ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | গোলপাহাড় থেকে নেভালে গেল কীভাবে তাসফিয়া

গোলপাহাড় থেকে নেভালে গেল কীভাবে তাসফিয়া

Page-1_03-392x525

নিউজ ডেক্স : বাসা থেকে বের হবার পনেরো ঘণ্টার মাথায় স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনের লাশ পাওয়া গেছে পতেঙ্গা কর্ণফুলী তীরের নেভালে। আদনান নামে এক বন্ধুর সাথে গত মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় ও.আর. নিজাম আবাসিক এলাকার বাসা থেকে বের হয় তাসফিয়া। গতকাল বুধবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাসফিয়ার বাবা আমিন সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এলিমেন্টারি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র আদনানকে আটক করেছে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। আদনান খুলশী থানাধীন জালালাবাদ হাউজিং আবাসিক এলাকার ইস্কান্দর মির্জার ছেলে।

পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, তাসফিয়া ও.আর নিজাম আবাসিক এলাকার তিন নম্বর রোডের কে.আর.এস ভবনে মা-বাবার সাথে থাকে। তাদের নিজ বাড়ি টেকনাফ থানার ডেইল পাড়ার কালা মোহাম্মদ আলি বাড়ি। নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির এক নম্বর সড়কে অবস্থিত সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণীতে পড়ে তাসফিয়া। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বাসা থেকে বের হয়ে রাত আটটার পরও না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুজি করে। গতকাল বুধবার সকালে নদীর পাড়ে পাথরের উপর উপোড় হয়ে পড়ে থাকা লাশের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়ে তাসফিয়ার পরিচয় নিশ্চিত করে। পুলিশ জানিয়েছে- তাসফিয়ার নাক দিয়ে সাদা ফেনা বের হয়েছে। কপাল, মুখম-ল, থুতনীতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মুখ রক্তমাখা ছিলো।

কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহেদুল ইসলাম জানান, বাসা থেকে বের হবার পর তাসফিয়া ও তার বন্ধু আদনান প্রবর্তক মোড়ে চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাসফিয়া পতেঙ্গার নেভালে কিভাবে গেলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এসি জাহেদ জানান, জিঙ্গাসাবাদের জন্য বন্ধু আদনানকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। চায়না গ্রিলের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় দেখা যায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে তারা রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে।

রেস্টুরেন্টের কয়েকজন ওয়েটার জানান, তারা দুজনে দুই পিস কেক ও দুটি আইসক্রিম অর্ডার করেন। আইসক্রিম খেলেও কেক না খেয়ে ৬টা ৩৭ মিনিটে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে আলাদাভাবে দুটি সিএনজি ট্যাক্সিতে দু’জন উঠে জিইসির মোড়ের দিকে চলে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আদনান ও তাসফিয়া সানসাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণীতে পড়তো। সম্প্রতি সানসাইন থেকে এম.এম আলী রোডের এলিমেন্টারি স্কুলে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে আদনান।

পুলিশের প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে আদনান জানিয়েছে, একমাস আগে তাসফিয়ার সাথে তার পরিচয় হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বাসা থেকে বের হয়ে দু’জনে প্রথমে সিআরবিতে ঘুরতে যায়। সেখান থেকে স্টেডিয়ামের গ্রিডি গার্ডস রেস্টুরেন্টে যায়। সেখানে খালি না পেয়ে দু’জনে দুই নম্বর গেট আফগান রেস্টুরেন্ট এবং ওক এন্ড রোল রেস্টুরেন্টে যায়। কোথাও খালি না পেয়ে পরে প্রবর্তক মোড়ের চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্ট যায়।

আদনানের দাবি, চায়না গ্রিলে কিছুক্ষণ বসার পর এক বন্ধু ফোন করে জানায় তাসফিয়াকে বাসায় খুঁজছে। নাস্তা অর্ধেক খাওয়া অবস্থায় বের হয়ে তাসফিয়াকে একটি সিএনজি ট্যাক্সিতে তুলে দিয়ে অন্য একটি ট্যাক্সিতে উঠে জালালাবাদের বাসায় চলে যায় সে। তাসফিয়ার মায়ের ফোন পেয়ে রাত বারোটা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে তাসফিয়াকে তারা খোঁজাখুজি করে।

এসি জাহেদুল ইসলাম জানান, চায়না গ্রিল থেকে বের হয়ে তাসফিয়া নেভাল পর্যন্ত কার সাথে গিয়েছে তা জানা গেলে মৃত্যুর রহস্য উন্মোচিত হবে এমনটি আশা করছি।

সূত্র : দৈনিক পূর্বকোণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!