Home | শীর্ষ সংবাদ | কবি ও কথাসাহিত্যিক ফিরোজা সামাদ’র ছোট গল্প “নাকছাবি”

কবি ও কথাসাহিত্যিক ফিরোজা সামাদ’র ছোট গল্প “নাকছাবি”

35159216_2126393124260294_4824625866988322816_n

স্কুলে তুখর ছাত্রী হিসেবে পরিচিত না হলেও শান্তার ভালো মেধাবীদের একজন হিসেবে পরিচিতি ছিলো। এস.এস. সি তে প্রথম শ্রেনী সহ তিনটি বিষয়ে লেটার নিয়ে উত্তীর্ণ হয়ে মফস্বল শহরের সরকারী কলেজে ভর্ত্তি হলো। দেখতে অাহামরি সুন্দরী না হলেও একনজরে অাকর্ষণীয়া ছিলো। পুঁথিপত্রে নাম ওর শান্তা রহমান হলেও ছোট নাম শান্তা স্কুল কলেজে বহুল পরিচিত একটি নাম। তার কারনও ছিলো। পড়াশোনায় যা না ভালো, তার থেকে অাচার অাচরণ, বাচনভঙ্গি ও বুদ্ধিমত্তায় সবাইকে মুগ্ধ করে রাখতো। তাছাড়া সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ওর পদচারণা ছিলো ঝলমলে উজ্জ্বল তারার মতো। এই চঞ্চলা মেয়েটি সহপাঠী,উপর শ্রেনীর বড়োভাই, অাপাসহ সকলের সমস্যা অানন্দ কষ্টে শেয়ার করতে খুবই পারঙ্গম ছিলো। কিন্তু সে শুধু বোঝেনি একটি শব্দ, তাহলো ছেলে-মেয়ের মধ্যে প্রেম হয় কী করে? কীভাবে ওরা প্রেমে করে ছ্যাকা খেয়ে কাঁদে তা দেখে শান্তা অবাক হতো । ভাবতো কী করে সম্ভব ? অাপনজন অাড়াল করে অজানা একজনকে না পাওয়ার অাতঙ্কে কেঁদে কেঁদে চোখের জলে বালিশ ভেজায় ? ওর বান্ধবীরা বলতো দেখিস তুইও কোনো একদিন প্রেমে পড়বি, তখন বুঝবি । শান্তা হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলতো , সে তখন দেখা যাবেক্ষণ ! এমন যদি কোনোদিন হয় তো সেদিন সব্বাইকে চিঠি দিয়ে, ফোনে জানিয়ে দেবো। কিন্তু ; নাহ্ শান্তা ওর কথা রাখতে পারেনি। ও প্রেমে পড়েছিলো ঠিকই সে অ-নে-ক পরে। তখন ওর বান্ধবীরা যার যার ঘর সংসার নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে। অার শান্তা এতগুলো বন্ধুবান্ধবের মধ্যে থেকেও ওর লেখাপড়া সমাপ্ত করেছে । কারোর কাছ থেকে কোনোদিও একটি প্রেমের প্রস্তাব ও পায়নি । শান্তা ভাবতো, অামি কী তাহলে অাবেদনময়ী নই ? ভার্সিটিতে ছেলে বন্ধুদের সাথে টিএসসিতে অাড্ডা হতো,গল্প হতো কিন্তু প্রেমের কোনো বিষয়বস্তু সেখানে থাকতো না। এমনি করে করে টপটপাটপ পরীক্ষায় ভালো ভালো রেজাল্ট করে একসময় ভার্সিটির গণ্ডি পাড় হয়ে গেলো। এদিকে বাবা মা,অাত্মীয়স্বজনের বাঁকা দৃষ্টিতে পড়ে গেলো শান্তা। মনে হচ্ছে প্রেম না করায় ও যেনো বড়ো এক অপরাধ করে বসে অাছে। ঘটক যেসব বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে অাসে তা হয়তো একদিক মেলে তো অন্যদিক মিলছে না।হিতাকাঙ্খীদের মাথায় হাত।শান্তা নির্বিকার অাবার বিসিএস পরীক্ষা সহ বিভিন্ন পদে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দেখে সিভি পাঠাতে থাকে। ওর লক্ষ্য এখন একটি চাকুরী, নিজের পায়ে দাঁড়ানো। এটাই হয়তো ওর নিয়তি। মনঃপ্রাণ দিয়ে প্রত্যাশা করলে তা অনায়াসে পাওয়া যায়। শান্তা ব্যাংকিং সেক্টরে পরীক্ষা দিয়ে ভালো রেজাল্ট করে বেশ দুএক মাসের মধ্যই ভালোসসম্মানজনক পোস্টে চাকুরি পেয়ে সরাসরি হেড অফিসেই যোগদান করলো। কাজের পারঙ্গমতায় টপাটপ পদোন্নতি হতে থাকে।

