Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চট্টগ্রামে বস্তিবাসীদের জন্য তিন হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ

চট্টগ্রামে বস্তিবাসীদের জন্য তিন হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ

(ফাইল ছবি)

(ফাইল ছবি)

নিউজ ডেক্স : বস্তিবাসীদের জন্য চট্টগ্রামে প্রায় তিন হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এই ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে। গতকাল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বাকলিয়া এলাকায় প্রকল্পের সাইট পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বলেছেন, অচিরেই আমরা কাজ শুরু করবো। চৌদ্দ তলা উচ্চতার বারোটি টাওয়ারে মাসিক মাত্র এক হাজার টাকা ভাড়ায় আমরা বস্তীবাসীদের পুনর্বাসন করবো।

প্রসঙ্গত, সবার জন্য বাসস্থান শীর্ষক বড় ধরণের একটি প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে সরকার। এর আওতায় ইতোমধ্যে ঢাকায় কয়েক হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামেও এ প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রানাধীন জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপ এই ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে।

বাকলিয়া এলাকায় নদীর পাড়ে জেগে উঠা প্রায় ১৩ একর জমি প্রাথমিকভাবে এর জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এই জমির উপরই প্রতিটি ১৪ তলা করে ১২টি টাওয়ার নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতি ফ্লোরে ১৬টি করে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। প্রতি ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ৮০০ বর্গফুট। এতে দুইটি বেড রুম, ডয়িং রুম এবং একটি কিচেন থাকবে। প্রাথমিকভাবে ১২টি টাওয়ারে ২,৬৮৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করে প্রতিটি ফ্ল্যাট একটি পরিবারের নিকট ভাড়া দেয়া হবে। এই ফ্ল্যাটের জন্য উক্ত পরিবারকে মাসিক মাত্র এক হাজার টাকা ভাড়া পরিশোধ করতে হবে। মাসিক ভাড়া এককালীনের পাশাপাশি কেউ যদি মনে করে বিভিন্ন তারিখে বিভিন্ন অংকে পরিশোধ করবে তারও ব্যবস্থা থাকবে।

সাধারণত, বস্তিবাসী সাধারণ একজন মানুষ একশ’ থেকে দুইশ’ বর্গফুটের একটি কাঁচা ঘরে বসবাসের জন্য মাসে সাড়ে তিন হাজার টাকারও বেশি অর্থ প্রদান করেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বস্তিবাসী টাকা দিলেও গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয় অবৈধভাবে। বস্তিগুলোর নিয়ন্ত্রক চক্র এসব টাকা হাতিয়ে নেয়।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, ‘একশ’ থেকে দুইশ বর্গফুটের একটি কাঁচাঘরের ভাড়া, বিদ্যুৎ গ্যাস ও পানি মিলে গড়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। অথচ নগরীতে ১৩শ’ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের ভাড়া ১৫/১৬ হাজার টাকা। বস্তিবাসীদের অনেক বেশি ভাড়া পরিশোধ করেই বসবাস করতে হয়। তাছাড়া তাদের গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ কিনতেও বেশি অর্থ দিতে হয়। এ টাকার বেশিরভাগই সংঘবদ্ধ চক্র খেয়ে ফেলে।’ মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত বিভিন্ন বস্তির বাসিন্দাদের বহুতল ভবন নির্মাণ করে পুনর্বাসনের যেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে তাদের সার্বিক জীবনযাত্রায় বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। বহুতল ফ্ল্যাটগুলোতে বাসিন্দাদের উন্নত ও পরিছন্ন জীবন যাপনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হবে। এসব ভবনে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং, এসটিপি, সোলার প্যানেলসহ সকল সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া প্রকল্পগুলোতে বসবাসকারীদের জন্য ওয়াটার বডি, আধুনিক ব্যায়ামাগার, বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, মসজিদ, মন্দিরসহ সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা থাকবে।

শুরুতে বাকলিয়া এলাকায় তের একর ভূমিতে বারোটি টাওয়ার নির্মাণ করা হলেও ক্রমান্বয়ে আরো কয়েকটি এলাকায় একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। নগরীর সকল বস্তিবাসীকে একটি উন্নত জীবন ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলেও মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানান।

সূত্র : দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!