Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ‘আইএস’র টুপি কোথায় পেলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রিগ্যান

‘আইএস’র টুপি কোথায় পেলেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রিগ্যান

images60

নিউজ ডেক্স : আলোচিত হলি আর্টিজান হামলা মামলায় রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যানের মাথায় তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যদের ব্যবহৃত টুপির মতো টুপি পরা নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে রিগ্যানসহ ৭ আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং একজনকে খালাস দেয়া হয়।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে রিগ্যানের কাছে এই ধরনের টুপি কীভাবে আসলো বা কারা এটি সরবরাহ করলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রায় ঘোষণার সময় পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অপরাধীরা হলি আর্টিজানে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন সময় বলেছে এবং এই মামলার তদন্ত করতে গিয়েও বার বার উঠে এসেছে, বাংলাদেশে আইএসের কোনো কার্যক্রম নেই। এই মামলায় সাজাপ্রাপ্তরাও আইএসের সঙ্গে যুক্ত-এমন কোনো তথ্যপ্রমাণও মেলেনি। তাহলে কি তারা দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আইএসের ব্যানারটাই ব্যবহার করেছে?

রায় ঘোষণার সময় দেখা যায়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি আদালতের এজলাসে মাথায় আইএসের টুপি পরে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে হৈচৈও করেছেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছেন। তাদের স্লোগানও আইএসের স্লোগানগুলোর মতো। আদালতের রায় ঘোষণার পর কাঠগড়া থেকে তাকে যখন লিফটে তোলা হয় তখন সময় সংবাদের প্রতিবেদক তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তিনি কেনো এটা পরেছেন? এ প্রশ্ন এড়িয়ে তিনি বলেন, আদালতের এই রায়ে আমি বিচলিত নই। ওই সময় তিনি বিজয় চিহ্নও (ভি চিহ্ন) দেখাচ্ছিলেন। কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে তোলার পরেও তার মাথায় ওই টুপি দেখা যায়।

হলি আর্টিজানের মতো একটি স্পর্শকাতর মামলার আসামি যিনি দীর্ঘদিন কারাবন্দি আছেন, তিনি কীভাবে এমন একটি টুপি আজ পরতে পারলেন। কীভাবে তার কাছে এই টুপি আসলো? এই প্রশ্ন করা হয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবুকে।

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি বলতে পারব না। জেল কর্তৃপক্ষ, যেখান থেকে তাদের আদালতে আনা হয়েছে এই জবাবটা তারা দেবে। টুপি কেউ পরতেই পারে এতে কোনো সমস্যা নাই কিন্তু একটা সংগঠনের প্রতীকী টুপি পরা খুবই অন্যায়। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এটা পরা কোনোভাবেই উচিত নয়।

ওই আসামির কাছে আইএসের নিদর্শন সদৃশ টুপি কীভাবে আসলো বা কে তাকে এটি সরবরাহ করলো তা তদন্ত করা দরকার বলেও মত দেন তিনি।

জানা গেছে, কারাগার থেকে কয়েক দফা তল্লাশি করে আসামিদের আদালতে আনা হয়। এমনকি জুতা খুলে খালি পায়ে ঢোকানো হয়েছিল এজলাসে। তাহলে এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা আছে কিনা?

আব্দুল্লাহ আবু বলেন, নিরাপত্তার অনেকগুলো ধাপ পার করে তাদের আদালতে আনা হয়েছে। অতএব এটা অবশ্যই দেখা দরকার যে, এই টুপিটা তারা কোথায় পেলো, কীভাবে ফিতা লাগালো। আমি মনে করি, এই জিনিসটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর।

এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, এই আসামিরা তো দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ কাস্টডিতে। তাদের কাছে এই টুপি কীভাবে এসেছে সেটা নিয়ে আমার মন্তব্য করা তো ঠিক হবে না।

এর আগে বেলা সোয়া ১২টায় তিন বছর আগের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার রায় দেন আদালত। রায়ে ৮ আসামির মধ্যে ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে খালাস দেয়া হয়।

বিচার শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করলেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাকিবুল ইসলাম রিগ্যান ওরফে রাফিউল ইসলাম, রাজীব গান্ধী ওরফে জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ আসলাম হোসেন ওরফে র‍্যাশ, আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান সাগর ওরফে সাগর, মামুনুর রশিদ রিপন, শরিফুল ইসলাম খালেদ। আর খালাস পেয়েছেন নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে জঙ্গিরা। যাদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয় ও ৩ জন বাংলাদেশি। -সময়নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!