তিনবছর চাকুরি করছে হেড অফিসে। হঠাৎ একজন কলিগ বদলি জনিত কারনে হেড অফিসে চলে অাসে। তার বসার জায়গাটি শান্তার পাশের চেয়ার টেবিলে নির্ধারিত হয়। শান্তা গম্ভীর প্রকৃতির। শাহেদও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। দেখতেও সুন্দর। পাঁচফুট সাত ইঞ্চি। শান্তা পাঁচফুট সারেতিন।কাজের ফাঁকে টুকটাক অফিসিয়াল কথাবার্তা ছাড়া কোনো কথা হয়না কখনো। একদিন লাঞ্চ টাইমে শাহেদ হঠাৎ শান্তাকে বলে বসে,অাপনার কোনো অাপত্তি না থাকলে চলুননা অামরা অাজ বাইরে লাঞ্চ সেরে নেই? এমনিতেই অামি অাজ লাঞ্চ নিয়ে অাসতে পারিনি। শান্তা কেমন যেনো নীরব হয়ে যায়। শাহেদের অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারেনি। চুপচাপ টেবিল গুছিয়ে ব্যাগটি হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে, চলুন কোথায় যাবেন?

দুজন পাশেই একটি চায়নিজ রেস্টুরেন্টে এক কোণায় একটি টেবিল নিয়ে বসে পড়ে। ওয়েটার এসে খাবারের দুটি মেনু দুজনার সামনে দিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। শান্তা হালকা খাবার অর্ডার করলো সাথে শাহেদও একই খাবার পছন্দ করে ওয়েটারকে খাবার দিতে বলে। এমনি করে মাঝে মাঝেই শাহেদ বাইরে যাওয়ার বায়না ধরে। শান্তা সম্মোহিতের মতো বেড়িয়ে যায়। মাঝে মাঝে ভাবে, কেনো যাচ্ছি? অাবার বললে না করে দেবো। কিন্তু দু’দিন পরেই মনে মনে অপেক্ষায় থাকে এই বুঝি শাহেদ টেবিলের সামনে এসেই বলে, ওঠো তো ! চলো কিছু খেয়ে অাসি! শাহেদের টেবিলে কাজের চাপ দেখলে শান্তা বলে, হেলপ করতে হবে? ওরা কবে কখন অাপনি থেকে তুমিতে এসে পড়েছে টেরই পায়নি। যেদিন বুঝতে পারলো তখন অাপনিতে ফেরার কোনো পথ রইলো না। এমনি করে প্রায় বছর পাড় হয়ে গেলো। ওরা ছুটির দিনে মাঝে মাঝেই ঘুরতে বেড় হয়। দুজন এখন হাত ধরাধরি করে ফুটপাথ দিয়ে হাসতে হাসতে চলে অবলীলায়। দুজনই বুঝতে পারে ওরা একে অপরকে ভালোবাসে। কিন্তু মুখফুটে কেউ কখনো বলতে পারেনি। কোনো প্রয়োজনে একজন ছুটি কাটালে অন্যজন ছটফটিয়ে মরে। শান্তার মনে পড়ে কলেজ,ভার্সিটির বন্ধুদের কথা। চিৎকার দিয়ে বলতে ইচ্ছে করে, জানিস অামি সত্যি সত্যিই অাজ কারোর প্রেমে পড়ে গেছি। অাজ মনে হয় তাকে ছাড়া অামি বাঁচতেই পারবোনা।কিন্তু কোনোদিন শান্তা ওর জীবনে অাসা প্রেমের কথা বলতে পারেনি। শুধু চোখের জলে বালিশ ভিজিয়েছে।

