Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য বড় হুমকি মানববর্জ্য

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য বড় হুমকি মানববর্জ্য

rohinga-620x330

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া : মিয়ানমারে সেনাদের নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মানববর্জ্য প্রতিনিয়তই হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে। জানা গেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্প সমূহে যত্রতত্র স্থাপন করা হচ্ছে টয়লেট। কোনো কোনো টয়লেটে কংক্রিটের রিং ব্যবহার করা হয়েছে, কোথাও হয়নি। অনেক টয়লেট থেকে অপরিষ্কার ও ময়লাযুক্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ঝুঁকিতে পড়ছেন বাসিন্দারা। তবে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা বাস্তবায়নের নানা উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। জনসংখ্যার তুলনায় এসব উদ্যোগ অপ্রতুল বলে জানা গেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খোলা টয়লেটে পানিবাহিত এবং পেটের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। আরও জানা গেছে, ‘অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটি’ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্যানিটেশন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং মন্ত্রী পরিষদ বিভাগে প্রেরণ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানার ব্যবস্থা না করা গেলে যে কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব মহামারী আকারে দেখা দিতে পারে। চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমরা যতই খাদ্য দেই না কেন, স্বাস্থ্য ভালো না রাখতে পারলে বড় সমস্যা দেখা দেবে। এ জন্য আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তাছাড়া সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের ব্যবস্থা অব্যাহত আছে।’ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মুজিবুল হক বলেন, ‘স্বাস্থ্য ভালো রাখতে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের বিকল্প নেই। সে হিসেবে রোহিঙ্গাদের জন্যও সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানার ব্যবস্থা অব্যাহত আছে। স্বাস্থ্য সম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা করা না গেলে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।’ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ আলী বলেন, ‘স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকলে পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হওয়া সম্ভাবনা আছে। কারণ উন্মুক্ত টয়লেটের মলমূত্র থেকে পানি ও মাটি দূষিত হয়। আবার দূষিত পানি খাবারের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে রোগ তৈরি করে।’ কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের জন্য প্রতিনিয়তই শৌচাগার তৈরি করা হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদিন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। তবুও স্বাস্থ্য সম্মত শৌচাগারের বিষয়টি থেকেই যায়। কারণ এত বড় একটি জনগোষ্ঠীর জন্য শৌচাগার তৈরি একটা চ্যালেঞ্জও বটে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!