ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | খালেদা জিয়ার নতুন চিকিৎসায় জটিলতা

খালেদা জিয়ার নতুন চিকিৎসায় জটিলতা

image-98916

নিউজ ডেক্স : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তির দুই দিনেও তার নতুন কোনো চিকিৎসা শুরু করা যায়নি। মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, নতুন কোনো ওষুধ বা চিকিৎসা ৭৩ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিতে পারবে কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আবার এই বিষয়টি নিশ্চিত হতে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে, যার জন্য আবার কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন ব্লকের একটি কক্ষে আছেন খালেদা জিয়া। তার চিকিৎসায় গঠন করা বোর্ডের প্রধান এম এ জলিল চৌধুরী জানান, মূল চিকিৎসা শুরু হতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। তার আগ পর্যন্ত পুরনো ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ীই চলবে চিকিৎসা। তবে ফিজিওথেরাপি আরও উন্নততর হবে।

চিকিৎসক জলিল, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দেয়ার আগে বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখতে হবে। এই মুহূর্তে তাঁর ওষুধ গ্রহণের ক্ষমতা কতখানি এবং শরীরে কোনো সংক্রমণ আছে কি না। সংক্রমণ থাকলে তা সারিয়ে তুলতে হবে এবং তারপর চিকিৎসা দিতে হবে।

পরীক্ষার পর যদি দেখা যায় সবকিছু ঠিকঠাক আছে, কোনো ধরনের জটিলতা বা সংক্রমণ নেই তাহলেই মূল চিকিৎসা শুরু করা যাবে। আর তা করতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। এমনকি এরও বেশি সময় লাগতে পারে।

এসব পরীক্ষা নীরিক্ষার জন্য কারা কর্তৃপক্ষের আপত্তি থাকলে কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতিরও প্রয়োজন হতে পারে। ফলে চিকিৎসার বিলম্ব হতে পারে।

সোমবার দুপুরে হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন এই চিকিৎসক। সঙ্গে ছিলেন বোর্ডের আরও তিন সদস্য। জানান, রবিবার রাত ১০টায় রিউমেটয়েড আর্থ্ররাইটিস বিশেষজ্ঞ সৈয়দ আতিকুল হক খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। এই সময় খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মামুন উপস্থিত ছিল। এছাড়া মেডিকেল বোর্ডের অন্য কোনো তার সঙ্গে এখন পর্যন্ত দেখা করেননি।

বিএনপি নেত্রীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান বলেন, ‘তিনি মূলত রিউমেটয়েড আর্থ্ররাইটিস রোগে ভুগছেন। ইদানীং ব্যাথা বেড়ে গিয়েছে। এর ফলে ওনার বাম হাত বেঁকে গিয়েছে। তিনি বাম হাত তুলতে পারেন না, কোনো কিছু ধরতে পারেন না।’

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর কারাগারে যান খালেদা জিয়া। তিনি আগে থেকেই নানা রোগে ভুগছিলেন। আর কারাগারে যাওয়ার পর নতুন করে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছিল তার দল ও ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা। তারা বেসরকারি হাসপাতাল ইউনাইটেডে বিএনপি নেত্রীকে ভর্তির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তবে সরকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল অথবা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তির পক্ষে ছিল।

বিএনপি এবং খালেদা জিয়া একাধিকবার বলেছেন, ইউনাইটেড না হলে তিনি যাবেন না। পরে অবশ্য অ্যাপোলো হলে যাবেন বলে জানায় বিএনপি। যদিও ৪ অক্টোবর বিএনপির পক্ষ থেকে করা এক রিট আবেদনে বিএনপি নেত্রীকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তির নির্দেশ দেয়া হয় এবং এই যাত্রায় আর না করেননি খালেদা জিয়া। হাইকোর্টের নির্দেশে মেডিকেল বোর্ডও পুনর্গঠন করা হয়।

বোর্ডের প্রধান এম এ জলিল জানান, ‘বেগম জিয়া নানাবিধ শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। তাঁর সারভাইভাল স্পন্ডালাইসিস, লাম্বার স্পন্ডালাইসিস ছাড়াও হাইপ্রেসার, ডায়াবেটিস, সোডিয়াম কমে যাওয়া, ছাড়াও অ্যাজমার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। আগেই তাঁর হাঁটুতে মেটাল রিপ্লেসমেন্ট (প্রতিস্থাপন) করা ছিল। সম্প্রতি তাঁর বাম হাঁটু ফুলে গেছে এবং ব্যাথা বেড়েছে।’

বেগম জিয়া তাঁর পছন্দমত ডাক্তারের চিকিৎসা চেয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নে মেডিকেল বোর্ড প্রধান বলেন, ‘এখনও বেগম জিয়া সেরকম কিছু বলেননি।’

চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রয়োজন হবে কি না- এই প্রশ্নে জবাব আসে, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রয়েছেন সব বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। তাই এখানেই তাঁর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।’

খালেদা জিয়াকে দেখা করা চিকিৎসক সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার রিমেটয়েড আর্থরাইটিসের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আর্থরাইটিস পুরনো হলে ঘটে থাকে। তখন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়ে।’

গত শনিবার পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন বিএনপি নেত্রী। একই দিন গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।

শুরুতে বোর্ডের সদস্যরা ছিলেন, এম এ জলিল চৌধুরী, সৈয়দ আতিকুল হক, বদরুন্নেসা আহম্মদ, নকুল কুমার দত্ত এবং সজল কুমার ব্যানার্জি। তবে পরে সজল কুমার ব্যানার্জিকে পাল্টে হৃদরোগ বিষেশজ্ঞ তানজিনা পারভীনকে নেওয়া হয়েছে।

সূত্র : ঢাকা টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!