Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা

আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা

330

নিউজ ডেক্স : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের শতাধিক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করতে গেছেন বলে জানা গেছে। স্বেচ্ছায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আগ্রহী এসব ইয়াবা কারবারিদের ডাকে সাড়া দিয়েছে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহল। দীর্ঘদিন এ ব্যবসা থেকে অর্জন করা অর্থের মায়া ভুলে শতাধিক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এমনকি আত্মসমর্পণ করতে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে দেশে চলে এসেছেন। এদিকে শোনা যাচ্ছে, পুলিশের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে উখিয়া-টেকনাফের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ভাই ও স্বজনেরা। এরা হচ্ছেন বদির ভাই তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী আব্দুস শুক্কুর, শফিক রহমান, ফয়সাল রহমান, বদির ভাগিনা শাহেদ রহমান নিপু। এছাড়াও আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছেন টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের ছেলে দিদারও। ১৫ জানুয়ারি ছিল আনুষ্ঠানিক আত্নসমর্পণ করতে তালিকাভুক্তির শেষ দিন। ইতিমধ্যেই টেকনাফের শতাধিক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কক্সবাজার জেলা পুলিশের নির্ধারিত স্থানে চলে গেছেন। এদিকে গতকাল বিকালে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড নাজিরপাড়ায় সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। উক্ত ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার ও কৃতি ফুটবলার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী এনামুল হক এনাম মেম্বার স্বেচ্ছায় আত্নসমর্পণের জন্য বাড়ি থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়ার খবর পেয়ে শত শত নারী-পুরুষ শিশু বৃদ্ধ শিক্ষার্থী জড়ো হন। এসময় তারা এনাম মেম্বারকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। শত শত নারী-পুরুষ শিশু বৃদ্ধ শিক্ষার্থীদের আহাজারি ও চোখের জলে বিদায় দেয়া হয় এনাম মেম্বারকে। শতাধিক শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী চুপিসারে গন্তব্যে গেলেও এভাবে অন্য কেউ নিজ এলাকা থেকে সর্বমহলের কাছে দোয়া চেয়ে বিদায় নেননি।

বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, আত্মসমর্পণের জন্য অপেক্ষায় থাকা এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের করা তালিকায় ৭৩ জন মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে কমপক্ষে ৫০ জন রয়েছেন। তাছাড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সর্বশেষ করা ইয়াবা ব্যবসায়ীর তালিকার ১ হাজার ১৫১ জনের মধ্যে এরা সবাই আছেন বলে জানা গেছে। ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণ বিষয়টি নিয়ে ১ মাস ধরে কাজ করছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একটি দল। মূলত সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পুলিশ প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নের জন্য হাত দেন। ইতিমধ্যে আত্মসমর্পণ করতে ইচ্ছুক ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশের হেফাজতে চলে গেছে। বেসরকারি টিভি চ্যানেল ২৪ চট্টগ্রাম অফিসের প্রতিবেদক এমএম আকরাম হোসেনের মধ্যস্থতায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন এই ইয়াবা ব্যবসায়ীরা।

এবিষয়ে এমএম আকরাম হোসেন বলেন, ‘গত ২০ অক্টোবর আমার মধ্যস্থতায় র‌্যাবের সহযোগিতায় মহেশখালীর ৫টি জলদস্যু বাহিনীর ৩৭ জন সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নতুন করে এই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়াটির কাজ করছি’।

এদিকে জানা গেছে, মাদক ব্যবসায়ীদের মাদক বিক্রির অর্থ বাজেয়াপ্ত করবে সরকার। প্রথমে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃপক্ষ আত্মসমর্পণ করা মাদক ব্যবসায়ীদের সম্পদের তদন্ত করবে। তদন্তের পর ইয়াবা ব্যবসা থেকে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!