
এলনিউজ২৪ডটকম: লোহাগাড়ায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জালিয়তি চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ১ নাম্বার ওয়ার্ডের আমিরাবাদ মাস্টার পাড়ার আব্দুর রশিদের পুত্র মো. আলমগীর (২৬), বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের আব্দুল আলী সিকদার পাড়ার মৃত হাফেজ আব্দুছ সালামের পুত্র মো. শাহ আলম (৫০) ও লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের বিল্লা পাড়ার মৃত আকতার মিয়ার পুত্র মো. নাজাত (২৩)।

ঘটনার সাথে জড়িত অন্য আসামিরা হলেন ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক লোহাগাড়া শাখায় কর্মরত মো. বেলাল (৩৫), উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ডের রশিদারঘোনা আদর্শ পাড়ার মাহাবুবুর রহমানের পুত্র মো. জাহেদ (২৭), আমিরাবাদ ইউনিয়নের ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের সুখছড়ি সুন্নিয়া পাড়ার মৃত রশিদ আহমদের পুত্র মো. রিদুয়ান (৩০), কলাউজান ইউনিয়নের ৭ নাম্বার ওয়ার্ডের পূর্ব কলাউজান জয়নগর এলাকার আব্দুল করিমের পুত্র মো. রাজা মিয়া (৩৫)।
পুলিশ জানায়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন উপজেলা সদরের কাজিরপুকুর পাড় এলাকায় দোহা বিল্ডিংয়ে আলমগীর নামে এক ব্যক্তি ভিসা প্রসেসিং করার জন্য নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট বানিয়ে নিজ হেফাজতে রেখেছেন। ঘটনার সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযান পরিচালনা করে তার কাছ থেকে নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। আটক আলমগীর জিজ্ঞাসাবাদ জানায় সে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটি আল আকছা ট্রাভেলসের মালিক শাহ আলমের কাছ থেকে ২৮ হাজার টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করেছেন। তার নামে মামলা থাকায় সে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটি নেওয়ার চুক্তি করেন। পরে আলমগীরের তথ্যের ভিত্তিতে আল আকসা ট্রাভেলসে তল্লাশি করে শাহ আলমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া যায়। জব্দ করা হয় তার মোবাইল ফোন। আটক শাহ আলম জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটি মো. বেলালের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছেন।
অপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন লোহাগাড়া থানার সামনে কম্পিউটারের দোকানে মো. নাজাত নামে এক ব্যক্তি নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট বানিয়ে দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। একইদিন রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে নাজাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নাজাত স্বীকার করে যে, সে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট বানিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। পরে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন চেক করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। জব্দ করা হয় তার মোবাইল ফোন ও ২টি সীল। জিজ্ঞাসাবাদে নাজাত আরো জানায়, জাহেদ, রিদুয়ান ও রাজা মিয়াকেও অর্থের বিনিময়ে নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট বানিয়ে দিয়েছেন। তার মোবাইল ফোনে রক্ষিত ছবিতে উক্ত বিষয়ের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তাদের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তারা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
থানার ক্লিনিক্যাল ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) যাচাই করে দেখা যায়, মাদক, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধে লোহাগাড়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় আসামি আলমগীরের বিরুদ্ধে ১টি, জাহেদের বিরুদ্ধে ২টি, রাজা মিয়ার বিরুদ্ধে ৪টি ও রিদুয়ানের বিরুদ্ধে ১টি মামলা রয়েছে।
লোহাগাড়া থানার এসআই জাহেদ হোসেন জানান, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট জালিয়তির ঘটনায় জড়িতের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ ব্যাপারে আরো ব্যাপক তদন্ত চলছে।
Lohagaranews24 Your Trusted News Partner