এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ মে বুধবার রাত ১১টায় গর্ভবতী মহিলা সন্তান প্রসবের মুহুর্তে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে নবজাতকের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। ওই মহিলা বর্তমানে উপজেলা সদরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে। সে উপজেলা পুটিবিলা ইউনিয়নের গৌড়স্থান এলাকার দিনমজুর মহরম মিয়ার স্ত্রী মরিয়ম বেগম (২৬)।
রোগীর স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে মরিয়ম বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দেখে সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীর কাছে রেফার করে। কিন্তু ওই নার্স কোন কারণ ছাড়া রোগীর সাথে দুর্ব্যবহার করে। পরে “এখান থেকে বের হও” বলে জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়। পরে মরিয়ম বেগমের চাচী শ্বাশুড়ি আবিয়া খাতুন নিরূপায় হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বের হতেই খোলা আকাশের নিচে সন্তান প্রসব করে। সন্তান প্রসবের কয়েক মিনিটের মধ্যেই নবজাতকটি মারা যায়।তাৎক্ষনিক ভাবে রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা মরিয়ম বেগমকে উপজেলা সদরের এক বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুন অবহেলার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, গর্ভবতী মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসলে আমি সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীর কাছে প্রেরণ করি। পরবর্তীতে তার অবস্থা আশংকাজনক হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করার নির্দেশ দিই।
ঘটনাটি মুহুর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পথচারী ও এলাকাবাসী। ঘটনার সংবাদ পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন। তিনি ঘটনাস্থলে এসে নবজাতক শিশুর মাকে উপজেলা সদরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন জানান, তিনি খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় মহিলাটি হাসপাতালের মাঠে পড়ে আছে। নবজাতকের মৃত অবস্থায় দেখতে পাই। সাথে সাথে আমিসহ স্থানীয়রা মিলে উপজেলা সদরের একটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ হানিফের সাথে রাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আামাকে ফোন করে ঘটনাটি জানিয়েছেন। এই ঘটনা আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলেও তিনি জানান ।
অপরদিকে, ঘটনার পর থেকে সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরী গা ঢাকা দিয়েছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ও মুঠোফোনে তাকে পাওয়া যাচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।