Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বেঁচে থাকার নিরাশা থেকেই দুই সন্তানকে খুন ও নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করি

বেঁচে থাকার নিরাশা থেকেই দুই সন্তানকে খুন ও নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করি

নিউজ ডেক্স : নিজের হাতেই বঁটি দিয়ে দুই শিশুকে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন মা আরিফুন্নেসা পপি। ঠিক মতো স্বামী সংসার খরচ না দেয়ায় জীবনযাপনে দুর্বিষহ হয়ে ওঠায় দুই সন্তানকে হত্যার পর নিজেও শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান বলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অবজারভেশন কক্ষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি। শুক্রবার (৬ মার্চ) দিবাগত রাতে গোড়ান এলাকার ৩৭৯ নম্বর ভাড়া বাসায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

নিহত দুই শিশুর নানা আবু তালেববলেন, খিলগাঁওয়ে ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে পড়াশোনা করতো তার দুই নাতনি আলভী (১১) ও জান্নাত (৭)। আলভী চতুর্থ শ্রেণিতে ও জান্নাত জুনিয়র ওয়ানে। মেধাবী দুই শিশুর বাবা মোজাম্মেল হোসেন বিপ্লব মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় ইলেকট্রিক সামগ্রীর ব্যবসা করেন। প্রতি শুক্রবার মুন্সিগঞ্জ থেকে খিলগাঁওয়ে আসেন আবার শনিবার মুন্সিগঞ্জে চলে যান। তালেব বলেন, নাতনিদের মৃত্যুর খবর শুনে প্রথমে বাসায় ও পরে হাসপাতালে ছুটে আসি। -জাগো নিউজ

খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, মা পপিই দুই সন্তানকে খুন করে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্বামী মুন্সিগঞ্জ থাকেন। সাংসারিক খরচ দেয়া না দেয়া নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। গত রাতে দুই সন্তানকে খুন করার পর পপি সকালে নিজেই আত্মহত্যার চেষ্টার আগে তার বাবা তালেবকে জানায় খুনের কথা ও নিজে আত্মহত্যা করবেন।

তিনি আরও বলেন, কেন এই খুন এবং এই খুনের নেপথ্যে আরও কেউ জড়িত কিংবা অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না- তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অবজারভেশন কক্ষে মা পপি বলেন, গত রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ঘুমন্ত দুই শিশু জান্নাত ও আলভীকে হত্যার পরিকল্পনা করি। প্রথমে আগুনে পুড়িয়ে ও পরে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করি।

মা হয়ে কেন এমন রোমহর্ষক হত্যার ঘটনা ঘটালেন জানতে চাইলে পপি বলেন, সন্তানদের লেখাপড়া করাতে পারছিলাম না। সংসার চালানো যাচ্ছিল না। স্বামী সংসার খরচ দিতো মাত্র ১ হাজার ১০০ টাকা। ওই টাকায় কিছুই করা যাচ্ছিল না। এ নিয়ে হতাশা, বেঁচে থাকার নিরাশা থেকেই দুই সন্তানকে খুন ও নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিচারে এখানে বাইরে থেকে কেউ খুন করতে আসেনি বলে বোঝা যাচ্ছে। সুরতহালে দুই শিশুর শরীরে পোড়া ও গলাকাটা দেখা গেছে। রক্তমাখা বঁটি জব্দ করা হয়েছে। মা পপিও দগ্ধ হয়েছেন। তাকে ঢামেকে পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!