নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ১৪ অক্টোবর। শেষ মুহূর্তে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা চলছে জমজমাটভাবে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপজেলার গ্রামে গ্রামে চলছে মন ভোলানো নির্বাচনী গান পরিবেশনের মাধ্যমে প্রার্থীদের পক্ষে ভোট প্রার্থনা। চায়ের দোকান, পাড়া-মহল্লা, অফিস-আদালত ও পরিবারের সদস্যদের মাঝে চলছে প্রার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন বিশ্লেষণ। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে উপজেলার প্রতিটি জনপদ। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনের মাত্র কয়েক দিন বাকি থাকায় শেষ মুহূর্তের প্রচারে প্রার্থীরা ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রার্থীরা ঘরে ঘরে গিয়ে নিজের পরিচয়ের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে দোয়া প্রার্থনা ও ভোট ভিক্ষা করছেন। এ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে ছয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দু’জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক, গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা করছেন পুরোদমে। প্রার্থীরা ভোটারদের মন ভোলানোর জন্য এলাকার নানা সমস্যার কথা তুলে ধরছেন এবং নির্বাচিত হলে এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন সাধন ছাড়াও সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন।
চেয়ারম্যান পদে তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগ (নৌকা) ও বিএনপি প্রার্থীর (ধানের শীষ) মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলে ভোটাররা মনে করছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীকেও (মোটরসাইকেল) হিসাবের মধ্যে রাখছেন ভোটাররা।
চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন বিএনপি প্রার্থী আবদুল গফ্ফার চৌধুরী (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ মোতালেব (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোনায়েম মুন্না চৌধুরী (মোটরসাইকেল)। অন্য দিকে ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বশির উদ্দিন আহমদ, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো: শাহজাহান, স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহ উদ্দিন হাসান চৌধুরী, আছিফুর রহমান সিকদার, জসিম উদ্দিন ও মোহাম্মদ ওমর ফারুক। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তারান্নুম আয়েশা ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনজুমান আরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ দিকে এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী তিনজন হলেও বিএনপি প্রার্থী আবদুল গফ্ফার চৌধুরী বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বলে ভোটাররা জানিয়েছেন। কারণ জামায়াতের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ উপজেলায় এবার জামায়াতের কোনো প্রার্থী নেই। তাই ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াত ইসলামীর ভোট ব্যাংক বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভোটাররা জানান, একেবারে সুষ্ঠু ভোট না হলেও বড় ধরনের কোনো কারচুপি না হলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর বিজয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বনফুলের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এম এ মোতালেব শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন। তার পক্ষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোটাররা নৌকার প্রার্থী এম এ মোতালেবকে মোটামুটি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করছেন। মূলত চেয়ারম্যান পদে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন। সেই সাথে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোনায়েম মুন্না চৌধুরীকেও হিসেবে রাখছেন ভোটাররা।
অন্য দিকে ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বশির উদ্দিন আহমদ, মোহাম্মদ শাহজাহান ও সালাহ উদ্দিন হাসান চৌধুরীর মাঝে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তারান্নুম আয়েশা ও আনজুমান আরার মধ্যে।
সাতকানিয়া উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা হচ্ছে দুই লাখ ৮৩ হাজার ৩৮০ জন। পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫০ হাজার ২৮৬ জন ও মহিলা ভোটার এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৪ জন। উপজেলার এসব ভোটার ১২৫টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে এই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন।
সূত্র : দৈনিক নয়াদিগন্ত