নিউজ ডেক্স : ট্রেন চালানোর সাথে জড়িত লোকোমাস্টার (ট্রেন চালক), গার্ড এবং টিটিইরা আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন। মাইলেজ ভাতা আগের নিয়মে বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলনে গত কয়েক মাস ধরে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে আসছে ট্রেনের রানিং স্টাফরা। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফদের (লাকোমাস্টার, গার্ড এবং টিটিই) মাইলেজ জটিলতার বিষয়টি নিরসন না হলে এবং এই সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা না হলে ৩০ জানুয়ারি রাত ১২টা ১ মিনিট (৩১ জানুয়ারি) থেকে ট্রেন না চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদারকে দেওয়া চিঠিতে রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও কর্মচারী শ্রমিক সমিতি তাদের এই কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন। একই সাথে তাদের কর্ম বিরতির বিষয়টি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম, জিআরএম, যান্ত্রিক প্রকৌশলী, পরিবহন কর্মকর্তা ও বাণিজ্যিক কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন সকল কর্মকর্তাদেরকেও জানিয়েছেন বলে জানান বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক–কর্মচারী সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান ভূইয়া। এই ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক–কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান ভূইয়া আজাদীকে জানান, ১৬০ বছর ধরে রেলের রানিং স্টাফরা মাইলেজ ভাতা পাচ্ছেন। রেলের সংস্থাপন কোড অনুযায়ী, রানিং স্টাফরা দিনে আট ঘণ্টার বেশি দায়িত্ব পালন করলে বা ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা মাইলেজ বা রানিং ভাতা হিসেবে পেয়ে আসছেন। জনবল সঙ্কটের কারণে চালক, গার্ড ও টিটিইদের দৈনিক কর্মঘণ্টা ১২ ঘণ্টা। কিন্তু দিনে ১৫–১৬ ঘণ্টাও কাজ করতে হয়।
তিনি আরও জানান, গত বছরের ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে জানায়, মাইলেজ ভাতা মূল বেতনের অংশ হিসেবে গণ্য হবে না। তা পেনশনেও যোগ হবে না। ভাতার পরিমাণ মাসিক মূল বেতনের বেশি হতে পারবে না। মাইলেজ বেতন বাজেট থেকে আলাদা করে টিএ খাতে সংযুক্ত করা হয়। টিএ খাতে অর্থের বরাদ্দ কম থাকায় মাইলেজ নিয়ে সৃষ্টি হয় নানা জটিলতা। পরে জটিলতা নিরসনে ‘মাইলেজ ভাতা’ নামে আলাদা কোড খোলা হয়। যেখানে আইবাস প্লাস সিস্টেমে রানিং কর্মচারীদের অর্জিত মাইলেজ সর্বোচ্চ ৩ হাজার মাইল বা ৩০ দিনের বেশি হতে পারবে না বলে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। অথচ রানিং স্টাফরা মাসে ছয়–সাত হাজার কিলোমিটার ট্রেন চালান। এরপর থেকে রানিং স্টাফদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। গত ১৪ মাস ধরে আমরা রানিং স্টাফরা মাইলেজ ভাতা আগের মতোই বহাল রাখার দাবি জানিয়ে আসলেও তার কোন সমাধান হয়নি। তাই আমাদের দাবি পূরণ না হলে আগামী ৩০ জানুয়ারি রাত ১২টার পর থেকে ট্রেন না চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এই ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের মাইলেজের বিষয়টি আমাদের মন্ত্রী মহোদয় (রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন) প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করেছেন। এখন আমাদের রেল মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব বসে বিষয়টি আলাপ–আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবেন। এখন কথায়–কথায় কর্ম বিরতির ঘোষণা দিলে তো হবে না। এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। ধৈর্য্য ধরতে হবে। তাদের বিষয়টি নিয়ে তো আলোচনা চলছে। -আজাদী প্রতিবেদন