Home | অন্যান্য সংবাদ | বাসায় পুলিশ এলে কি করবেন?

বাসায় পুলিশ এলে কি করবেন?

Bangladesh-police

নিউজ ডেক্স : তথ্য অনুসন্ধানে বা অপরাধী খুঁজতে পুলিশ বাড়ি যেতে পারে। এ সময় যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না হয়, সেজন্য রয়েছে আইনের সুনির্দিষ্ট কিছু বিধান। বিভিন্ন কারণে বাসায় পুলিশ আসতে পারে। যেমন, যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়, তখন আসামি গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে পুলিশ যেতে পারে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যদি জানা যায় কোনো বাড়িতে বা সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র বা বিষ্ফোরক পদার্থ মজুদ আছে তখন পুলিশ তল্লাশির জন্য সেই জায়গায় যেতে পারে। এছাড়া কোনো মামলার পলাতক আসামিকে খুঁজে বের করার জন্য ওই বাড়িতে ‍পুলিশ তল্লাশি করতে পারে।

বাসাবাড়িতে পুলিশ এলে ভয় না পেয়ে সহযোগিতা করার বিধান আইনে রয়েছে। এ সময় তল্লাশির নামে যাতে হয়রানি করা না হয় সেজন্য আইনের সুস্পষ্ট বিধান আছে।

বাসাবাড়িতে পুলিশ এলে যদি সন্দেহ হয়, তবে কাছের থানায় ফোন করে নিশ্চিত হতে পারেন। এজন্য যুক্তিসঙ্গত সময় তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলা যেতে পারে। চাইলে স্থানীয় থানায় ফোন করে নিশ্চিত হতে পারেন, আসলেই বাসায় থানা থেকে কোনো পুলিশ পাঠানো হয়েছে কি-না।

যেখানেই থাকুন না কেনো, স্থানীয় পুলিশের নম্বরটি আপনার কাছে থাকা জরুরি। সন্দেহজনকভাবে কেউ নিজেকে পুলিশের পরিচয় দিলে তখন তার পরিচয় সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন। পুলিশ, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চাইলে তল্লাশি করতে পারে।

কোর্ট থেকে ম্যাজিস্ট্রেট যদি কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে, তবে পুলিশ উক্ত ব্যক্তি বা বিষয়বস্তুর সন্ধানে তল্লাশি চালাতে পারে। ওয়ারেন্ট হলে তা লিখিত ও ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে।

আইন অনুযায়ী অপরিচিত কেউ হুট করে আরেকজনের শয়নকক্ষে ঢুকতে পারবে না। এজন্য অবশ্যই আগে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া পুলিশ যদি উক্ত কক্ষে তল্লাশি চালাতে চায় তখন ঘরের মালিক সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবেন।

ফৌজদারি কার্যবিধি ১০২ ধারা অনুযায়ী, কোনো ঘর বা বাড়ির মালিক পুলিশকে সার্চ করার অনুমতি দিতে বাধ্য, এ সময় তিনি পুলিশকে সকল প্রকার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ সুবিধা দেবেন।

তল্লাশি বা অনুসন্ধানের সময় দুজন প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষীর উপস্থিতিতে পুলিশ বাসাবাড়ি সার্চ করবেন। এছাড়া ১০৩ ধারা অনুযায়ী কোনো আবদ্ধ জায়গায় কিছু পাওয়া গেলে, পুলিশ তা নির্ধারিত ফর্দে তালিকা করে নেবে। তালিকার অতিরিক্ত কিছু নিতে পারবে না। এ সময় উক্ত স্থানের মালিক বা ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি, স্বাক্ষী উক্ত তালিকায় নিজ নিজ স্বাক্ষর করবেন ও একটি কপি পাবেন।

যে বস্তুর খোঁজে পুলিশ তল্লাশি করবেন উক্ত স্থানে বা আশপাশে তল্লাশি করতে পারবেন। কোনো ব্যক্তির দেহে লুকিয়ে আছে বলে সন্দেহ হলে পুলিশ তার দেহও তল্লাশি করতে পারবে। এইরূপ ব্যক্তি স্ত্রীলোক হলে ৫২ ধারার নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে হবে।

৫২ ধারা অনুযায়ী স্ত্রী লোককে অবশ্যই মহিলা পুলিশ দিয়ে তার দেহ তল্লাশি করতে হবে। সেখানে মহিলা পুলিশ না থাকলে স্থানীয় কোন মহিলা দিয়ে পূর্ণ শালীনতার সঙ্গে তার দেহ তল্লাশি করা যাবে।

সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালাতে হবে: ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৩ ধারা (১) অনুযায়ী তল্লাশি চালানোর আগে, প্রস্তুত অফিসার বা অন্য কোনো ব্যক্তি যে স্থানে তল্লাশি চালানো হবে সেই এলাকার দুই বা ততোধিক সম্মানিত অধিবাসীকে তল্লাশিতে হাজির থাকা ও সাক্ষী হিসেবে আহ্বান জানাতে হবে।

১০৩ এর ধারা (২) অনুযায়ী সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালাতে হবে। এ সময় উক্ত অফিসার বা অন্য কোনো ব্যক্তি তল্লাশির সময় জব্দকৃত সমস্ত জিনিস এবং যে জায়গায় ওই জিনিসগুলো পাওয়া গেছে, তার একটি তালিকা প্রস্তুত করবেন। সে তালিকায় উক্ত সাক্ষীরা স্বাক্ষর করবেন। বিশেষভাবে সমন জারি করা না হলে, উক্ত স্বাক্ষীদের আদালতে স্বাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না।

তল্লাশিস্থানের দখলদার উপস্থিত থাকতে পারবেন: ১০৩ এর ধারা ৩ অনুযায়ী তল্লাশির সময় তল্লাশিস্থানের দখলদার বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তল্লাশির সময় হাজির থাকার অনুমতি দিতে হবে।

১০৩ এর উপধারা ৩ অনুযায়ী তল্লাশি করা কোনো জিনিস আটক গ্রহণ করা হলে আটককৃত বস্তুর তালিকার একটি অনুলিপি সেই স্থানের মালিক বা দখলদার পাওয়ার অধিকার রাখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!