ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সাতকানিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি

সাতকানিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি

bonna-pic-24-07-17_1

নিউজ ডেক্স : টানা কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে পাহাড়ী ঢলে বন্যায় সাতকানিয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। শঙ্খ নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহীত হচ্ছে। এতে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পাহাড়ী ঢলে শত শত ঘরবাড়ী নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নদী ভাঙ্গনের শিকার ঘর হারা এসব মানুষ খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। গত রোববার থেকে উপজেলার নিচু গ্রামগুলো বন্যায় মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে। বন্যার পানি সাতকানিয়া আদালতের মাঠে প্রবেশ করায় আদালতের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে পৌরসভার আনুফকির দোকান এলাকায় উভয় পাশে সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্যায় উপজেলার বাজালিয়া বড়দুয়ারা মাহালিয়া রাস্তার মাথা এলাকা, দস্তিদার হাটের পূর্বে আধাকিলোমিটার সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কে রোববার সন্ধ্যা থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার বিকালে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। বান্দরবান চট্টগ্রাম সড়কে দুদিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় বান্দরবানের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় রাস্তার উভয় পাশে শত শত গাড়ী আটকা পড়েছে। এতে হাজারও যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। যাত্রীরা পানিতে ডুবে থাকা স্থানে নৌকা, ভ্যান ও রিক্সা দিয়ে পারা-পার হচ্ছে। মো. গিয়াস উদ্দিন নামের এক যাত্রী বলেন, সড়কটি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভ্যান দিয়ে পার হতে হচ্ছে। আমার মতো হাজারও মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রতিবছর বন্যা হলে মাহালিয়া এলাকায় সড়কটি ডুবে থাকে। সড়কটি উঁচু করা হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে। উপজেলার বাজালিয়া, ছদাহা, ওখিয়ারকুল, কেঁওচিয়া, তেমুহনী, জনার কেঁওচিয়া, পশ্চিম ঢেমশা, দক্ষিণ ঢেমশা, বিল্লাপাড়া, আলমগীপাড়া, সাতকানিয়া সদর ইউনিয়ন, সোনাকানিয়া, ডলুখালের পানি বেড়ে চরতী, আমিলাইষ, মরফলা, ধর্মপুর ও কালিয়াইশে বন্যায় সহ¯্রাধিক মৎস্য পজেক্ট ডুবে চাষীদের কোটি টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়া ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উত্তর ঢেমশা বাসিন্দা ইসমাইল খাদেম জানান, বন্যায় বড়–য়াপাড়া সড়ক ডুবে গেছে। এ এলাকার বাসিন্দারা নৌকা দিয়ে যাতায়ত করছে। বীজতালা পানিতে তলিয়ে গেছে।

আমিলাইষ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম হানিফ বলেন, পানির ¯্রােতে আমিলাইষের নদীর তীরবর্তী কয়েক শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। হেফাজতুর রহমান জানান, বন্যায় অনেক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি এসব মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেনা। নদীর তীরে বসবাসরত দুই শতাধিক ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। উত্তর ঢেমশা গ্রামের কৃষক সোলাইমান জানান, বন্যার পানিতে রান্নাঘর তলিয়ে যাওয়ায় ঘরে রান্না বন্ধ রয়েছে। গত রোববার রাতে পরিবারের সদস্যরা কিছু শুকনো খাবার খেয়ে কষ্টে রাত কাটিয়েছেন। এছাড়া সাপ-পোকার উপদ্রব বেড়েছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট ও গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। তেমুহনী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ভারি বর্ষণে হাঙ্গরখালের বাঁধ ভেঙ্গে বন্যায় ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছে। বন্যার পানিতে টয়লেট তলিয়ে যাওয়ায় পুরুষের চেয়ে নারীদের সমস্যা বেশি হচ্ছে।

বড়দুয়ারার বাসীন্দা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, মাহালিয়া রাস্তার মাথায় সড়ক ৩ ফুট পানিতে ডুবে রয়েছে। সড়কের উভয় পাশে আটকা পড়া গাড়ীর যাত্রীরা নৌকা, ভ্যান ও রিক্সা দিয়ে পার হচ্ছে।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, বন্যায় প্লাবিত এলাকাগুলোর খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!