নিউজ ডেক্স : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আজ রোববার দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৬টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে বিভিন্ন কারণে আনোয়ারা ও লোহাগাড়ায় ভোট হচ্ছে না। বাকি চার উপজেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের লড়তে হচ্ছে তাদেরই ছায়ার (বিদ্রোহী) সঙ্গে। এ লড়াইয়ের উত্তাপও কম নয়। আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের দ্বন্দ্বে নির্বাচনী মাঠে ইতোমধ্যেই উত্তাপ ছড়িয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, তাদের কয়েকজনের কাছ থেকে জোর করে প্রত্যাহারপত্রে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় প্রচার-প্রচারণায় বাধা প্রদানের অভিযোগও ছিল উল্লেখ করার মত। সর্বশেষ শনিবার (২৩ মার্চ) চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে উপজেলার খান হাট এলাকায় একটি নির্বাচনী গোপন বৈঠকে হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এসবের মাঝেই রোববার দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৪টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল আটটায় শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, আজ ভোট হচ্ছে বোয়ালখালী, পটিয়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী উপজেলায়। চার উপজেলায় ১২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ২৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চার উপজেলায় ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকবেন ৩৬৮ জন প্রিসাইডিং, ২ হাজার ৪৯৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং ও ৪ হাজার ৯৯৪ জন পোলিং কর্মকর্তা।
পটিয়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। কিন্তু তার বিরুদ্ধে দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাজ্জাত হোসেন।
নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পরপরই ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাত হোসেন অভিযোগ করেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা তাকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে চাপ দিচ্ছেন। এজন্য তার কাছ থেকে জোর করে প্রত্যাহারপত্রে সই নেয়া হয়েছে। অবশ্য রিটার্নিং অফিসার পরে নিশ্চিত করেন, ওই প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়নি।
মাঠের সর্বশেষ পরিস্থিতি বলছে, তিন উপজেলায় নৌকা প্রার্থীর সঙ্গে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এসব উপজেলাগুলো হলো বোয়ালখালী, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী।
বোয়ালখালীতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম। তার সঙ্গে আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন। এখানে জমজমাট লড়াইয়ের আভাস মিলছে।
চন্দনাইশে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন এ কে এম নাজিম উদ্দীন। তার সঙ্গে দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে লড়ছেন এলডিপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়া বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী।
এ ছাড়া বাঁশখালীতে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সোলতানুল কবির চৌধুরীর বড় ছেলে চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী। আনারস প্রতীক নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম।
চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান জানান, অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে নেমেছে বিজিবি, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।
সূত্র : জাগোনিউজ