Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সাতকানিয়া থেকে অপহৃত শিশু চন্দনাইশে উদ্ধার

সাতকানিয়া থেকে অপহৃত শিশু চন্দনাইশে উদ্ধার

নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়ায় থেকে এক শিশু অপহরনের সাড়ে ১১ ঘন্টা পর পার্শ্ববর্তী উপজেলা চন্দনাইশে উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃত শিশুর নাম নুর মোহাম্মদ রোহান(৪)। অপহরনের ঘটনাটি ঘটে গত ২৭ ফ্রেব্রুয়ারী বৃহষ্পতিবার বিকাল ৫টার সময় উপজেলার ছদাহা ইউনিযনের উত্তর ছদাহা উখিয়ারকুল মুন্সি পাড়া আক্তারবর বাড়ি এলাকায়। অপহৃত শিশু ওই এলাকার মাহিন্দ্রা গাড়ী চালক মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে।

একই দিন দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার সময় চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চন নগর বাদামতল রেল ষ্টেশনের পিছনে টিনসেট গ্যারেজ হতে অপহৃত শিশু রোহানকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে চন্দনাইশউপজেলার কাঞ্চন নগর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড উত্তর জোয়ারা ছৈয়দ আমীন কুলাল পাড়া এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. তৌহিদুল ইসলাম (১৭) ও নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর গাংচিল ৭নং ওয়ার্ড ফেশালীগো বাড়ী (বর্তমানে চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চন নগর মান্নান সওদাগরের বাড়ি) এলাকার মৃত মজিবুল হকের ছেলে মো. বাবুল(৩২)কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুর পিতা জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে গত ২৯ ফ্রেবুয়ারী শনিবার রাতে তৌহিদ ও বাবুলকে আসামী সাতকানিয়া থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। 

এজাহারের বিবরনে জানা যায়, গত বৃহষ্পতিবার বিকালে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ভিটায় অপহৃত শিশু রোহান ও তার বড় ভাই তোফাজ্জল হোসেন মাসুদ(১১) খেলা করার সময় আসামী তৌহিদুল ইসলাম চিপস দেয়ার কথা বলে শিশু রোহানকে অপহরন করে নিয়ে যান। পরে মাসুদ বাড়ি ফিরলে মায়ের কাছে রোহানকে তৌহিদ চাচা চিপস দেয়ার কথা বলে কোলে করে নিয়ে যান। পরবর্তীতে অপহরনকারী তৌহিদ একই দিনরাত ১০টার দিকে অপহৃত শিশুর বাবার মোবাইল ফোনে বলে-“তোমার রোহানকে অপহরন করা হয়েছে। বিশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিলে ছেড়ে দেয়া হবে।” – সিভয়েস

এ কথা শেষে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন্ করে দেয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশুর বাবা জসিম ওই বিকাশ নম্বরে ১৫ হাজার টাকা মুক্তিপন প্রদান করেন। মুক্তিপন পাওয়ার পর অপহরনকারী তৌহিদ জসিমের মোবাইলে ফোন করে বলে- শিশু রোহান চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চন নগর বাদামতল রেল ষ্টেশনে পাশে গ্যারেজে আছে বলে লাইন কেটে দেয়।

এ ব্যাপারে উদ্ধারকৃত শিশুর বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, আমার ছেলে কাঞ্চন নগর বাদামতল একটি গ্যারেজে আছে শুনে ওই এলাকার আমার মামা ইউনুচকে বিষয়টি জানালে তিনি লোকজন নিয়ে আমার ছেলে রোহানকে গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করে তার ঘরে নিয়ে আসেন। আমি মামার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তাদের খুলে বলি। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে এলাকাবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে এবং তৌহিদকে খুঁজতে থাকে।

পরের দিন ২৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার তৌহিদ তার নিজ বাড়ি এলাকায় আসলে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করে গনপিটুনি দেয় এবং স্বীকারোক্তিমতে তার সহযোগী মো. বাবুলকেও আটক করা হয়। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তাদেরকে চন্দনাইশ থানা পুলিশকে দেয়া হয়। 

এ ব্যাপারে সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম বলেন, সোমবার বিকালে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে’র আদালতে গ্রেপ্তাকৃত দুই অপহরনকারী তৌহিদ ও বাবুল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। 

সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সফিউল কবীর বলেন, মূলত মুক্তিপন আদায়ের উদ্দেশ্যে শিশু রোহানকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারী তৌহিদ বিগত ছয় মাস আগেও একটি শিশুকে অপহরণ করেছিল। তার বিরুদ্ধে মোটর সাইকেল চুরিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর বাবা বাদি হয়ে সাতকানিয়া একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করবেন থানার উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!