ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | খুচরা বাজারে মোটা চালের দাম কমেছে

খুচরা বাজারে মোটা চালের দাম কমেছে

1506133650
নিউজ ডেক্স : পাইকারি বাজারের পর এবার খুচরাতেও চালের দাম কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে মোটা চালের দাম কমেছে সবচেয়ে বেশি। চারদিন আগে ৫০ থেকে ৫২ টাকা কেজির নিচে কোনো মোটা চাল পাওয়া না গেলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকায়। তবে সরু চাল নাজিরশাইল ও মিনিকেটের দাম কমেছে সামান্যই। অবশ্য ইতোমধ্যে মোকামে মিনিকেট চালের দাম কমেছে কেজিতে ২ টাকা। যার প্রভাব খুচরা বাজারে এখনো পড়েনি।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেছেন, মোকামে অর্ডার দেওয়া নতুন চাল এখনো খুচরা বাজারে সেভাবে আসেনি। এ ছাড়া খুচরা ব্যবসায়ীরা তাদের আগে বেশি দামে কেনা চাল বিক্রি করছেন। ফলে মোকামে ও পাইকারি বাজারে চালের দাম কমার উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে খুচরা বাজারে সব ধরনের চালে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা কমে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ্য, গত বোরো মৌসুমে অকাল বন্যায় হাওর অঞ্চলে বোরো ফসল ক্ষতির পর থেকেই লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকে চালের দাম। সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসেবেই গত এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক  ৯৫ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ। একটি সিন্ডিকেট কারসাজি করে চালের দাম বাড়ায় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে বৈঠক করে সরকারের খাদ্য, বাণিজ্য ও কৃষিমন্ত্রী। বৈঠকের পর চালের দাম কমানোর আশ্বাস দেন ব্যবসায়ীরা। তবে এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী চাল আমদানিতে পাটের পরিবর্তে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহার মেনে নেওয়া হয়। এরপর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করেছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটা ইরি/স্বর্ণা ৪৮ টাকা, পাইজাম/লতা ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৩ টাকা ও নাজিরশাইল ৬৭ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। যা চারদিনের ব্যবধানে কেজিতে চালভেদে ১ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত কম।
কাওরান বাজারের মুক্তা রাইস এজেন্সির মো. শাহজাহান বলেন, সরকারের সাথে ব্যবসায়ীদের বৈঠকের পর থেকেই চালের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে ভারত থেকে আমদানি করা চালের। কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এ ছাড়া সরু চালের দাম বস্তা প্রতি (৫০ কেজি) ৩০ থেকে ৪০ টাকা কমেছে। বি. বাড়িয়া রাইস এজেন্সির নিজামউদ্দিন বলেন, ভারতের এলসির চালের দাম যেভাবে কমেছে অন্যান্য চালের দাম সেভাবে কমেনি। এ বাজারের বাদশা রাইচ এজেন্সির নূর হোসেন বলেন, বাজারের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছিল ভারত থেকে চাল রপ্তানি বন্ধের গুজব। তিনি বলেন, গুজবের ফলে অনেক মিল মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ী চালের অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। সেসময় বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তখন চালের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছিল। তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। তিনি বলেন, গতকাল নওগাঁর মোকাম থেকে মিনিকেট এসেছে। প্রতি বস্তা মিনিকেট ১০০ টাকা কমে ৩ হাজার টাকা পড়েছে। এ হিসেবে এ চাল আগের দামের চেয়ে কেজিতে ২ টাকা কমে বিক্রি করা হবে।
সম্প্রতি সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, চালের বাজার স্বাভাবিক হয়ে যাবে। নভেম্বরের শেষ ও ডিসেম্বরের প্রথমে নতুন ফসল উঠবে। কাজেই চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
চাটমোহর (পাবনা) সংবাদদাতা জানান, চাটমোহরে খোলাবাজারে (ওএমএস) চাল বিক্রি শুরু হলেও চালের দাম এখনো খুব একটা কমেনি। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, গত সপ্তাহের চেয়ে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২/৩ টাকা কমেছে। এ দিকে এখনো ইউনিয়ন পর্যায়ে ওএমএস-এর চাল বিক্রি শুরু না হওয়ায় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষদের দুর্ভোগ বেড়েছে। উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথর গ্রাম থেকে চাল কিনতে আসা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘বাজারে ৫০-৬০ টাকা কেজি চালের দাম। এতো টাকায় কেনার ক্ষমতা নেই আমাদের। তাই লাইন ধরে হলেও এখান থেকে (ডিলারের দোকান) চাল কিনতে হবে।’
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা জানান,  রায়পুর উপজেলায় অবৈধভাবে চাল মজুত, ওজনে কম দেওয়া, বেশি দামে বিক্রিসহ বিভিন্ন অভিযোগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের চালের আড়তগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় মূল্য তালিকা ও লাইসেন্স না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মে আলমের চালের আড়তকে ৫ হাজার ও কালু মিয়ার চালের আড়তকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়াও আরো কয়েকটি আড়তকে সর্তক করে দেওয়া হয়েছে। -ইত্তেফাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!