যখন ওদের মেলামেশা বেশ সাবলীল, একদিন শাহেদই প্রথম শান্তাকে অফার দিয়ে বলে, শান্তা অামরা কি শুধুই বন্ধু? নাকি এর মধ্যে অামাদের অন্য চাওয়ার অাছে ? শান্তা শুধু মুখটি নতো করে উত্তর দেয়, অামি জানিনা। শাহেদ ওর বাম হাতটি পরম ভালোবাসায় দুহাত দিয়ে জড়িয়ে মুঠোর মধ্যে নেয়। শান্তার হাত ভীষণ ঠাণ্ডা অার থরথর করে কাঁপছে।শাহেদ অট্টহাসি দিয়ে বলে তুমি এতো কেনো ভাবছো ? অামি ভেবে দেখেছি অামার অাগামীর জন্য সারাজীবন তোমায় চাই। ভালোবাসি তোমায় অামি। তুমি তোমার গার্ডিয়ানদের সাথে কথা বলো,অামি অামার মা ও বড়ো ভাই-ভাবির সাথে তোমার কথা বলবো। অামার বিশ্বাস অামার কথা তারা কখনই ফেলবে না। শান্তা বিষয়টি প্রথমেই ওর মা ও বাবার সাথে শেয়ার করে বলে তোমরা কেউ দেখতে পারো। মেয়ে সাবলম্বি বুদ্ধিমতি, তারপর ছেলেও সাবলম্বি মা বাবার কোনো অাপত্তি রইলোনা। শাহেদ বাড়ি চলে গেলো দুদিনের জন্য। ওর মাকে কথাটি জানাতে। শান্তার খুব কষ্ট হচ্ছিলো কীভাবে দুদিন পাড় করবে? তবুও শাহেদকে চিরদিন পাওয়ার জন্য দু’দিনকে সানন্দে বিসর্জন দিয়ে বিদায় দিলো। দু’দিন পরেই শাহেদ হাসিমুখে ফিরে এসে জানালো, মা তোমার ছবি ও বায়োডাটা দেখেই খুউব পছন্দ করেছে।

এরপর ওদের ঘোরাঘুরির জায়গা হলো নিউমার্কেট, রাফা প্লাজা,বসুন্ধরা শপিংমল, জুয়েলারি দোকান, অার স্টার সিনেপ্লাক্সে মুভি দেখা। এসব খরচ মাঝে মাঝে শান্তা জোড় করেই দিতো। শাহেদ বলে এখন থেকে সব দায় অামার। অামি তো তোমার পর নই। বিয়ের তারিখ ঠিক কবে হবে এ বিষয়ে ভাই-ভাবিকে দায়িত্ব দেয়া হলো। এর মধ্যেই শান্তার একটি জন্মদিন এসে হাজির। শাহেদ সারপ্রাইজ দিতে শান্তাকে নিয়ে বসুন্ধরা শপিংমলে গিয়ে জুয়েলার্স থেকে একটি ডায়মণ্ডের নাকছাবি ও কালাঞ্জালি শাড়ির দোকান থেকে একটি বেনারশী কিনে উপহার দিয়ে বললো, অাজ তোমার অামার এনগেজমেন্ট হলো। শান্তা একই দোকান থেকে শাহেদের জন্য হাতের একটি রিং কিনে নিজ হাতেই পড়িয়ে দিলো। দু’জন মিলে সিনেপ্লেক্সে ছবি দেখলো, তারপর দু’জন যার যার বাসায় ফিরে গেলো। শান্তা বাসায় গিয়ে মা বাবা, ভাইদের জানালো এবং দেখালো , ওর জন্মদিনে শাহেদের দেয়া উপহার।

দিন যায়, মাস যায়, শাহেদ বিয়ের ব্যাপারে অাগ বাড়িয়ে কিছু বলছেনা। শান্তা একদিন উপযাচক হয়ে বলে, অাব্বা জানতে চেয়েছিলো তোমাদের প্রস্তুতি কতোদূর। তখন শাহেদ জানালো, একটু অপেক্ষা করো,ভাইয়া-ভাবি একটু দ্বিমত পোষণ করছে। মাকে এনে ওদের দুজনকেই কনভিন্স করে ফয়সালা করে ফেলবো। অতপর সাতদিনের ছুটি নিয়ে শাহেদ ওর মাকে ঢাকায় নিয়ে অাসার জন্য চলে যায়। শান্তার কেনো যেনো মনে হলো এই বোধহয় শাহেদের শেষ যাওয়া।শাহেদের দু’টোহাত মুখে চেপে ধরে অঝোরে কাঁদলো শান্তা। শাহেদ ওর পিঠে পরম অাদরে হাত বুলিয়ে মাথায় কপালে চুমু খেয়ে শান্ত করে বিদায় নিলো। শান্তার বাড়বার কেনো জানি মনে হলো অার হয়তো কোনোদিনই দেখা হবেনা শাহেদের সাথে । কিন্তু ; অাবার ভাবে, কেনো দেখা হবেনা? মাত্রতো সাতটি দিন! দেখতে দেখতেই কেটে যাবে। তারপরই তো চিরদিন দু’জন একসাথে।

