্র পানির ঢল প্রবাহিত হতে থাকে। বিভিন্ন রাস্তা, পথ, টেকনাফ সরকারি ডিগ্রি কলেজ, নতুন পল্লান পাড়া মানারুল ফোরকান মাদ্রাসাসহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। ফলে এসব এলাকায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
টেকনাফ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গুরা মিয়া জানান, তিনিসহ নতুন পল্লান পাড়া এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহামুদ আলী জানান, অতি বৃষ্টির কারণে তার এলাকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।