Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে

ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে

234334333-600x338

নিউজ ডেক্স : ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আইনের কড়াকড়ি ও নাগরিকদের সচেতন করতে রেল কর্তৃপক্ষ নানা কার্যক্রম গ্রহণ করলেও সচেতন হয়নি জনসাধারণ। মৃত্যুর পাশাপাশি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পঙ্গুত্বও বরণ করছে নানা বয়সের মানুষ।

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, রেল লাইনের দু’পাশে বস্তি ও বাজার স্থাপন, অনিরাপদ ক্রসিং ব্যবস্থা, রেল লাইনের মধ্য দিয়ে মানুষের অসতর্ক চলাচল, চলন্ত ট্রেনে সেলফি তোলা, কানে হেডফোন লাগিয়ে রাস্তা পারাপার এবং যথাযথ মনিটরিং না থাকায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেড়ে চলছে।

রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটছে কানে হেডফোন লাগিয়ে এবং অসতর্ক অবস্থায় দ্রুত ক্রসিং পারাপারে। সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, ক্রসিং পারাপারে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।

রেলওয়ে আইন অনুযায়ী, রেললাইন ধরে হাঁটাসহ বেশ কিছু ব্যাপারে বিধি নিষেধ রয়েছে। কিন্তু আইন অমান্য করে রেললাইন ধরে হাঁটতে গিয়েই এসব দুর্ঘটনা ঘটছে বলে দাবি রেল কর্মকর্তাদের।
এব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম সৈয়দ ফারুক আহমদ জানান, রেল লাইন ধরে না হাঁটতে, হেডফোন লাগিয়ে অসতর্ক অবস্থায় দ্রুত ক্রসিং পারাপার না হওয়ার জন্য আমরা প্রায়ই জনগণকে সর্তক করে থাকি। প্রতি বছরই সচেতনতামূলক আমাদের কর্মসূচি থাকে। ট্রেন আসা-যাওয়ার সময় ক্রসিং বন্ধ থাকলেও অনেকেই তা না মেনে গাড়ি নিয়ে পার হয়। আবার অনেকেই হেঁটে পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। জনগণ যদি সচেতন হন তাহলে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর হার অনেক কমে আসবে। ট্রেন একেবারে কাছাকাছি চলে আসার পরও অনেকেই রেল লাইন পার হতে যায়। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পর ক্রমশ গতি বাড়তে থাকে। তখন এটি অন্য গাড়ির মতো ব্রেক করা সম্ভব হয় না। কাজেই ট্রেন তার গতিতেই যাবে। মূলত সচেতন হতে হবে মানুষকে। সচেতনতার অভাবেই মানুষ মারা যাচ্ছে।

রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) জিআরপি থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চার বছরে পূর্বাঞ্চলে রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮১৩ জনের। ২০১৭ সালে মারা গেছে ৮১২ জন। ২০১৮ সালে মারা গেছে ৪৩৫ জন।

এদিকে চলতি বছরের গত দুই মাসে পূর্বাঞ্চলে ২৮ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে পুলিশ। যাত্রী কল্যাণ পরিষদের দাবি- প্রতি বছর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে অন্তত ১ হাজার লোক মারা যাচ্ছে রেল দুর্ঘটনায়।

যাত্রী কল্যাণ পরিষদের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, অনেকে টেনশনে পড়ে রেল লাইন দিয়ে হাঁটতে গিয়েও ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায়।

দুর্ঘটনা ঠেকাতে উদ্যোগ : রেলপথ পুলিশ জানায়, পথচারীদের সতর্ক করতে তারা নানা উদ্যোগ নেন। প্রত্যেক বছর বিভিন্ন ষ্টেশনে, যেখানে লোক সমাগম বেশি, সেখানে সভা করে সবাইকে সচেতন করা হয়। বিভিন্ন সময় মাইকিং, লিফলেট বিলি ও রেললাইনের দু’পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যবস্থাও করা হয়।

রেললাইনের নিরাপত্তার দায়িত্ব মূলত পুলিশের হলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে মনোযোগ দেয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা ট্রেনের টিকিটে এ ধরনের প্রচারণা চালাতে পারে, উচ্ছেদ করতে পারে অবৈধ স্থাপনা।

সূত্র : দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!