ছুটিতে যাওয়ার পাঁচদিন পরেই ব্যাংকের এইচ অার এর তুহিন স্যার প্রিন্সিপ্যাল অফিসারদের রুমে ডেকে নিয়ে বললেন, শাহেদ বিয়ে করেছে,ওর ভাইয়ের একমাত্র শ্যালিকাকে। অামাকে ওর ভাই মোবাইলে জানালো। অার অন্য কোনো ব্রাঞ্চে ওর ট্রান্সফারের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। সকলের দৃষ্টি গিয়ে পড়লো শান্তার দিকে। কারন,অফিসের সবাই জেনে গেছে মাস খানেকের মধ্যই শাহেদ-শান্তার বিয়ে। শান্তার মাথা ঘুরছে, পায়ের দিকে মনে হচ্ছে ভূমিকম্প। দাঁড়াতে পাড়ছেনা। তুহিন সাহেব শান্তাকে বললেন,অাপনি বসুন অার অন্যদের যার যার টেবিলে যেতে বললেন। শান্তা নির্বাক পাথরের মতো বসে রইলো বসের সামনে। তুহিন সাহেব তার সামনের পানি ভর্ত্তি গ্লাসটি শান্তার সামনে এগিয়ে দিয়ে বললেন, পানিটা খেয়ে নিন। শান্তার এতক্ষণে মনে হলো,হ্যাঁ এই পানিটাই ওর বোধহয় প্রয়োজন। ঢকঢক করে একটানে পানি খেয়ে গ্লাসটি টেবিলে রেখে শান্তা বললো, এখন অামি অাসি স্যার? তুহিন সাহেব মমতা মাখানো চোখে তাকিয়ে বললেন, শান্তা যা হয়েছে অাপনার ভালোর জন্যই হয়েছে। অাপনি ভেঙ্গে পরবেননা। হঠাৎ শান্তা একদম শান্ত কণ্ঠে বললো, না স্যার বিষয়টি অাগেই অামাদের মধ্যে ফয়সালা হয়ে গিয়েছে। অামি জানতাম। তুহিন সাহেব শান্তার দৃঢ় ভঙ্গিতে হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখতে থাকেন অার ভাবেন, এতো মনোবল এই মেয়ে কোথায় পেলো? অাজ সাত বছর পাড় হয়ে গেছে। বিয়ে করেনি শান্তা। তাইবলে ওর কোনো কষ্ট অাছে বলে কেউ বুঝতে পারেনা। চাকুরিতে অাজ এজিএম পদে হেড অফিসেই অাছে সকলের মধ্যমণি হয়ে।

সেদিনের পর অার কোনোদিন দেখা হয়নি শাহেদের সাথে শান্তার।বদলীর পর দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে শাহেদ একদিন অফিসে এলেও শান্তা সেদিন ইচ্ছে করেই ছুটি নিয়েছিলো। তুহিন সাহেব শাহেদকে তার কক্ষে ডেকে শুধু “কা-পুরুষ ” শব্দটি প্রয়োগ করে চলে যেতে বললেন। শাহেদ অাজো কোনো মফস্বল শহরে ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসেবে চাকুরি করছে। পদোন্নতির কথা মনে হলেই শান্তার দৃঢ়তর সেই মুখটি মনের পাতায় ভেসে ওঠে। কি ভাবে যাবে শান্তার সামনে পদোন্নতির কথা নিয়ে। কারন এইচ,অার,এর এই বিভাগটি শান্তার তত্ত্বাবধানে।

প্রতিবছর শান্তার জন্মদিন ফিরে অাসে, কিন্তু সে জন্মদিন অার অনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়না। শান্তা ওইদিন পরম যত্নে অালমীরা থেকে শাহেদের দেয়া বেনারশীটি নামায়,কিন্তু শাড়ির ভাঁজ খুলেনা,যদি নষ্ট হয়ে যায়? এই ভয়ে। গোপনে অায়নার সামনে দাঁড়িয়ে নাকছাবিটা পড়ে নেয় একবার। অার তখনি একটি প্রতিধ্বনি শুনতে পায়,” বাহ্ খুব সুন্দর লাগছে তোমায় “! শান্তা নিরন্তর অপেক্ষায় থাকে অাবার কবে ঘুরে অাসবে ওর জন্মদিন? নাকে পড়ে নেবে শাহেদের দেয়া ” নাকছাবি ” অার কানে শুনতে পাবে শাহেদের কণ্ঠের প্রতিধ্বনি। ওর একটুকুই শান্তনা, যে করেই হোক শাহেদ তো ওকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে,তাই বা কম পাওয়া কিসে ? সেজন্যই ঘৃণা নয় বরং পরম যতনে ভালোবাসা অার অশ্রুজলে কৌটাবদ্ধ করে রেখে দেয়, শাহেদের প্রেম, ভালোবাসা ও প্রতারণার চিহ্ন ডায়মণ্ডের ছোট্ট একটি নাকছাবি !!!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!