Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ফুরাল অক্সিজেন, সাগরেই বিলীন নাবিকদের জীবিত উদ্ধারের আশা

ফুরাল অক্সিজেন, সাগরেই বিলীন নাবিকদের জীবিত উদ্ধারের আশা

আন্তর্জাতিক ডেক্স : কয়েক ডজন নৌযান, উড়োজাহাজ আর শত শত সামরিক কর্মকর্তার প্রাণান্ত চেষ্টাতেও কিছু হলো না। ইন্দোনেশিয়ার নিখোঁজ সাবমেরিনের অক্সিজেন শেষ হওয়ার সময়টুকু পার হয়ে গেছে। ফলে এর ভেতরে থাকা ৫৩ নাবিককে জীবিত উদ্ধারের আশাও ক্ষীণ হয়ে এসেছে।

শনিবার ব্যাংকক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মানির তৈরি কেআরআই নাংগালা-৪০২ সাবমেরিনটিতে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হলে সর্বোচ্চ তিন দিন অক্সিজেন থাকার ব্যবস্থা ছিল। গত বুধবার ইন্দোনেশিয়ার অন্য সাবমেরিনগুলোর সঙ্গে টর্পেডো মহড়ায় যোগ দেয়ার কথা ছিল এর। কিন্তু আচমকাই যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সেটি।

jagonews24

এরপর থেকেই নিখোঁজ সাবমেরিনের খোঁজে জোরালো অভিযান শুরু করে ইন্দোনেশিয়া। এতে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় প্রতিবেশী সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়াও।

শুরু থেকেই বলা হচ্ছিল, হারিয়ে যাওয়া সাবমেরিনটিতে শনিবার ভোর পর্যন্ত টিকে থাকার মতো অক্সিজেন থাকতে পারে। কিন্তু কিছুক্ষণ আগে সেই সময়ও পার হয়ে গেছে।

ইন্দোনেশীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্র জুলিয়াস উইদজোজোনো বলেন, এখনও কোনও অগ্রগতি হয়নি। আমরা ওই এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছি।

সাবমেরিনটি নিখোঁজ হওয়ার পর সেটি দ্রুত ফিরে পেতে আশ্চর্যজনক কোনও কিছুর আশা করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। সেটি যে স্থান থেকে নিখোঁজ হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে তেলের চিহ্নও পাওয়া গেছে। তবে এটিকে খারাপ কিছুর নমুনা বলেই মনে করছেন ফরাসি ভাইস অ্যাডমিরাল জ্যঁ-লুইস ভিশট।

jagonews24

তিনি বলেন, তেল ভাসা খারাপ নমুনা। যদি এটি সাবমেরিনের হয়, তাহলে হয়তো সেখানেই সব শেষ!

দুশ্চিন্তার আরও একটি কারণ সাগরের গভীরতা। সাবমেরিনটি যদি ৭০০ মিটার বা তারও নিচে চলে যায়, তাহলে সেটি পানির চাপেই বিধ্বস্ত হতে পারে। ভয়ের বিষয়, বালি দ্বীপের কাছাকাছি যে এলাকায় সাবমেরিনটি ডুবেছে, সেখানে কোথাও কোথাও সাগরের গভীরতা দেড় হাজার মিটারেরও বেশি।

৪০ বছরের পুরোনো সাবমেরিনটি কীভাবে ডুবতে পারে তা নিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষ। সেটি অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই হয়ে গিয়েছিল কি না সে প্রশ্নেরও জবাব পাওয়া যায়নি।

ইতিহাস বলে, সাবমেরিন দুর্ঘটনা অত্যন্ত ভয়াবহ হয়ে থাকে। ২০০০ সালে রাশিয়ার কার্স্ক সাবমেরিনটি ব্যারেন্ট সাগরে ডুবে প্রাণ হারান এর ১১৮ আরোহীই।

jagonews24

তদন্তে জানা যায়, সাবমেরিনটির একটি টর্পেডো বিস্ফোরিত হলে বাকিগুলোতেও বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বেশিরভাগ আরোহীই সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। তবে তাদের মধ্যে কয়েকজন সুরক্ষিত একটি কামরায় আশ্রয় নেন। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। নির্ধারিত সময়ে উদ্ধার করতে না পারায় শ্বাসরোধ হয়ে মারা যান তারাও।

এছাড়া, ২০০৩ সালে চীনের একটি সাবমেরিন দুর্ঘটনায় নিহত হন ৭০ জন নৌ কর্মকর্তা। এর পাঁচ বছর পর জাপান সাগরে রাশিয়ার আরেকটি সাবমেরিনে বিষাক্ত গ্যাস নিসৃত হয়ে মারা যান ২০ জন।

আর ২০১৮ সালে আর্জেন্টাইন কর্তৃপক্ষ একটি তাদের একটি ডুবে যাওয়া সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান। সাবমেরিনটি বছরখানেক আগে ৪৪ নাবিক নিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল। তাদের সবাই মারা গেছেন বলেই ধরে নেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!