নিউজ ডেক্স : চাঁদা ‘না দেওয়ার’ কারণেই কক্সবাজারে স্বামী সন্তানকে জিম্মি করে নারী পর্যটককে ধর্ষণ করার কথা আশিকুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব। পর্যটকদের ফাঁদে ফেলে ‘মুক্তিপণ আদায়’ এবং ধর্ষণসহ ১২ মামলার আসামি আশিক গ্রেপ্তার এড়াতে দাড়ি-গোঁফ কামিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। গত রোববার পটুয়াখালী যাওয়ার পথে মাদারীপুরে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ মামলায় এ পর্যন্ত মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, আশিক ধর্ষণের ঘটনার পর ব্যাপক আলোচিত হলে দাঁড়ি গোঁফ কেটে দুইদিন পর একটি এসি বাসে ঢাকায় আসে। পরে আত্মগোপনের জন্য পটুয়াখালী যাওয়ার পথে মাদারীপুর মোস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আশিক কক্সবাজারে প্রায় ৩০ জনের একটি অপরাধীচক্রের নেতৃত্ব দেয়। এই চক্রটি নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, পর্যটক মূলত তাদের টার্গেট। তারা ওই নারী এবং তার স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। আশিকের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় ঘটনার দুইদিন আগে হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আশিক জানিয়েছে চাঁদা দিতে অস্বীকার করার পরই হোটেলে নিয়ে ওই নারীকে একাই ধর্ষণ করে। তবে ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনার ব্যাপারে আশিক ‘অবগত নন’ জানিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, এ সময় ওই নারীকে তার সহযোগীদের কাছে রেখে আশিক মটর সাইকেল আনতে গিয়েছিল।
২৫ বছর বয়সী ওই নারীর অভিযোগ, সংঘবদ্ধ একটি চক্র কঙবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে তাকে তুলে নেয়। তার স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে এবং হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে ‘কয়েক দফা ধর্ষণ করে’ তিনজন।
পরে খবর পেয়ে জিয়া গেস্ট ইন নামের এক হোটেল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে র্যাব। পরদিন ওই নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে কঙবাজার সদর থানায় মামলা করেন।
খন্দকার মঈন বলেন, আশিকের নেতৃত্বে অপরাধীচক্রটি পর্যটকদের বিভিন্ন প্রকার ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও তার ফাঁদে পা দিয়ে টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।
২০১২ সাল থেকে আশিকের বিরুদ্ধে এপর্যন্ত ১২টি মামলার ‘সন্ধান মিলেছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, জবরদখল, ডাকাতি, ছিনতাই এবং ধর্ষণের একাধিক মামলা রয়েছে। সর্বশেষ একটি মামলায় আশিক আড়াই বছর জেল খেটেছে। আশিক তার চক্রকে নিয়ে কঙবাজারের সুগন্ধা এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে পর্যটকদের কাছে ভাড়া দিত এবং তাদের ‘সুযোগ বুঝে ফাঁদে ফেলত’ বলে র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।