ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ওমানে প্রতিমাসে গ্রেফতার হচ্ছে ৫শ থেকে এক হাজার বাংলাদেশি

ওমানে প্রতিমাসে গ্রেফতার হচ্ছে ৫শ থেকে এক হাজার বাংলাদেশি

Hilights333333-400x525

নিউজ ডেক্স : কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশের বৃহত্তম শ্রমবাজার ছিল মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ওমান। কিন্তু সে অবস্থা আর নেই। দিনে দিনে তা সীমিত হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশীদের সেখানে অহরহ শ্রম আইন লংঘনের ঘটনা আরও সংকট তৈরি করেছে। প্রতিমাসে গ্রেপ্তার হচ্ছে সেখানে প্রবাসী প্রচুর বাংলাদেশি কর্মী।

ওমানের শ্রম মন্ত্রণালয় অতি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ২০১৭ সালে শ্রম আইন লংঘনের দায়ে গ্রেপ্তারকৃতদের সংখ্যা। মোট ২৭,০০০ বিদেশি কর্মী গ্রেপ্তার করা হয় এ সময়ে। এদের ২০,৫৫৭ জন হলো বাংলাদেশি। অর্থাৎ গ্রেপ্তার হওয়া ৭৬.৬ শতাংশ বাংলাদেশী। শ্রম আইন ভাঙার ঘটনায় সেখানে আর বাংলাদেশিদের ভাল চোখে দেখা হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সোস্যাল ক্লাব, ওমান-এর সভাপতি মো. সিরাজুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান: প্রবাসী বাংলাদেশিদের শ্রম আইন লংঘন করার ঘটনা এখনও ঘটছে। প্রতিমাসে ৫০০ থেকে ১০০০ গ্রেপ্তার হচ্ছেন।

ভ্রাতৃপ্রতীম ওমান বাংলাদেশিদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় দেশ হলেও সেখানে সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ছে। ওমান সরকার গত কয়েক দশক ধরে ওমানীকরণ (ওমানের নাগরিকদের জন্য চাকরির সুযোগ সৃষ্টি) নীতি অনুসরণ করে আসছে। এর আওতায় বিদেশি কর্মী হ্রাস করা হচ্ছে। তাতে অনেক দেশের মত বাংলাদেশীদের কাজের সুযোগও কমে গেছে। মাস্কাট থেকে এক প্রবাসী বাংলাদেশি জানালেন, কোন কোম্পানি থেকে বিদেশি কর্মী আনার জন্য ভিসার চাহিদাপত্র দেয়া হলে সেখানে ১০ জনের মধ্যে কখনও একজন বাংলাদেশি নেয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে, আবার কখনও একজন বাংলাদেশির অনুমোদনও মিলছে না। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের এক সময়ের বৃহৎ শ্রমবাজারটি ছোট হয়ে পড়েছে। আরও খারাপ অবস্থা তৈরি করেছে তথাকথিত ‘ফ্রি ভিসা’র নামে নির্বিচারে এখানে কর্মী আসা। এ ধরনের ভিসায় এসে হাজার হাজার বাংলাদেশি অনাহারে অর্ধাহারে ঘুরছেন। এরা কাজের সন্ধানে হণ্যে হয়ে ছুটছেন এখান থেকে ওখানে। আর এটা হচ্ছে ওমানের শ্রম আইনের সরাসরি লংঘন। তথাকথিত ফ্রি ভিসায় যাওয়া একজন গতকাল বললেন, ‘কোথাও কাজ পাচ্ছি না। আর কখনও পাওয়া গেলে তাতে যে বেতন পাওয়া যায় তা দিয়ে দু’বেলা খাওয়ার টাকাও হয় না।’ অনুসন্ধানে জানা যায়, জনশক্তি রপ্তানিকারক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার কারণে অনেকে কথিত ফ্রি ভিসায় সেখানে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। নির্দিষ্ট কাজ ও বেতন তারা পাচ্ছেন না। তখন তারা পালিয়ে অন্যখানে কাজে যোগ দেন। সেখানকার শ্রম আদালত ঘন ঘন অভিযান চালাচ্ছে এদের বিরুদ্ধে। গত মাসের প্রথমদিকে যাওয়া ফটিকছড়ির এক যুবক মো. ফিরোজ বললেন, প্রচুর টাকায় ভিসা কিনে এখানে এসেছি পরিবারে স্বাচ্ছন্দ আনার আশায়। যিনি ভিসা দিয়েছেন তিনি বলেছিলেন, তার কোম্পানিতে কাজ এবং থাকা-খাওয়া ফ্রি। আর মাসিক বেতন বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। আসার পর দেখছি সব ভুল, প্রতারণার শিকার হয়েছি। ১২ ঘণ্টার বেশি খাটুনির পর মাসিক বেতন বাংলাদেশী টাকায় ১৪/১৫ হাজার টাকার মত।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)’র হালনাগাদ পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে বেশ বুঝা যায় যে প্রতিমাসে হ্রাস পেয়েছে ওমানে জনশক্তি রপ্তানি। গত বছর জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে সেখানে কর্মী গেছেন ৬৪,১৮৬ জন। আর এ বছরে একই সময়ে গেছেন ৪৭,৬৫৮ জন। গত বছর ( ২০১৭ ) মোট ৮৯,০৭৪ জন কর্মী গেছেন। সেই হিসেবে গড়ে প্রতিমাসে গেছেন ৭,৪২২ জন। আর চলতি বছরে এই হার ৩,৯৭১ জন।

সূত্র : দৈনিক পূর্বকোণ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!