Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চেনা সাহেদ এখন সবার কাছে অচেনা!

চেনা সাহেদ এখন সবার কাছে অচেনা!

নিউজ ডেক্স : ‘বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী গুণধর’ সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদের পাশে এখন কেউ নেই! একাধারে তিনি ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও জাতীয় দৈনিকের সম্পাদক, আরও কত কী পরিচয় তার। সবার সাথেই তার চেনাজানা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকজুড়ে ভিভিআইপি, ভিআইপি, সমাজে প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী লোকজনের সঙ্গে তার ফটোগ্রাফির ছড়াছড়ি। কোথাও হাস্যোজ্জ্বল, কোথাও খোশগল্পে মশগুল আবার কোথাও বা সেলফিরত অবস্থায় তাকে দেখা গেছে। মন্ত্রী-এমপিসহ রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক নেতা, সম্পাদক ও টেলিভিশন চ্যানেলের মালিকসহ সবার সাথেই তার দহরম-মহরম সম্পর্ক!

স্যুটেড-বুটেড হয়ে তিনি টেলিভিশনের টকশোতে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলতেন। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর তিনি স্বপ্রণোদিত হয়েই রাজধানীর মিরপুর ও উত্তরায় তার মালিকানাধীন রিজেন্ট হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। হাসপাতালে করোনো রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করেছিলেন। তার হাসপাতালে গুণগান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ স্ট্যাটাস দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু করোনা চিকিৎসার নামে তিনি যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন তা ছিল সবার অজানা।

গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় পরিচালিত র‍্যাবের অভিযানে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে। তিনি গত কয়েক বছর যাবৎ লাইসেন্স নবায়ন না করে হাসপাতাল পরিচালনা করে আসছিলেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি অনুসারে উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতালে শুধু ভর্তি রোগীদের বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা করার অনুমতি থাকলেও বিভিন্ন স্থানে লোকজন পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা না করেই সরকারি বিভিন্ন ল্যাবরেটরীতে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে- মর্মে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে লাখ লাক টাকা হাতিয়ে নেয়। নানা প্রতারণার দায়ে সাহেদ করিমকে এক নম্বর আসামি করে ১৭ জনের নামে উত্তরা পশ্চিম থানায় র‌্যাব মামলা দায়ের করে। বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) সকালে রিজেন্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা তারেক শিবলীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

এতদিন সাহেদ করিম সবার কাছে পরিচিত মুখ হলেও হঠাৎ করে যেন অচেনা হয়ে উঠেছেন। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টকশোতে তিনি ক্ষমতাসীন দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপকমিটির সদস্য পরিচয়ে কথা বললেও তার কুকীর্তি ধরা পড়ার পর ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা সাহেদ করিম তাদের দলের কেউ নন বা কোনো পদে নেই বলে বিবৃতি দিচ্ছেন। কেউ কেউ তাকে বিএনপির এজেন্ট, দলবদলে মুজিব কোট গায়ে নেতা সেজেছেন বলে ধিক্কার দিচ্ছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যাপারে যে সমস্ত চুক্তি করেছিল তা বাতিল করেছে। সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমালোচনা করে বলছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত স্পর্শকাতর রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান করার জন্য মনোনীত হাসপাতালটির বৈধ অনুমোদন রয়েছে কিনা, দক্ষ জনবল ঘাটতি আছে কিনা ইত্যাদি খতিয়ে না দেখে কীভাবে তারা চুক্তি করল তা খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। র‍্যাবের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, সাহেদ করিমকে দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। জাগো নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!