Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইনের দুইপাশে লাগানো হবে ৭ লাখ গাছের চারা

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইনের দুইপাশে লাগানো হবে ৭ লাখ গাছের চারা

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইনের দুইপাশ জুড়ে ৭ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করেছে রেলওয়ে। রেল লাইনের যেসব স্থানে সবুজ প্রকৃতি বা গাছ নেই সেসব জায়গায় এসব গাছ লাগানো হবে প্রকল্পের অধীনে। বলতে গেলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পুরো রেল ভ্রমণটাই হবে আনন্দময়-ক্লান্তিহীন-প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের। ইতোমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় গাছ লাগানো হয়েছে। বড়ও হয়েছে কিছু কিছু।

মূলত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেল লাইনের যেসব স্থানে সবুজ প্রকৃতি নেই (সমতল ভূমি) সেসব এলাকায় রেল লাইনের দুইপাশে ৭ লাখ গাছ লাগানো হচ্ছে। ফলে পুরো রেল লাইন জুড়েই থাকবে সবুজের সমারোহ। এর মধ্যে গত বর্ষায় বেশ কিছু এলাকায় রেল লাইনের দুইপাশে গাছ লাগানো হয়েছে। আগামী বর্ষায়ও লাগানো হবে বলে জানান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন ভ্রমণে কালুরঘাট সেতু পার হলেই যাত্রীরা উপভোগ করবেন বোয়ালখালীর শান্ত-শ্যামল গ্রামগুলো। এরপর পটিয়া এবং চন্দনাইশের বিশাল সবুজ পাহাড়ের পাশ ঘেঁষে অতিক্রম করবে সাতকানিয়া। এরপর থেকে পুরো ট্রেন যাবে সবুজে ঘেরা পাহাড়-টিলা আর অভয়ারণ্যের ভেতর দিয়ে। তবে এমন আনন্দময় ভ্রমণের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো প্রায় এক বছর। কারণ আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ে নতুন রেলপথ চালুর পরিকল্পনা আছে সরকারের।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে পর্যটকবাহী ট্রেনের পাশাপাশি আরো ছয় জোড়া লোকাল ট্রেনও চলবে বলে জানা গেছে। এসব ট্রেন পথে দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু এবং কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশন সবমিলিয়ে নয়টি স্টেশনে থামবে। নান্দনিকভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে রেলওয়ে স্টেশনসহ প্লাটফর্মগুলো। ইতোমধ্যে কাজ অনেকটা এগিয়েছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ এগিয়েছে ৬৭ শতাংশ। এরই মধ্যে পুরোপুরি শেষ হয়েছে কক্সবাজার অংশ থেকে চট্টগ্রামের দিকের ২৫ কিলোমিটার রেলট্র্যাক বসানোর কাজ। এছাড়াও আইকনিক স্টেশন, ছোট-বড় সেতু, কালভার্ট, লেভেল ক্রসিং ও হাইওয়ে ক্রসিংয়ের কাজও চরছে পুরোদমে।

দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মাণাধীন রেলপথের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কক্সবাজারের রেলস্টেশনটি। পুরো স্টেশনটি গড়ে উঠছে ২৯ একর জমির ওপর। আইকনিক স্টেশন ভবনটি ১ লাখ ৮৭ হাজার বর্গফুটের। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার প্রায় সবই থাকছে স্টেশনটিতে। স্টেশনটি হচ্ছে কক্সবাজার সদর উজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চাঁন্দেরপাড়া এলাকায়। এরমধ্যে ছয়তলা স্টেশন ভবনের মূল কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। দিনে-রাতে কমবেশি ৫ শতাধিক শ্রমিক-কর্মকর্তা-প্রকৌশলী নিয়োজিত রয়েছে এর নির্মাণকাজে। স্টেশন ভবন ছাড়াও এখানে আরো ১৭টি স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে যা ব্যবহার করা হবে রেলওয়ের পরিচালনা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে।

শুধু কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনটি নির্মাণ করতেই ২১৫ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রেলের কর্মকর্তারা। কেন্দ্রীয়ভাবে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত স্টেশনটিতে যাত্রী প্রবেশ ও বের হওয়ার জন্য রাখা হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন পথ। থাকছে গাড়ি পার্কিংয়ের বড় জায়গা। আইকনিক রেলস্টেশনটিতে থাকছে তারকা মানের হোটেল, শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, শিশু যত্ন কেন্দ্র। থাকছে লকার বা লাগেজ রাখার স্থান। রাতের ট্রেন ধরে সকালে কক্সবাজারে গিয়ে পর্যটকেরা লাগেজ, মালামাল স্টেশনে রাখতে পারবে। আর সারাদিন সমুদ্রসৈকত বা দর্শনীয় স্থান ঘুরে রাতের ট্রেনে আবার ফিরতে পারবে নিজ গন্তব্যে। -আজাদী প্রতিবেদন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!