ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ঐক্যে জামায়াত থাকবে না, জেলে আদালত ‘অসম্ভব’

ঐক্যে জামায়াত থাকবে না, জেলে আদালত ‘অসম্ভব’

dr-20180804184513 (1)

নিউজ ডেক্স : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচারের জন্য কারাগারে আদালত বসানোর সমালোচনা করে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘বেসামরিক শাসনামলে জেলখানায় তথাকথিত আদালত অসম্ভব। কেন এটা করা হলো সে প্রশ্ন আমরা করতে পারি।

আমি মনে করি, আদালতে এসেই এই বিষয়গুলো চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব। আমরা সবাই একসাথে করে দেখি, কী করা যেতে পারে। ’ গতকাল বৃহস্পতিবার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনজীবীদের করণীয়বিষয়ক এক মতবিনিময়সভায় এ কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে আয়োজিত সভায় ড. কামাল আরো বলেন, সংবিধানে নীতি আছে অর্ডিনারি আইন অনুযায়ী বিচার হবে, শাস্তি হবে। তাহলে কেন ‘এক্সট্রা অর্ডিনারি’ করতে হবে—তিনি প্রশ্ন তোলেন।

সংসদ নির্বাচন ঘিরে যে সর্বদলীয় ঐক্যের ডাক দেওয়া হয়েছে সেখানে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে রাখা হবে না বলেও ড. কামাল মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘তাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেওয়া হবে না। এককথায় উত্তর ‘না’। সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।

‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনি বিমানের টিকিট কেটে রাখেন। দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাইরে চলে যান। ’ এক সাংবাদিকের এমন কথায় ড. কামাল বলেন, ‘এক কোটি ৪০ লাখ ভুয়া ভোটার বাতিলের জন্য ২০০৭-০৮ সালে মামলা করেছিলাম। এরপর এই ভোটার বাতিল করা হয়েছিল, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা হয়েছিল। ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদকে যখন আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান থেকে সরালাম তখন আমাদের চারজনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীর মামলা হলো। ২০১০ সালে সে মামলা থেকে আমরা মুক্ত হলাম। তখন তো আমরা দেশ ছেড়ে চলে যাইনি। ’

ড. কামাল আরো বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অবাধ ও সুষুম নির্বাচনের জন্য ২০০৭ সালে ২৩টি শর্ত দিয়েছিলেন। ওই শর্তগুলো এখনো প্রযোজ্য হতো, যদি তিনি বর্তমানে বিরোধী দলে থাকতেন। বিরোধী দলে থেকে যখন শর্তগুলো সমর্থন করেছিলেন, আশা করি সরকারে থেকেও তিনি সমর্থন করবেন।

সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার প্রশংসা করে ড. কামাল বলেন, ‘গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, এস কে সিনহা যে কাজটি করে গেছেন তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। যাঁরা ওনাকে অপমান করার চেষ্টা করেছেন তাঁরা চিরদিনের জন্য ধিক্কৃত হয়ে থাকবেন। ’ ড. কামাল বলেন, ‘অবাক লাগে, প্রধান বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে তাঁরা উঠেপড়ে লাগলেন। হ্যাঁ, উনি যদি সংবিধান লঙ্ঘন করে থাকেন তাহলে সে প্রসিডিউর আছে। তা ফলো করে ইমপিচ করতে পারত। কিন্তু পুলিশ নিয়ে গেটে তালা দেওয়া! এগুলো অসাংবিধানিক কাজ, একদিন না একদিন এসবের বিচার আমরা করে ছাড়ব। ’

কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন প্রসঙ্গে ড. কামাল বলেন, ‘মাঝখানে নিরাশ হয়ে যাচ্ছিলাম। এত কিছু ঘটে যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে না। আমার আশঙ্কাটা দূর হলো যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে ছাত্ররা রাস্তায় নামল। ’ তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা তো কোটা বাতিলের দাবি করেনি। তারা চেয়েছে সংস্কার। এই সংস্কার শব্দটা সবাইকে বোঝা দরকার। কোনো রাষ্ট্রই এ রকম নয়, যেখানে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কত যে চোখ খুলল সবার! পাইকারিভাবে আইন অমান্য হচ্ছিল। স্কুলের ছাত্ররা চেক করে করে তা দেখিয়ে দিল। স্কুল-কলেজের ছাত্ররা দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছে! ঝুঁকি নিয়ে চোখে আঙুল দিয়ে সবাইকে জাগিয়েছে। ওদের নিয়ে তো আমাদের গর্ব করা উচিত। ’

ড. কামাল আরো বলেন, ‘যাঁরা ক্ষমতায় যান বা যেতে চান, তাঁদের সঙ্গে সংবিধানের কিছু টানাটানি লেগে যায়। বর্তমানে সংবিধানের সংশোধনী করে তারা যেটা করেছে, আমাদের করা সংবিধানে সে বিধান ছিল না। ছিল যে সংসদ ভেঙে নির্বাচন হবে। এখন যেহেতু সংশোধনী হয়েছে, এটা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। ’

রাজনৈতিক দলগুলোর সভা-সমাবেশের ওপর প্রশাসনের বাধা-নিষেধ প্রসঙ্গে ড. কামাল বলেন, ‘সভা-সমাবেশের বিষয়ে সংবিধানে যুক্তিসংগত কিছু বাধা-নিষেধের কথা বলা আছে। পাইকারিভাবে, যেনতেনভাবে মিটিং করতে দিলাম না—এটা তো চ্যালেঞ্জ করা দরকার। ’

সূত্র : দৈনিক কালের কন্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!