Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রামে ৮৬ বালুমহালের ৩৪টি ইজারা : লোহাগাড়ায় ৫টি

চট্টগ্রামে ৮৬ বালুমহালের ৩৪টি ইজারা : লোহাগাড়ায় ৫টি

(ফাইল ছবি)

(ফাইল ছবি)

নিউজ ডেক্স : বালুগ্রাসীদের কবল থেকে মুক্ত করা যাচ্ছে না চট্টগ্রামের বালুমহালগুলো। প্রভাবশালী মহল বছরের পর বছর অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে বালুমহালগুলো। ইজারা না নিয়ে লুটেপুটে খাচ্ছে সিংহভাগ মহাল। এতে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত চট্টগ্রামে ইজারাযোগ্য বালুমহাল ছিল ৯৮টি। চলতি বছর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদী থেকে বালুমহাল বিলুপ্তি ঘোষণা করেছেন বিভাগীয় কমিশনার। ৮৬টি বালুমহালের ইজারার দরপত্র আহ্বান করে জেলা প্রশাসন। এর বিপরীতে ৩৪টি বালুমহালের ইজারার কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে কর্ণফুলী নদীর রাউজানের বালুমহাল উচ্চ আদালতের নির্দেশে এক মাসের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। প্রতি মৌসুমে বালুমহাল ইজারার সংখ্যা কমে আসছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমের জন্য এ পর্যন্ত যে ৩৪টি মহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে এরমধ্যে রয়েছে রাঙ্গুনিয়ায় ৭টি, ফটিকছড়িতে ৯টি, লোহাগাড়ায় ৫টি, রাউজানে ১টি, মিরসরাইয়ে ৩টি, চন্দনাইশে ২টি, হাটহাজারীতে ১টি, বাঁশখালীতে ২টি, চন্দনাইশে ২টি, পটিয়ায় ৩টি, সাতকানিয়ায় ২টি।

১ বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) থেকে ৩০ চৈত্র (১৩ এপ্রিল ১৮) পর্যন্ত এক বছরের জন্য বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে দুই দফায় টেন্ডার প্রক্রিয়াশেষে ইজারার কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। চলতি মাসে আরও এক দফায় ইজারা তারিখ ধার্য্য রয়েছে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বালুখেকোরা একটি মহাল ইজারা নিয়ে একাধিক মহাল থেকে বালু উত্তোলনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবার বিভিন্ন স্থানে সরকারি দলের প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা জড়িত। এতে নতুন করে কেউ ইজারায় অংশ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীরা বালুমহালগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে। এতে ইজারা না নিয়েই বালু উত্তোলনে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে প্রভাবশালীমহল। এসব কারণে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

জানা যায়, এক শ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি নদ-নদী-খাল দখল করে বছরের পর বছর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। প্রতিবছর সিন্ডিকেট করে সরকারি মূল্যের নিচে দর ও মামলার মারপ্যাঁচে ইজারা প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। এরপর প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে বা ম্যানেজ করে ইজারা ছাড়াই অবাধে বালু উত্তোলন করে এসব ‘বালুদস্যুরা’।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ৬ বছর ধরে বালুমহাল থেকে রাজস্ব বাড়ানোর চেষ্টা করেও সফল হওয়া যাচ্ছে না। সি-িকেটের কবলে আটকে গেছে বালুমহালগুলো। সরকারি দরের চেয়ে দরপত্রে কম দর দেয়ার কারণে অনেক মহাল ইজারা দেয়া সম্ভব হয় না।

অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে বালুমহালের ইজারা বাড়ানো যাচ্ছে না। বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বালুমহাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসলেও স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে। প্রশাসনের দুর্বলতার কারণে ইজারা না নিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বেড়ে চলেছে। উপজেলা প্রশাসনের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে বালুখেকোদের যোগসাজশের কারণে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বাড়ছে।

দেখা যায়, প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট তালিকায় থাকা অনেক বালুমহালে বালু নেই। আবার কর্ণফুলী নদীসহ বিভিন্ন খালের মোহনায় নতুন চর জেগে উঠছে। জেগে উঠা এসব চর থেকে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করা হলেও সেগুলো প্রশাসনের তালিকায় নেই। স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির কারণে জেগেওঠা চরগুলো সরকারি নথিভুক্ত হচ্ছে না।

সূত্র : দৈনিক পূর্বকোণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!