ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টে

নিউজ ডেক্স : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যগত তথ্যের প্রতিবেদন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে।

বুধবার দুপুরে (২৬ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কি-না, সম্মতি দিলে চিকিৎসা শুরু হয়েছে কি-না এবং শুরু হলে কী অবস্থা— তা জানাতে বিএসএমএমইউ উপাচার্যকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

বুধবারের (২৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে এ প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে পাঠাতে বলা হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য রয়েছে। -জাগো নিউজ

গত রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জামিন আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

শুনানিকালে জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা এ আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলাম। আদালত তা খারিজ করে দেয়ায় আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগও খারিজ করে দেন। তবে মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী অ্যাডভান্স চিকিৎসার নির্দেশনা দেন। কিন্তু দিনদিন তার অবস্থার অবনতি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বেশিকিছু চাওয়ার নেই। আমরা মানবিক কারণে জামিন চাচ্ছি। জামিন পেলে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চান। এ কারণেই আমরা এ মুহূর্তে তার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মেডিকেল রিপোর্ট চাইতে আবেদন করেছি।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আগের আবেদন আর এখনকার আবেদনের বক্তব্য একই। নতুন কিছু নেই। আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার অনুমতি নিয়ে তার বায়োলজিক এজেন্ট নামের থেরাপি দিতে। খালেদা জিয়া অনুমতি না দেয়ায় ওই চিকিৎসা শুরু করা যাচ্ছে না। বোর্ড তার অনুমতির অপেক্ষায় আছে।

তিনি আরও বলেন, তার চিকিৎসার জন্য যে ওষুধের কথা বলা হচ্ছে তা দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। আর কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবনতি হয়েছে তা এখনকার আবেদনে এমন কিছু বলা হয়নি। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এই আবেদন করা হয়েছে শুধুমাত্র আদালতকে বিব্রত করার জন্য।

এরপর জয়নুল আবেদীন বলেন, আগের আবেদন আর এখনকার আবেদন এক নয়। আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছেন ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর। কিন্তু এরপর কী হয়েছে তা জানি না।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন। ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

এরও আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন।

গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। আপিলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়।

২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সেই আবেদন এখনও আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।

দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

ওই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। পরে গত বছরের ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত ও সম্পত্তি জব্দ করার ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করা হয়।

এরপর গত ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে জামিন চান খালেদা জিয়া। এ আবেদনের শুনানির পর ১২ ডিসেম্বর সেটিও খারিজ হয়ে যায়।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!