Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই

বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই

image-6332-1543633347

নিউজ ডেক্স : বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। তার ছেলে আবু তাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বীরপ্রতীক তারামন বিবি দীর্ঘদিন থেকে ফুসফুস ও শ্বাস-প্রশ্বাস রোগের ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। তিনি স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বীর প্রতীক তারামন বিবিকে আজ দুপুর ২টায় জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

বীরপ্রতীক তারামন বিবির বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজীবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে। বাবার নাম আবদুস সোহবান এবং মাম কুলসুম বিবি। তার স্বামীর নাম আবদুল মজিদ। তাদের এক ছেলে এক মেয়ে।

জানা যায়, ১৯৭১ সালে তারামন বিবি ১১নং সেক্টরে নিজ গ্রামে ছিলেন। তখন ১১নং সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। মুহিব হাবিলদার নামে এক মুক্তিযোদ্ধা তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য উৎসাহিত করেন। যিনি তারামনের গ্রামের পাশের একটি ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি তারামনকে ক্যাম্পে রান্নাবান্নার জন্য নিয়ে আসেন। তখন তারামনের বয়স ছিল মাত্র ১৩ কিংবা ১৪ বছর। পরবর্তীতে তারামনের সাহস ও শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালনা শেখান।

একদিন দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় তারামন ও তার সহযোদ্ধারা জানতে পারেন পাকবাহিনীর একটি গানবোট তাদের দিকে আসছে। তারামন তার সহযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধে অংশ নেন এবং তারা শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম হন। এরপর তারামন অনেক সম্মুখযুদ্ধে পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অংশ নেন। অনেকবার তাদের ক্যাম্প পাকবাহিনী আক্রমণ করেছে, তবে ভাগ্যের জোরে তিনি প্রতিবার বেঁচে যান।

যুদ্ধ শেষে ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবিকে তার সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য “বীরপ্রতীক” উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহের একজন গবেষক প্রথম তাকে খুঁজে বের করেন। নারী সংগঠনগুলো তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সেই সময় তাকে নিয়ে পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়। অবশেষে ১৯৯৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার এক অনাড়ম্বর পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তারামন বিবিকে বীরত্বের পুরস্কার তার হাতে তুলে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!