Home | লোহাগাড়ার সংবাদ | লোহাগাড়ার হাটবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার দূর্ভোগ : প্রতিকার দাবী

লোহাগাড়ার হাটবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার দূর্ভোগ : প্রতিকার দাবী

331

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ার বিভিন্ন হাটবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতারা অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহানোর অভিযোগ উঠেছে। ভূক্তভোগীরা অনতিবিলম্বে প্রতিকার দাবী করছেন। তারা জানান, বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম, গ্রোথ সেন্টার দখল, রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতায় এককভাবে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকা, ফুটপাত দখল, পানীয় জলের অভাব, যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ, ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার না করা সহ বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন দূর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। যারা খবরদারী-নজরদারী করবেন তাদের নীরব ভূমিকাও রহস্যজনক। বাজারে প্রতিদিন একটি মহল জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এ ব্যাপারে দিন দিন বাজারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। লোহাগাড়া বটতলী মোটর ষ্টেশনের কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে সকালবেলা প্রান্তিক মৎস্য চাষীরা মাছ নিয়ে আসেন। তারা এসব মাছ মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্মে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারেন না। দর-দাম না করেই মধ্যস্বত্বভোগীরা জোরপূর্বক মাছগুলি নিয়ে নেয়। তারাই বিক্রেতা সেজে বাজারের নির্দিষ্টস্থানে বিক্রি করে এবং একটি অংশ কেটে নিয়ে প্রান্তিক চাষীদের হাতে মূল্য পরিশোধ করে। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম কমলে ক্রেতারা অন্তত প্রতি কেজি মাছ ক্ষেত্রভেদে ৫০-১০০ টাকা কম দামে কিনতে পারবেন। কাঁচা বাজার নিয়ন্ত্রণ করে এক ব্যক্তি। তার উপরে কথা বলার কেউ নেই। যে দামে তিনি ইচ্ছে করেন খুচরা বিক্রেতার কাছে তা বিক্রি করেন। তার অন্তত ১০টি খুচরা বিক্রির দোকান রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থা দীর্ঘদিনের। তার সাথে আলাপ করলে তিনি উল্টো অভিযোগ করেছেন মাল কিনেন ক্রেতারা। এতে সাংবাদিকদের নাক গলানোর প্রয়োজন কি। তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

লোহাগাড়া বটতলী শহর উন্নয়ন কমিটি নামে আছে। কিন্তু কাজির গরু কিতাবে থাকলেও গোয়ালে না থাকার মতো অবস্থা। যথাসময়ে ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার না করার কারণে দূর্ঘন্ধে বাজারে প্রবেশ করা যায় না। লোহাগাড়া বটতলী মোটর ষ্টেশনের কাঁচা বাজারে প্রবেশমুখে অসংখ্য ভাসমান দোকান বিদ্যমান। মুরগির দোকানের সামনে ফুটপাতে ড্রেসিং করা হয়। ড্রেসিং মেশিন হতে নির্গত বর্জ্য ও মুরগির নাড়িভূড়ি রক্তে এলাকায় অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ধাক্কা-ধাক্কি করে ক্রেতাদের চলাফেরা করতে হয়। মুরগি ড্রেসিং’র সময় নির্গত রক্তে অনেক সময় ক্রেতাদের জামা-কাপড় নষ্ট হয়। হচ্ছে। পদুয়া তেওয়ারীহাট একটি ঐতিহাসিক বাজার। এখানে গ্রোথ সেন্টারের শেড দখল করে প্রভাবশালীরা মশারীর ভিতর মশারী টাঙ্গানোর মতো অবস্থা সৃষ্টি করেছেন। ইজারাদারের সাথে তারাও শেডের মালিক হয়ে গেছেন। বিধান রয়েছে হাটবাজারে প্রান্তিক চাষীরা এসব শেডে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করবেন। ক্রেতারা ন্যায্য মূল্যে মাল কিনতে পারবেন। হাটের উত্তর পার্শ্বে চলাচলের রাস্তাও দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদাররা দখল করে রয়েছেন। তারা জোর পূর্বক প্রান্তিক চাষীদের কাছ থেকে মাল কিনে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বাজারের প্রবেশমুখে অবৈধ যানবাহনের স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এখান থেকে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পেশীশক্তিশালীরা চাঁদা আদায় করেন। পদুয়া বাজারে হকার সমিতি নামে একটি সমিতি রয়েছে। তারাই মূলত এ বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। এতে এ সমিতির কোন নিবন্ধন নেই বলে লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন।

332
লোহাগাড়ার আধুনগর বাজার, দরবেশহাট, বড়হাতিয়ার সেনেরহাট, মনুফকির হাট, মগদিঘীর বাজার, চরম্বা নয়াবাজার, আমিরাবাদ মাষ্টারহাট, পুটিবিলার এম.চর.হাট, নয়াবাজারসহ বিভিন্ন হাটবাজারের সিংহভাগ সরকারী জায়গা প্রভাশীদের দখলে রয়েছে। এসব খাস জায়গায় প্রভাবশালীরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দালানকোট নির্মাণ করে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। নিকট অতীতেও এলাকার কৃষক ও প্রান্তিক চাষীরা হাটবাজারে তাদের পণ্যসামগ্রী কেনাবেচা করতেন। বর্তমানে দিন দিন তা কমে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছেন, ভূমি হারাচ্ছেন আর ক্রেতাদের দুর্বিসহ অবস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সূত্র : সাংবাদিক মোঃ জামাল উদ্দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!